২০১৪ সালে প্রথম এর হদিশ পান মহাকাশবিজ্ঞানী গ্যারি বার্নস্টিন ও গবেষক পেড্রো বার্নাডিনেল্লি। -ফাইল ছবি।
সৌরমণ্ডলে ঢুকে পড়তে চলেছে এক ‘মহাদৈত্য’। যার দেহের একটি প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের দূরত্ব ৮৫ মাইল। বা, ১৩৭ কিলোমিটার। এর আগে এত বড় চেহারার ‘দৈত্য’ আর ঢোকেনি সৌরমণ্ডলে।
সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই খবর দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হতে চলেছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স লেটার্স’-এ।
এই মহাদৈত্যটি আপাদমস্তক মোড়া পুরু বরফে। তার লেজ গজায়নি এখনও। সৌরমণ্ডলে ঢোকার পর যতই সে সূর্যের দিকে এগোতে থাকবে ততই সূর্যের অভিকর্ষ বলের টান আর সৌরবিকিরণে তার পুরু বরফে মোড়া দেহ গলতে শুরু করবে। তৈরি হবে লেজ। সেই লেজ গোটা সৌরমণ্ডলে ছড়িয়ে দেবে রাশি রাশি বরফের কণা। সূর্যের সঙ্গে তার দূরত্ব যত কমবে ততই বাড়বে তার লেজের দৈর্ঘ্য।
২০১৪ সালে প্রথম এই মহাদৈত্যের হদিশ পেয়েছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। আট বছর পর সৌরমণ্ডলের একেবারে শেষ প্রান্তে থাকা তার মুলুক বরফের মহাসাম্রাজ্য ওরট্ ক্লাউড থেকে বেরিয়ে সেই মহাদৈত্য এ বার ঢুকে পড়তে চলেছে সৌরমণ্ডলে। হতে চলেছে সূর্য-মুখী।
এই মহাদৈত্যটি আদতে সুবিশাল একটি ধূমকেতু। এখনও যা রয়েছে বরফের প্রকাণ্ড একটি পিণ্ড হয়ে। ২০১৪ সালে প্রথম এর হদিশ পান আমেরিকার পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশবিজ্ঞানী গ্যারি বার্নস্টিন ও ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক পেড্রো বার্নাডিনেল্লি। তাঁদের নামেই পরে এর নামকরণ করা হয়। ‘বার্নাডিনেল্লি- বার্নস্টিন ধূমকেতু’। জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরিভাষায় এর নাম— ‘২০১৪-ইউএন-২৭১’।
এর আগে সৌরমণ্ডলের একেবারে শেষ প্রান্তে থাকা বরফের মহাসাম্রাজ্য ওরট্ ক্লাউড থেকে দৈত্যাকার যে ধূমকেতুটি বেরিয়ে এসে ঢুকে পড়েছিল সৌরমণ্ডলে, তার নাম ছিল হেল-বপ ধূমকেতু। সেটির এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের দূরত্ব ছিল ৪৬ মাইল বা ৭৪ কিলোমিটার। ১৯৯৫ সালে আবিষ্কৃত এই ধূমকেতুটিকে পৃথিবী থেকে খালি চোখেই দেখা গিয়েছিল ১৯৯৬-তে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এ বারের আগন্তুক বার্নাডিনেল্লি-বার্নস্টিন ধূমকেতুটি আকারে তার প্রায় দ্বিগুণ। এই ধূমকেতুটি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে আসতে চলেছে নয় বছর পর। ২০৩১ সালে। সে সময় শনির কক্ষপথের খুব কাছাকাছি চলে আসবে সৌরমণ্ডলের বাইরে থেকে আসা এই মহাদৈত্য।