পুজোর এই দিনগুলোয় জন্য রইল কিছু সাবেকি খাবারের রেসিপি। ছবি: সংগৃহীত
বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গা পুজো। এই পাঁচ দিন মানেই ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে নতুন জামা, ঠাকুর দেখা, আড্ডা মারা আর অবশ্যই ভালমন্দ খাওয়া। ষষ্ঠী থেকে দশমী— নানা রীতিনীতি, নানা আচার থাকে। তাই পুজোর এই দিনগুলোয় জন্য রইল কিছু সাবেকি খাবারের রেসিপি। ষষ্ঠী থেকে দশমির রান্নার এই নতুন সিরিজ ‘আহ্ স্বাদ’।
ষষ্ঠীর দিন বাংলার ঘরে ঘরে মায়েরা উপোস করে থাকেন সন্তানের জন্য। কথিত আছে, এক মা ধুলোমুঠি শাড়ি চেয়েছিলেন। ব্রত করার পর তিনি সন্তান লাভ করেন এবং কয়েক বছর পরে মা যখন লাল পেড়ে সাদা শাড়ি পরে পুজো করছেন তুলসীতলায় সেই দুষ্টু সন্তান ধুলো মুঠি করে নিয়ে মায়ের আঁচলে ফেলে দেয়। তখন সেই বাড়ির প্রৌঢ়রা বলেন যে, ঈশ্বর সেই ধুলোমুঠি শাড়ির শখ সে দিন পূরণ করলেন। সেই থেকে ষষ্ঠীর তিথিতে সাধারণত চাল বর্জন করে নিরামিষ খাবার খাওয়ার প্রচলন আছে। তেমনই কিছু রেসিপি রইল সিরিজের প্রথম পর্বে।
পুজোর এই দিনগুলোয় ছোলার ডাল বা আলুর দমের সঙ্গে বানিয়ে নিতে পারেন রাধাবল্লভী। ছবি: সংগৃহীত
রাধাবল্লভী
উপকরণ
ময়দা: ২৫০ গ্রাম
সাদা তেল: ৪-৫ চামচ
ঘি: ১ চামচ
নুন: সামান্য
ডাল: ১৫০ গ্রাম
হিং: ২ চিমটি
আদা বাটা: ১/২ চামচ
মৌরি গুঁড়ো: ১ চামচ
লংকা বাটা: ১/২ চামচ
কালোজিরে: ১/৪ চামচ
পদ্ধতি
বিউলির ডাল সারা রাত ভিজিয়ে রেখে আদা এবং লঙ্কা দিয়ে বেটে নিতে হবে। সাদা তেল গরম করে তাতে কালোজিরে আর হিং দিয়ে দিন। তার পর বেটে রাখা ডাল, নুন, হলুদ যোগ করুন। ভাল করে ভাজতে হবে, শুকনো হয়ে এলে এতে মৌরি গুঁড়ো আর অল্প ঘি দিয়ে নামাতে হবে। এ ডালের কয়েক চামচ নিয়ে ময়দা মাখার সময়ে দিন। এ ছাড়া ও নুন, ঘি দিয়ে ময়ান দিয়ে ভাল করে মেখে ময়দা ভিজে কাপড়ে মুড়ে ৩০ মিনিট রাখতে হবে। এর পর সাদা তেল গরম করে নিন। বড় লেচি নিয়ে মাঝে গর্ত করে পুর ভরে সাবধানে বেলে নিয়ে ভাজতে হবে।
ষষ্ঠীর পেটপুজোতে পাতে থাকুক মিষ্টির দোকানের আলুর তরকারি। ছবি: সংগৃহীত
মিষ্টির দোকানের আলুর সবজি
উপকরণ
আলু: ৫০০ গ্রাম খোসা সুদ্ধ
মটর: ১০০ গ্রাম
সাদা তেল: ২-৩ চামচ
আদা বাটা:১ চামচ
লঙ্কা: ৬-৭ টি
পাঁচ ফোড়ন: ১/২ চামচ
মৌরি গুঁড়ো: ১ চামচ
ঘি: ১ চামচ
পদ্ধতি
আলু খোসা-সহ চৌকো করে কেটে নিতে হবে। প্রেশার কুকারে মটর চাপিয়ে একটা সিটি দিয়ে রেখে দিন। সাদা তেল গরম করে তাতে শুকনো লঙ্কা, হিং, পাঁচফোড়ন দিয়ে আলু ছেড়ে কয়েক মিনিট ভাজতে হবে। মেশাতে হবে আদা বাটা, চেরা লঙ্কা, নুন হলুদ আর চিনি, আবার অল্প ভেজে মটরগুলো দিয়ে কষিয়ে সামান্য জল দিয়ে চাপা দিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে। একটু মাখো মাখো হয়ে এলে চামচ ঘি দিয়ে কিছু ক্ষণ রেখে নামিয়ে নিন।
হাতের কাছে থাকা কিছু উপকরণ দিয়েই বানিয়ে ফেলতে পারেন ভাপা সন্দেশ। ছবি: সংগৃহীত
ভাপা সন্দেশ
উপকরণ
ছানা: ৩৫০ গ্রাম
গুঁড়ো চিনি: ১৫০ গ্রাম
মিল্কমেড: ১/২ কাপ
এলাচ গুঁড়ো: ১/২ চামচ
পেস্তা: ৩-৪ চামচ
পদ্ধতি
ছানার জল ঝরিয়ে নিতে হবে। তাতে গুঁড়ো চিনি আর অল্প কনডেন্সড মিল্ক, এলাচ গুঁড়ো ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে মাখতে হবে। একটা টিফিনবক্সে ঘি মাখিয়ে এই মাখা ছানা কেকের মতো ছড়িয়ে উপরে জাফরান বা পেস্তা ছড়িয়ে দিতে হবে। কেউ কেউ এলাচের বদলে গোলাপ জল ও ব্যবহার করেন। এই টিফিনবক্স গ্যাসে একটা বড় পাত্রে জল ফুটিয়ে একটা বাসন রাখার স্ট্যান্ড রেখে তার উপর বসাতে হবে। তার পর পাত্র ঢাকা দিয়ে ফুটতে দিতে হবে ১৫ মিনিট। টিফিনবক্স ঠান্ডা করে ফ্রিজে রাখতে হবে ৪-৫ ঘণ্টা। ফ্রিজ থেকে বার করে ঠান্ডা সন্দেশ পরিবেশন করুন।