মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির মাঝখানে থাকা কৃষ্ণগহ্বর এবং তাকে ঘিরে থাকা আলোর বলয়ের সেই ছবি। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
মহাকাশের আকাশগঙ্গা ছায়াপথের (মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সি) ঠিক মাঝখানে থাকা সেই ‘দানবাকৃতি রাক্ষসের’ সন্ধান মিলেছিল বেশ কয়েক বছর আগেই। প্রথম বার সেই ‘স্যাজিটেরিয়াস এ’-র ছবি তুলতে সক্ষম হলেন ইন্টারন্যাশনাল কনসর্টিয়ামের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। আমেরিকায় মহাকাশ গবেষণা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান ‘এজেন্সি ন্যাশানাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন’ (এনএসএফ)-এর সহায়তায় আটটি রেডিয়ো টেলিস্কোপের সম্মিলিত ছবিকে একত্র করে বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়েছে।
‘স্যাজিটেরিয়াস এ’ আদতে একটি দানবাকৃতি ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর। ২০১৯ সালের মে মাসে কয়েক দিন ধরে অদ্ভুত একটা আলোর ঝলসানি দেখে তার সক্রিয়তাকে চিহ্নিত করেছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। যা দেখে মনে করা হয়েছিল, পৃথিবী থেকে ২৭ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত, সূর্যের চেয়ে ৪০ লক্ষ গুণ বেশি ভরের ওই ব্ল্যাক হোলটি আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গিলতে শুরু করেছে আশপাশের মহাজাগতিক বস্তুগুলিকে। প্রসঙ্গত, পৃথিবী-সহ সমগ্র সৌরমণ্ডল আদতে মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সি বা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের অংশ।
সক্রিয় ব্ল্যাক হোলগুলি তাদের জোরালো অভিকর্ষ বলের টানে ছোট মহাজাগতিক কণা থেকে শুরু করে গ্রহ, উপগ্রহ ঘন জমাট বাঁধা গ্যাস এমনকি, আলোর রশ্মিকেও ‘গিলে’ নিতে পারে। কিন্তু আমাদের মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সির মাঝখানে থাকা ‘স্যাজিটেরিয়াস এ’-কে এত দিন ‘উপোসী’ থাকতেই দেখা গিয়েছিল। ২০১৯-এ সক্রিয় হওয়ার পরে তার ছবি তোলার চেষ্টা শুরু হয়েছিল। কিন্তু ব্ল্যাক হোলের ‘আলো শুষে নেওয়ার প্রবল ক্ষমতার জন্য অসুবিধায় পড়েছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
বস্তুত, কৃষ্ণগহ্বর এবং তাকে ঘিরে থাকা জ্বলন্ত গ্যাসের ছবিই তুলতে সক্ষম হয়েছে ‘ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ কোলাবরেশন’। অতি উত্তপ্ত সেই গ্যাসের বলয়টি দৈর্ঘ প্রায় ৬ কোটি কিলোমিটার। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে প্রথম বার অন্য একটি ব্ল্যাক হোলের ছবি তোলা হয়েছিল।