নাসার উপগ্রহের তোলা সেই পর্বতমালা। ছবি- নাসার সৌজন্যে।
পৃথিবীর মানচিত্রে তন্নতন্ন করে খুঁজলেও তার হদিশ মিলবে না। তাকেই দেখতে পেল নাসার মহাকাশযান ভূপৃষ্ঠের ৪৪০ মাইল উপর থেকে। এই প্রথম। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে সমাজমাধ্যমে।
সুবিশাল একটি পর্বতমালা। উত্তর-পশ্চিম মরক্কোয়। নাসার ইনস্টাগ্রাম পোস্টে জানানো হয়েছে, এই সুবিশাল পর্বতমালার জন্ম হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৮ কোটি বছর আগে। তখন আধুনিক পৃথিবীই ছিল না। দেশটেশ তো বহু দূরের কথা। এখনকার চেনা, জানা মহাদেশগুলিও ছিল না।
কী ভাবে জন্ম হয়েছিল সেই পর্বতমালার? নাসা জানিয়েছে, ভূগর্ভে আফ্রিকান ও ইউরেশিয়ান, এই দু’টি দৈত্যাকার টেকটোনিক প্লেটের মধ্যে তুমুল ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল প্রায় ৮ কোটি বছর আগে। সেটা ছিল দু’টি টেকটোনিক প্লেটের মধ্যে ভয়ঙ্কর ধাক্কাধাক্কির ঘটনা। ওই ধাক্কাধাক্কিতেই টেথিস মহাসাগর মন্থন করে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিল ওই সুবিশাল পর্বতমালা। ঘটনাচক্রে, হিমালয়েরও উৎপত্তিও এই টেথিস মহাসাগর মন্থন করেই। হিমালয়ের জন্ম আনুমানিক ৪ কোটি বছর আগে। আর এই পর্বতমালা তৈরি হয়েছে আনুমানিক ৮ কোটি বছর আগে। যার অর্থ, হিমালয়েরও দ্বিগুণ বয়স এই পর্বতমালার।
কী দিয়ে গড়া ছিল সেই পর্বতমালা? নাসার ইনস্টাগ্রাম পোস্ট জানাচ্ছে, চুনাপাথর, বেলেপাথর, জিপসাম আর মাটি থেকে তৈরি হওয়া পাথরই গড়ে তুলেছিল সেই সুবিশাল পর্বতমালার শরীর।
নাসার ‘টেরা’ উপগ্রহ পৃথিবীর কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করতে করতে ৪৪০ মাইল উপর থেকে সেই পর্বতমালার ছবি তুলেছিল ২০০৭ সালের ৫ নভেম্বর। পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে ভূ-পর্যবেক্ষণের জন্য প্রথম যে উপগ্রহটিকে পাঠানো হয়েছিল, সেটা- টেরা। উৎক্ষেপণ হয়েছিল ১৯৯৯ সালে।
আলোর বর্ণালীর যে অংশটি আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না, সেই ইনফ্রারেড লাইট বা অবলোহিত আলোকরশ্মিতে পর্বতমালাটির ছবি তুলেছিল নাসার উপগ্রহ। যাতে পর্বতমালার পাথরের বিভিন্ন স্তর খুব ভাল ভাবে বোঝা যায়। টেরা উপগ্রহে থাকা ‘অ্যাস্টার’ যন্ত্রে মাধ্যমে তোলা হয়েছিল সেই ছবি।