মুরগির পদের নামকরণের উৎস ধ্বনি! ছবি: সংগৃহীত।
ঢাকের বোল শুনেছেন। তবলারও বোল হয়। তা বলে মুরগি রান্নায় বোল! কোনও আবোল-তাবোল নয়, একেবারে ছন্দবদ্ধ, সুরেলা বোল।
রাঁধতে গেলে খুন্তি হাঁড়ির ঠোকাঠুকিতে শব্দ তৈরি হয় ঠিকই, কিন্তু এ শব্দ তেমনও নয়। মশলার সঙ্গে যতই মিশতে থাকে মাংস, ততই বাড়তে থাকে শব্দ। টকা-টকটক, টকা-টকটক। দূর থেকে সেই শব্দ শুনেই বোঝা যায়, ঝড় উঠছে রাঁধুনির খুন্তিতে।
শব্দের এমনই মাহাত্ম্য তা থেকেই মুরগির পদের নাম হয়েছে ‘চিকেন টকাটক’। রন্ধনশিল্পী বরুণ ইনামদার সমাজমাধ্যমে তাঁর একটি ভিডিয়োতে বলেছেন, একে বলা চলে ‘ওনোম্যাটোপিয়া’ অর্থাৎ, ধ্বনি থেকেই যার নামকরণ।
এই পদের সাকিন অবশ্য ভারত নয়। পাকিস্তানের লাহোরের ‘খাদ্যগলি’তে ঝড় ওঠে এমন শব্দের। দূর থেকে মেলে সুঘ্রাণ। রাস্তার ধারের খাবার হিসাবেই এর জনপ্রিয়তা।
এই পদে খুব বেশি কারিকুরি নেই। রকমারি মশলার ব্যবহারেই তা বানিয়ে ফেলা যায়। লাহোরে রান্নাটির জন্য ব্যবহার হয় চওড়া তাওয়া এবং এমন একটি খুন্তি, যার মুখটি বেশ চওড়া।
হেঁশেলে কী ভাবে বানাবেন?
উপকরণ
২৫০ গ্রাম হাড়-ছাড়া মুরগির মাংস
৫-৬ টেবিল চামচ সাদা তেল
একটি ছোট পেঁয়াজ কুচনো
একটি ছোট টম্যাটো
৭-৮ কোয়া রসুন কুচি
১ ইঞ্চি আদা কুচি
আধ চা-চামচ হলুদ
১ টেবিল চামচ লঙ্কা গুঁড়ো
সামান্য ধনে পাতা
স্বাদমতো নুন
মশলার জন্য
১ টেবিল চামচ ধনে গুঁড়ো
১ টেবিল চামচ গরম মশলা গুঁড়ো
১ টেবিল চামচ কসৌরি মেথি
১ টেবিল চামচ হলুদ
১ টেবিল চামচ লঙ্কা গুঁড়ো
সামান্য জায়ফল গুঁড়ো
পদ্ধতি: বাড়িতে বড় তাওয়া থাকে না। তাই রান্নাটি করতে হবে অ্যালুমিনিয়াম বা লোহার কড়ায়। প্রথমেই দিয়ে দিতে হবে তেল। তেল গরম হলে পেঁয়াজ, লঙ্কা, রসুন, আদা কুচি দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। স্বাদমতো নুন দিন। তার পর দিতে হবে টম্যাটো কুচি। ভাল করে কষিয়ে নিয়ে ছড়িয়ে দিন সমস্ত মশলাগুলি। আর কিছুটা কষিয়ে নেওয়ার পর দিতে হবে ছোট করে কাটা মুরগির মাংস। মাংস এবং মশলা যখন মিশবে, তখনই খুন্তির সাহায্যে টকাটক বা কটাটক বোল তুলে মাংসগুলিকে কিমার মতো একদম ছোট ছোট করে নিতে হবে। মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে উপর থেকে ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে দিলেই হবে। জিনিসটি দেখতে হবে মশলা মাখানো কিমার মতো।