স্যান্ডউইচের পুর নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন, উচ্চতা নিয়ে ভেবেছেন কি? ছবি: সংগৃহীত।
চির পরিচিত লুচি-পরোটার জায়গায় বহু বাড়িতেই জলখাবারে চলে আসছে স্যান্ডউইচ। ফুটপাথ থেকে অফিস পাড়া— চিজ় ভরা স্যান্ডউইচে কামড় দেওয়ার জন্য লোকের অভাব হয় না। সমাজমাধ্যমে রকমারি রন্ধনপ্রণালী দেখে হেঁশেলে এর পুর নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চলে। কিন্তু কেউ কখনও স্যান্ডউইচের উচ্চতা নিয়ে মাথা ঘামিয়েছেন কি?
মুম্বইয়ের রন্ধনশিল্পী ভেলটন সালদান্হা। অভিনেত্রী সোনম কপূরের ব্যক্তিগত রন্ধনশিল্পী বলেও পরিচিত তিনি। ভেলটন বলছেন, ‘‘একটি ভাল স্যান্ডইউচের উচ্চতা হওয়া উচিত তিন আঙুল। হাতের তিনটি আঙুল আড়াআড়ি ভাবে রাখলে যতটা হবে, ঠিক ততটা।’’ তার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। সহজাত ভাবে হাঁ করলে ঠিক যতটা উচ্চতার স্যান্ডউইচে কামড় বসানো যায়, ততটাই আদর্শ। এ ক্ষেত্রে, খাবারটি তার চেয়ে বেশি উঁচু হলে খেতে অসুবিধা হবে।
কিন্তু এর কি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে? পুষ্টিবিদ কণিকা মালহোত্রা বলছেন, এর সমর্থনে কোনও বিজ্ঞানসম্মত তত্ত্ব নেই। তবে এটা ঠিক, স্যান্ডইউচ এর চেয়ে বেশি উচ্চতাবিশিষ্ট বেশি হলে খেতে অসুবিধা হবে।
সুবিধা কী?
১. প্রতিটি মানুষের চোয়াল স্বাভাবিক ভাবে যতটা খোলে, অর্থাৎ হাঁ যতটা বড় হয়, খাবারের মাপ তার মধ্যে থাকা উচিত। এতে খাবার চিবোতে সুবিধা হয়।
২. বড় আকারের খাবার মুখে পুরতে গেলে কষ্ট করে চোয়াল যতটা সম্ভব বড় করতে হয়। এতে এক ধাক্কায় বেশি পরিমাণ খাবারও মুখে চলে যায়। কিন্তু, হজমের সুবিধার জন্য একটু করে খাবার নিয়ে ভাল করে চিবিয়ে তা খাওয়া দরকার।
৩. তিন আঙুল নীতিতে বানানো স্যান্ডউইচের পুরটি যদি প্রোটিন সমৃদ্ধ হয় এবং তাতে ভিটামিন যুক্ত সব্জিও থাকে, তা হলে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন— সব ক’টি উপাদানই প্রতি কামড়ে শরীরে যায়।
তিন আঙুল নীতি কতটা বাস্তবসম্মত?
স্যান্ডইউচে পরতের পর পরত চাপাতে থাকলে, ধরতে গিয়ে পাউরুটি খুলে আসতে পারে। কামড়াতে গিয়ে পুর ভিতর থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। তাতে লাভ কি! তার চেয়ে তিন আঙুলের নীতি মানলে তা ধরতে এবং খেতে, উভয় ক্ষেত্রেই সুবিধা হবে, মনে করেন পু্ষ্টিবিদ।
আর কী ভাবে ভাল স্যান্ডউইচ বানানো যায়?
১. স্যান্ডউইচের পাউরুটি মাল্ট গ্রেন বা ব্রাউন ব্রেডের হলে তা স্বাস্থ্যকর হবে। অনেকে কাঁচা পাউরুটি স্যান্ডউইচে খান। তবে তা সেঁকে নিলে, মুচমুচে ভাব আসবে।
২. দু’টি পাউরুটিতে সসে্র বদলে হামাস (চানা, অলিভ অয়েল, সাদা তিলের মিশ্রণে তৈরি বিশেষ খাবার) মাখিয়ে নিতে পারেন। পুর হিসাবে মুরগির মাংস, টোফু, সব্জি, লেটুস দেওয়া যায়।
৩. স্যান্ডউইচ কোনাকুনি কেটে নিন। তবে পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে এটি কোনাকুনি দু’বার কেটে চার টুকরোতেও ভাগ করে নেওয়া যায়।