ISRO Space Station

মহাকাশে স্পেস স্টেশন তৈরি করবে ইসরো, চতুর্থ দেশ হিসাবে নজির কয়েক বছরের মধ্যেই

২০৩৫ সালের মধ্যে স্পেস স্টেশন কার্যকর হতে পারে বলে আশ্বাসও দিয়েছেন ইসরোর প্রধান। এই স্পেস স্টেশনটিকে নিম্ন কক্ষপথে অবস্থান করানো হবে। নাম রাখা হবে ‘ভারতীয় অন্তরীক্ষ স্টেশন’।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৪ ১৪:৪০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

রাশিয়া, আমেরিকা এবং চিনের পর নজির গড়তে চলেছে ভারত। মহাকাশে নিজেদের স্পেস স্টেশন তৈরি করে সারা বিশ্বে চতুর্থ স্থানের অধিকারী হতে চলেছে ভারত। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর প্রধান এস সোমনাথ জানিয়েছেন, ২০৩৫ সালের মধ্যেই স্পেস স্টেশনটিকে মহাকাশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। প্রস্তুতি পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে এখন থেকেই।

Advertisement

ভারতের নিজস্ব স্পেস স্টেশনে কী ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে তা নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। ২০৩৫ সালের মধ্যে স্পেস স্টেশন কার্যকর হতে পারে বলে আশ্বাসও দিয়েছেন ইসরোর প্রধান। এই স্পেস স্টেশনটিকে নিম্ন কক্ষপথে অবস্থান করানো হবে। নাম রাখা হবে ‘ভারতীয় অন্তরীক্ষ স্টেশন’। স্পেস স্টেশনের ভিতরে দুই থেকে চার জন নভশ্চরের থাকার ব্যবস্থা করা হবে। এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিরুঅনন্তপুরমের বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টারের ডিরেক্টর উন্নিকৃষ্ণণ নায়ার জানান, ভারতের অন্যতম ভারী রকেট ‘বাহুবলী’ এবং লঞ্চ ভেহিকল মার্ক ৩ (এলভিএম ৩)-এর মাধ্যমে স্পেস স্টেশনের অংশগুলি মহাকাশে পাঠানো হবে। পৃথিবী থেকে ৪০০ কিলোমিটার উচ্চতায় যে কক্ষপথ রয়েছে সেখানে স্থান পাবে ভারতের স্পেস স্টেশন। মহাকাশে ‘অ্যাস্ট্রোবায়োলজি’ এবং ‘মাইক্রোগ্র্যাভিটি’ সংক্রান্ত নানা রকম গবেষণা করা হবে এই স্পেস স্টেশনে। পৃথিবীর মতোই তার উপগ্রহ চাঁদ বসবাসযোগ্য কি না, তা নিয়েও গবেষণা চলবে স্পেস স্টেশনে।

এই স্পেস স্টেশনের ওজন ২০ হাজার কিলোগ্রাম থেকে চার লক্ষ কিলোগ্রাম পর্যন্ত হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হয়েছে। স্পেস স্টেশনের জন্য উন্নত মানের ডকিং পোর্টও নির্মাণ করবে ইসরো। আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য একটি বিশেষ ডকিং পোর্টও তৈরি করা হবে। চারটি মডিউল এবং অন্তত চার জোড়া সোলার প্যানেল থাকতে পারে স্পেস স্টেশনে।

Advertisement

স্পেস স্টেশনের মূল মডিউলে এমন প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে যা অক্সিজেন প্রস্তুতির পাশাপাশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমনের জন্যও সক্ষম হবে। এমনকি এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ন্যূনতম আপেক্ষিক আর্দ্রতা বজায় রাখাও সম্ভব হবে।

ভারতীয় মহাকাশচারীদের পৃথিবীর সীমানার বাইরে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করেছে ইসরো। সেই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘গগনযান’। চলতি বছরেই ‘গগনযান’ মহাকাশচারীদের নিয়ে মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দিতে পারে। সেই অভিযানের গুরুত্বপূর্ণ ইঞ্জিন পরীক্ষা করে দেখেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টার থেকে চার জন নভশ্চরের নাম ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। চার জনই ভারতীয় বায়ুসেনার (আইএএফ) আধিকারিক। তাঁরা হলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন বালাকৃষ্ণণ নায়ার, গ্রুপ ক্যাপ্টেন অঙ্গদ প্রতাপ, গ্রুপ ক্যাপ্টেন অজিত কৃষ্ণণ এবং গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্ল। উইং কমান্ডার কিংবা গ্রুপ ক্যাপ্টেন হিসাবে যে কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলায় দক্ষ এই চার জন। বেঙ্গালুরুতে বায়ুসেনার নভশ্চর কেন্দ্রে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে তাঁদের।

মহাকাশের ৪০০ কিলোমিটার কক্ষপথে মানুষকে পাঠানোর যে পরিকল্পনা, তার অঙ্গ হিসাবে গত অক্টোবর মাসেই পরীক্ষামূলক ভাবে মহাকাশে মানববিহীন গগনযান পাঠায় ইসরো। গগনযানের উৎক্ষেপণ সফল হলে দ্বিতীয় ধাপে ‘ব্যোমমিত্রা’ বলে একটি রোবটকে মহাকাশে পাঠাবে ইসরো। সেই অভিযান সফল হলে ২০২৪-’২৫ সালে মহাকাশে মানুষ পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু করবে ইসরো।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement