সপ্তমীর ভোজের জন্য রইল নানা স্বাদের নিরামিষ-আমিষ দু’রকমের রেসিপির হদিস। ছবি- সংগৃহীত।
মহাসপ্তমীর দিন ভোরে বেল গাছের তলায় দেবীকে কুমারী রূপে পুজো করা হয়। এ দিন মা দুর্গার সন্তান-সহ বাপের বাড়ি আসার দিন। ভোরে দেবীকে নিদ্রা থেকে তোলার জন্য আহ্বান জানানো হয় বোধনের মন্ত্র উচ্চারণ করে। এ দিন গঙ্গার ঘাটে নবপত্রিকা স্নান করিয়ে দেবীর প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হয়।
সপ্তমীর দিন কোনও কোনও বাড়িতে নিরামিষ খাওয়ার রীতি রয়েছে। আবার কেউ কেউ আমিষ খান। তাই সপ্তমীর ভোজে রইল দু’রকমেরই রেসিপি।
ঘি ভাত
উপকরণ
গোবিন্দভোগের চাল: ৩৫০ গ্রাম
ঘি: ৫০ গ্রাম
এলাচ, লবঙ্গ, দারচিনি, তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা গোটা
কাজু: ১৫-২০টি
কিশমিশ: ২০টি
গোলাপ জল: সামান্য
নুন: স্বাদমতো
চিনি: স্বাদমতো
সপ্তমীর দিন নিরামিষ খেতে চাইলে খুব সহজেই বানিয়ে নিতে পারেন ঘি ভাত। ছবি- সংগৃহীত।
প্রণালী
চাল ধুয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে ৩০ মিনিট। কড়াইতে ঘি গরম করে গোটা গরম মশলা, তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা দিয়ে কাজু-কিশমিশ ভেজে নিতে হবে। তার পর চাল ছেড়ে আঁচ কম করে ভাজতে হবে ৪-৫ মিনিট, নুন দিতে হবে।
মেশাতে হবে গরম জল, জল চালের একটু উপরে থাকবে, চিনি এবং গোলাপ জল দিয়ে ঢাকা দিয়ে ভাত সেদ্ধ করে নিতে হবে, ভাত হয়ে এলে, জল শুকালে, এক চামচ ঘি আর এলাচ গুড়ো দিয়ে চাপা দিয়ে ১৫ মিনিট রেখে পরিবেশন।
শুক্তো
অনেক রকম শুক্তো হয়। উচ্ছে,পলতা, নালতে, নীম পাতা বা আমিষ শুক্তোও হয়। অন্নদামঙ্গলে ২২ রকম শুক্তোর কথা বলা আছে। তবে পুজোর সময় জনপ্রিয় চিরাচরিত উচ্ছের শুক্তো।
উপকরণ
উচ্ছে (ভেজে নেওয়া): ২টি
বড়ি (ভেজে নেওয়া):১০টি
আলু: ১০০-১৫০ গ্রাম
রাঙালু: ১০০-১৫০ গ্রাম
বরবটি: ১০০-১৫০ গ্রাম
পেঁপে: ২০০ গ্রাম
কাঁচকলা ২-৩টি
সজনে ডাটা: ৩-৪টি
পাঁচ ফোড়ন: প্রয়োজন মতো
নুন: স্বাদ অনুযায়ী
ঘি: ৩ চামচ
সর্ষে বাটা: ২ চামচ
দুধ: ২ কাপ
রাঁধুনি: ১ চামচ
আদা বাটা: ১ চামচ
পুজোর সময় জনপ্রিয় চিরাচরিত উচ্ছের শুক্তো। ছবি- সংগৃহীত।
প্রণালী
প্রথমে কড়াইয়ে তেল গরম করে বড়ি আর উচ্চে আলাদা করে ভেজে তুলে নিতে হবে। তার পর ধীরে ধীরে সব সব্জি গরম তেলে ভেজে নিয়ে আলাদা তুলে রাখতে হবে। তার পর কড়াইয়ের তেলে পাঁচফোড়ন, তেজপাতা দিয়ে পেঁপে, কাঁচকলা আর সজনে ডাটা ভেজে নিতে হবে।
এই আধা ভাজা সবজি কিছুটা গলে গেলে আগে থেকে ভাজা সব্জি কড়াইয়ে ঢেলে নিন। এর পরে এতে সর্ষে বাটা চিনি দিতে হবে। সব একটু ফুটে উঠলে এক কাপ দুধ যোগ করতে হবে। সব সব্জি সেদ্ধ হলে রাঁধুনি আর আদা বাটা দিয়ে আগে থেকে ভেজে রাখা উচ্ছে দিয়ে মিনিট কয়েক ঢেকে রাখুন।
তার পর আঁচ বন্ধ করে দু’চামচ ঘি দিয়ে দিলেই আপনার শুক্তো তৈরি।
ছানার কোফতাকারি
উপকরণ
ছানা: ২৫০ গ্রাম
আদা বাটা: ১ চামচ
লঙ্কা বাটা: ১ চামচ
জিরে গুঁড়ো: ১ চামচ
কিশমিশ: ১০-১৫টি
ঝোলের জন্য
গোটা গরম মশলা: আন্দাজ মতো
আদা বাটা: ১ চামচ
কাশ্মীরি লাল লঙ্কা গুঁড়ো: ১ চামচ
ধনে গুঁড়ো: ২ চামচ
মৌরি বাটা: ১ চামচ
কিশমিশ বাটা: ২-৩ চামচ
প্রণালী
ছানা (কেনা বা বাড়িতে বানানো), আদা-লঙ্কা বাটা, জিরে গুঁড়ো, কিশমিশ, গরম মশলা গুঁড়ো, ময়দা, সব ভাল করে মেখে ৩০ মিনিট ফ্রিজে রাখুন। তার পর ভেজে নিন। অল্প কয়েকটি করে ভাজবেন যাতে ভেঙে না যায়।
নিরামিষ পদের তালিকায় রাখতে পারেন ছানার কোফতাকারি। ছবি- সংগৃহীত।
ঝোল
তেল আর ঘি গরম করে তেজপাতা, গোটা গরম মশলা দিয়ে দিন। একটা পাত্রে আদা, লঙ্কা, কাশ্মীরি লঙ্কা, জিরা, ধনে আর সামান্য মৌরি বাটা দিয়ে জল দিয়ে গুলে রেখে দিতে হবে। এটা তেলে ছেড়ে কষতে হবে। তেল ভাসবে, তার পর নুন, হলুদ, চিনি, কাঁচা লঙ্কা চেরা আর কিশমিশ বাটা (৩-৪ চামচ)। আবার ভেজে অল্প গরম জল ফুটে উঠলে কোফতা ছেড়ে ৩-৫ মিনিট ফুটলে, ঘি আর এলাচ বাটা দিয়ে আঁচ বন্ধ করে দিন। ঠিক ঠিক কষানো হলে রং ধরবে ভাল।
এই পুজোয় পাতে পড়ুক লেবু মরিচ চিকেন। ছবি- সংগৃহীত।
লেবু মরিচ চিকেন
উপকরণ
চিকেন:৭৫০ গ্রাম
লেবুর রস: ৪-৫ চামচ
গোলমরিচ: ১ চামচ
পেঁয়াজ: ৩ কুচি
রসুন, কাঁচা লঙ্কা: ৩ চামচ
কাজু: ১৫টি
গন্ধরাজ: লেবু পাতা
প্রণালী
চিকেনে লেবুর রস, গোলমরিচ মেখে এক ঘণ্টা রাখতে হবে। সাদা তেল গরম করে তাতে কুচি পেঁয়াজ, রসুন আর কাঁচা লঙ্কা হালকা ভাজতে হবে, তবে দেখতে হবে যাতে সাদা থাকে। তাতে কয়েকটি কাজু মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে রাখতে হবে। সাদা তেলেই রান্না হবে। এ বার তেলে চিকেন ভাজতে হবে প্রায় ১৫-২০ মিনিট।
চিকেন তুলে নিয়ে, তেলে ওই পেস্ট দিয়ে কষাতে হবে। নুন এবং গোলমরিচ দিতে হবে আবার। আগে থেকে ভেজে রাখলে চিকেন খুব বেশি সময় নেবে না। লেবুর খোসা গ্রেট করে দিতে হবে এক চামচ মতো। সব বেশ মজে আসলে, এক চামচ লেবুর রস, গোলমরিচ আর চেরা লঙ্কা দিয়ে পরিবেশন করুন। যদি গন্ধরাজ লেবু থাকে বা তার পাতা থাকা তা হলে ব্যবহার করতে পারেন। ভারি ভাল গন্ধ বেরোবে।