প্রতীকী ছবি।
ত্বক খুব খসখসে হলে বা চুলকানিতে ভুগলে চিকিৎসকরা যে ব্যাকটেরিয়া-রোধী সাবান ব্যবহার করতে বলেন, শরীরের বাইরে করোনাভাইরাস মারতে সেই সাবানও অ্যালকোহল যুক্ত স্যানিটাইজারের মতোই কার্যকরী হতে পারে। এমনকি, স্যানিটাইজারের বিকল্পও হয়ে উঠতে পারে। সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই খবর দিয়েছে।
গবেষকরা দেখেছেন ব্যাকটেরিয়া-রোধী সাবানগুলির মধ্যে বহুল ব্যবহৃত ‘ডার্মল ৫০০’-র কার্যকারিতা সবচেয়ে বেশি। যাঁদের ত্বক খুব খসখসে, শুকনো, যাঁদের চুলকানির সমস্যায় ভুগতে হয় সব সময় তাঁরাই এই সাবান সাধারণত ব্যবহার করেন।
গবেষকরা এ-ও দেখেছেন, অতিমারি শুরু হওয়ার পরেই সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে মানুষ এত বেশি বার করে আর পাঁচটা সাধারণ সাবান ও স্যানিটাইজার দিয়ে গা, হাত-পা ধুতে শুরু করেছেন, যে যার ফলে এগজিমা বা ডার্মাটাইটিস (চর্মরোগ)-এর ইতিহাস না থাকলেও তাঁদের ত্বক ফেটে যাচ্ছে, শুকনো খসখসে হয়ে যাচ্ছে। নানা ধরনের প্রদাহের শিকার হচ্ছেন তাঁরা। ঘা-ও হচ্ছে।
তাই গবেষকরা দেখতে চেয়েছিলেন এ ব্যাপারে আর পাঁচটা সাধারণ সাবান বা স্যানিটাইজারের বিকল্প অন্য কিছু হয়ে উঠতে পারে কি না। এগজিমা বা ডার্মাটাইটিস হলে চিকিৎসকরা যে সব ব্যাকটেরিয়া-রোধী সাবান ব্যবহারের পরামর্শ দেন ডার্মল-৫০০ তাদের অন্যতম।
গবেষকরা দেখেছেন ত্বকে করোনাভাইরাস মারতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা নেয় ডার্মল-৫০০। একেবারে অ্যালকোহল স্যানিটাইজারের মতোই।
সুবিধা এই যে, তাতে বহুল ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্যানিটাইজারের মতো এগজিমা ও নানা ধরনের চর্মরোগের আশঙ্কাও থাকে না। কারণ, ডার্মল ৫০০ ত্বকের উপর এক ধরনের প্রলেপ তৈরি করে। যার ফলে ত্বক আর্দ্র হয়ে যায়।
শুধু তা-ই নয় ডার্মল ৫০০-র মধ্যে থাকে দু’টি রাসায়নিক পদার্থ। ‘বেঞ্জালকোনিয়াম ক্লোরাইড’ এবং ‘ক্লোরহেক্সিডাইন ডাই-হাইড্রোক্লোরাইড’। এই দু’টি রাসায়নিকই শুকনো খসখসে ত্বককে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ছত্রাকের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
ইম্পিরিয়াল কলেজ লন্ডনের ভাইরোলজিস্ট র্যাচেল এডগার ও তাঁর সহযোগীরা দেখিয়েছেন, ডার্মল ৫০০ যে শুধুই ত্বকে সার্স কভ-২ ভাইরাসই মারে তা নয়; মারতে পারে ফ্লু ভাইরাসও।
র্যাচেল বলেছেন, ‘‘ত্বকে সার্স কভ-২ ভাইরাস মারতে ডার্মল ৫০০ স্যানিটাইজারের মতোই কার্যকরী। কখনও বা বেশি কার্যকরী। ত্বকে সার্স কভ-২ ভাইরাসকে মাত্র ৩০ সেকেন্ডেই মেরে ফেলতে পারে ডার্মল ৫০০।’’
‘পিয়ার রিভিউ’ পর্ব শেষ করে গবেষণাপত্রটি এখন একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকায় প্রকাশের অপেক্ষায়।