—ফাইল চিত্র।
গত চার মাস ধরে এই দিনটির জন্যেই অপেক্ষা করেছিল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। বিজ্ঞানীরা দিন গুনছিলেন। অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ হাজির। শনিবার বিকেলেই ভারতের প্রথম সৌরযান আদিত্য-এল১ তার কাঙ্ক্ষিত কক্ষপথে পৌঁছে যাবে। তার চার মাসের দীর্ঘ যাত্রা শেষ হয়েছে। এ বার তাকে পাঁচ বছরের স্থায়ী ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়ার পালা।
বিকেলে আদিত্য-এল১-এর চূড়ান্ত পর্যায়ের কক্ষপথ পরিবর্তন করানো হবে। ঠিক বিকেল ৪টে নাগাদ ইসরোর বিজ্ঞানীরা ধাক্কা দিয়ে সৌরযানটিকে পৌঁছে দেবেন ল্যাগারেঞ্জ পয়েন্ট বা এল১ পয়েন্টের নির্দিষ্ট কক্ষপথে। সেখান থেকে সূর্য আরও কয়েক কোটি কিলোমিটার দূরে। সূর্য এবং পৃথিবীর দূরত্ব ১৫ কোটি কিলোমিটার। তার মাত্র এক শতাংশ পেরিয়েছে আদিত্য-এল১। পৃথিবী থেকে তার দূরত্ব ১৫ লক্ষ কিলোমিটার। এর আগে ভারতের কোনও মহাকাশযান সূর্যের এত কাছে যায়নি। সূর্য সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য এর ফলে জানা যাবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা।
আদিত্য-এল১-কে ধাক্কা দিয়ে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে দেওয়াই এখন ইসরোর সামনে চ্যালেঞ্জ। কারণ অত্যন্ত সাবধানে ওই কাজ করতে হবে। গোটা প্রক্রিয়ায় সামান্য ভুল হলেই এত দিনের পরিশ্রম বৃথা হয়ে যাবে মুহূর্তেই। যে চাপ দিয়ে সৌরযানটিকে এল১ পয়েন্টে পাঠানো হবে, তা কমবেশি হলে বিপদ ঘটতে পারে। অধীর আগ্রহ আর উৎকণ্ঠায় তাই বিকেল ৪টে বাজার অপেক্ষায় রয়েছেন ইসরোর আধিকারিকেরা।
সৌরযানকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে দেওয়ার কাজ সফল হলে বছরের শুরুতে আরও এক সাফল্যের পালক জুড়বে ইসরোর মুকুটে। এল১ পয়েন্টে সূর্য এবং পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে ঘুরতে থাকবে সৌরযান। তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে তখন আর খুব বেশি শক্তি খরচের প্রয়োজন হবে না। সূর্যকে ওই এলাকা থেকে বিনা বাধায় স্পষ্ট দেখতে পাবে আদিত্য-এল১। কয়েক সপ্তাহ অন্তর অন্তর সামনে কোনও পাথর বা বাধা এলে ইসরোর বিজ্ঞানীরা কেবল তার মোড় ঘুরিয়ে দেবেন। ওই এলাকায় নাসার পাঠানো আরও চারটি মহাকাশযান রয়েছে এই মুহূর্তে। তাদের সঙ্গেও যাতে সংঘর্ষ না হয়, তা নিশ্চিত করবেন বিজ্ঞানীরা।