তিনি ভূগোলের প্রেক্ষাপটে ইতিহাস চিনিয়েছেন।উদ্দেশ্য ছিল সমস্ত মানুষের কাছে বিশ্বের জ্ঞানভান্ডারের দরজা খুলে দেওয়া। আগামী বুধবার ২০০ বছর পূর্ণ করবেন রাজেন্দ্রলাল মিত্র।
History

Rajendralal Mitra: বিষয়ের গণ্ডিতে আটকে থাকেনি তাঁর জ্ঞানচর্চা

লিখেছেন রাজপুত জাতির ইতিবৃত্ত। আঁকিয়েছেন নানা দেশ-প্রদেশের মানচিত্র। আগ্নেয়গিরি থেকে মিশরের পিরামিড, বৌদ্ধদের মঠ থেকে অ্যাজ়টেকদের নরবলি ইত্যাদি বহু বিচিত্র বিষয়ে লিখেছেন। শুভাশিস চক্রবর্তী

Advertisement

শুভাশিস চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৯:০৪
Share:

বিদ্যাসাগর মশাই রবীন্দ্রনাথকে এক প্রকার ঘুরিয়ে বারণই করে দিলেন। তিনি অতীত অভিজ্ঞতায় দেখেছেন, বড় বড় মাথাদের নিয়ে কোনও মহৎ উদ্দেশ্যে সমিতি, কমিটি গঠন করা হলে, তাতে কাজের কাজ হয় না। সবারই আমিত্ববোধ আকাশছোঁয়া! রবি ঠাকুরকে তিনি পরামর্শ দিলেন, “আমাদের মতো লোককে পরিত্যাগ করো— ‘হোমরাচোমরা’দের লইয়া কোনো কাজ হইবে না, কাহারও সঙ্গে কাহারও মত মিলিবে না।” সত্যিই বিদ্যাসাগর গেলেন না ‘সারস্বত সমাজ’-এর সেই প্রথম অধিবেশনে।

Advertisement

ঈশ্বরচন্দ্রের সান্নিধ্যলাভ না ঘটলেও ১২৮৯ বঙ্গাব্দের ২ শ্রাবণের এই সভায় যোগ দিতে ‘দ্বারকানাথ ঠাকুর গলির’ ছয় নম্বর বাড়িটিতে এসেছিলেন রাজেন্দ্রলাল মিত্র। তিনিই অনুষ্ঠানের সভাপতি। প্রধান পরিকল্পক ছিলেন জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর, সভার প্রধান লক্ষ্য ‘বাংলার সাহিত্যিকগণকে একত্র করিয়া একটি পরিষৎ স্থাপন করিবার কল্পনা।’ এর প্রধান উদ্দেশ্য বাংলা বানান সংস্কার, পরিভাষা ‘বাঁধিয়া দেওয়া’ এবং সেই সঙ্গে বিদ্যার সব রকম উন্নতি সাধন। রাজেন্দ্রলালের তারুণ্যময় উৎসাহ নবীন প্রজন্মের প্রতিনিধি রবীন্দ্রনাথকে ছুঁয়ে গিয়েছিল। বাস্তবিক যে ক’টা দিন এই সভা স্থায়ী হয়েছিল, তার সমস্ত কাজকর্ম সভাপতি মশাই কার্যত একাই করতেন।

অ্যালবার্ট হলে দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হল। সেখানে ভূগোলের পরিভাষা তৈরির কাজটিকে সারস্বত সমাজ অগ্রাধিকার দিলে রাজেনবাবু পরিভাষার প্রথম খসড়া তৈরি করে ফেললেন। দ্রুত সেটি ছাপানো হল। আলোচনার জন্য সমাজের অন্য সভ্যদের কাছেও পৌঁছে গেল তার কপি। পৃথিবীর সমস্ত দেশের নাম সেই সেই দেশে প্রচলিত উচ্চারণ অনুসারে লিপিবদ্ধ করার কথা ভেবেছিলেন রাজেন্দ্রলাল মিত্র। তবে এত কিছু বাস্তবায়িত হওয়ার আগে, অঙ্কুরের উদ্গম হতে না হতেই বিদ্যাসাগরের অমোঘ অভিজ্ঞতা ফলে গেল। সারস্বত সমাজের মৃত্তিকায় জল শুকিয়ে গেল, বীজের অপমৃত্যু ঘটল! ‘জীবনস্মৃতি’-তে রবীন্দ্রনাথের আক্ষেপ— “তখন যে বাংলা সাহিত্য সভার প্রতিষ্ঠাচেষ্টা হইয়াছিল সেই সভায় আর কোনো সভ্যের কিছুমাত্র মুখাপেক্ষা না করিয়া যদি একমাত্র মিত্র মহাশয়কে দিয়া কাজ করাইয়া লওয়া যাইত, তবে বর্তমান সাহিত্য-পরিষদের অনেক কাজ কেবল সেই একজন ব্যক্তি দ্বারা অনেকদূর অগ্রসর হইত সন্দেহ নাই।”

Advertisement

ভূগোলের প্রেক্ষাপটে ইতিহাসকে চেনানো, এই ভাবনার প্রয়োগ রাজেন্দ্রলালের কৃতিত্ব। রাজপুত জাতির ইতিবৃত্ত লিখে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করেছেন তিনি, নিজের সম্পাদিত ‘বিবিধার্থ সংগ্রহ’ পত্রিকায়। বাংলা ভাষায় সম্ভবত প্রথম সেই সচিত্র পত্রিকায় তিনি আর একটি অভিনব ঘটনা ঘটালেন। এক মুসলমান চিত্রকরকে দিয়ে আঁকিয়ে নিলেন রাজপুতানার মানচিত্র। আরও পরে অবশ্য বাংলা ও অন্যান্য ভাষায় সমগ্র ভারতের মানচিত্রও তৈরি করেন। এই কাজে তাঁর সুখ্যাতি ও পারদর্শিতার জন্য সরকারি আমন্ত্রণে উত্তর-পশ্চিম ভারতের ম্যাপও তৈরি করে দিতে হয়েছিল। ১৮৫৪ সালে মুদ্রিত রাজেন্দ্রলালের ‘প্রাকৃত ভূগোল’ বইয়ে তিনি সে কালের পক্ষে নতুন এই বিষয়ে আগ্রহী পড়ুয়াকে জানাচ্ছেন: “ভূগোলের যে অংশে... পৃথিবীর প্রকৃতাবস্থার বিবরণ বিষয়ক আলোচনা থাকে, তাহার নাম প্রাকৃত ভূগোল।” অল্পবয়সি শিশুদের হাতে ভূগোল বই দেওয়া হয় বলে মিত্রমশাই বাংলা ভাষায় ভূগোলচর্চা বিষয়ে নানাবিধ পরিকল্পনায় ব্রতী হয়েছিলেন, তার বহু নিদর্শন আজও লক্ষিত।

শুধু ভূগোল নয়, বহুবিদ্যা-বিশারদ এই সুপণ্ডিত ‘বিবিধার্থ সংগ্রহ’ ছাড়া ‘রহস্য সন্দর্ভ’ নামেও একটি পত্রিকা প্রকাশ করেছেন। এই দু’টি সাময়িকীতে গ্রন্থাগার, আগ্নেয়গিরি, মিশরের পিরামিড, বৌদ্ধদের মঠ থেকে শুরু করে মস্তিষ্ক, ভূতত্ত্ব, ভাষাবিজ্ঞান, অ্যাজ়টেকদের নরবলি ইত্যাদি বহুবিধ বিচিত্র বিষয়ে নিজে লিখেছেন, অন্যদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন। তিনি মনেপ্রাণে চাইতেন সাধারণ মানুষ যেন অনায়াসে বিদ্যালাভ করতে পারে, বালক-বালিকাদের যেন সহজে খেলার ছলে জগতের নানা বিষয়ে বিজ্ঞানসম্মত ধারণা তৈরি হয়।

ইতিহাসের ধারা অতীতের সহস্র বাঁকে রেখে গেছে জাতির আত্মচিহ্নের পরতগুলি। সে সবের নানা কোণে উঁকি দেওয়া ছিল জ্ঞানতপস্বী রাজেন্দ্রলালের প্রিয় অ্যাডভেঞ্চার। পত্রিকার নামকরণে ‘রহস্য’ শব্দটিকে তাই আজকের থ্রিলার-কাহিনির মাহাত্ম্য দিয়ে বুঝলে চলবে না। বিশ্ববিদ্যাকে আত্মস্থ করে ভারতবিদ্যার অসীম রহস্য অনুসন্ধানে তিনি যাত্রা করেছিলেন। এ কাজে তাঁর প্রধান সহায় হয়েছিল ‘এশিয়াটিক সোসাইটি’। এই প্রতিষ্ঠান থেকে তাঁর সম্পাদনায় ১৩টি সংস্কৃত এবং ২১টি ইংরেজি বই প্রকাশিত হয়েছে, সোসাইটির জার্নালে লিখেছেন অজস্র প্রবন্ধ। ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, “যে-এশিয়াটিক সোসাইটিতে রাজেন্দ্রলাল এক সময়ে সামান্য বেতনে কর্ম্মজীবন সুরু করেন, অক্লান্ত পরিশ্রম ও যোগ্যতাবলে কালক্রমে সেই বিদ্বৎসভার সভাপতির পদ পর্যন্ত অধিকার করিয়াছিলেন, তাঁহার পূর্ব্বে আর কোন বাঙালীই এই উচ্চ সম্মানের অধিকারী হন নাই।’’

এখানকার বিপুল গ্রন্থ ও পুঁথিসম্ভারে ইতিহাসকে স্পর্শ করার সুযোগ ঘটেছিল তাঁর। সেই জ্ঞানের গভীর চর্চায় তাঁর জীবন থেকে আলস্য শব্দটা দূর হয়ে গিয়েছিল। তিনি জানতেন বঙ্গদেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে আছে অজস্র পুঁথি, বিশ্বাস করতেন সেখান থেকে উঠে আসবে এমন সত্য, যা হয়তো বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের দিগন্তকে আরও সুদূরে নিয়ে যাবে। তাঁর দৃঢ় ধারণা ছিল, অতীতে “বাংলা থেকে যখন ক্রমশ মুছে যাচ্ছে বৌদ্ধধর্ম; তখন বেশ কিছু বৌদ্ধ ভিক্ষু ও পদকর্তা প্রাণের ভয়ে নেপাল, তিব্বতের মতো জায়গায় চলে গিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে চলে গিয়েছিল তখনকার পুঁথিও। যদি প্রাচীন নিদর্শন পাওয়া যায়, তাহলে ওসব জায়গাতেই পাওয়া যাবে।” সেই অনুসন্ধানে নেপাল বিষয়ে উৎসুক হয়ে উঠেছিলেন রাজেন্দ্রলাল। এমন দূরদৃষ্টির প্রমাণ জীবদ্দশায় দেখে যেতে পারেননি, কিন্তু তাঁর মৃত্যুর একশো ত্রিশ বছর পর, আজ এক জন স্কুলছাত্রও জানে, বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদের পুঁথি পাওয়া গিয়েছিল নেপালেই!

বাঙালিকে চিঠি লেখাও শিখিয়েছেন রাজেন্দ্রলাল, তাঁর চার খণ্ডে রচিত ‘পত্রকৌমুদী’ নামের বইটির মাধ্যমে। গুরুজন বা স্নেহভাজনকে পত্র, পাট্টা-কবুলিয়ৎ প্রভৃতি স্বত্ব এবং আদালতে প্রযোজ্য আইনি পত্র প্রভৃতির লিখনপদ্ধতি সহজ ভাষায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, সেই সঙ্গে আক্ষেপ করেছেন: “এতদ্দেশীয় মুসলমানেরা পত্রের পরিমাণ ও রঞ্জন বিষয়ে অদ্যাপি মনোযোগী আছে; কিন্তু হিন্দুসমাজে তাহার আর কোন অনুধাবন নাই।” পাশাপাশি তাঁর রচিত অধিকাংশ ব্যক্তিগত পত্রেও উদ্ভাসিত হয়েছে এক জ্ঞানতাপসের প্রজ্ঞা। পুরী স্কুলের হেডমাস্টার ক্ষীরোদচন্দ্র রায়কে লেখা তাঁর একাধিক পত্র ‘সাহিত্য’ পত্রিকার ১৩০২ বঙ্গাব্দের জ্যৈষ্ঠ-শ্রাবণ সংখ্যায় ছাপা হয়েছিল। ওড়িশার ইতিহাস বিষয়ে গ্রন্থ রচনার আগে বিশদে অনুসন্ধান করেছেন তিনি, যার প্রমাণ এই পত্রাবলি। একটি পত্রে তিনি লিখেছিলেন, “গুণ্ডিচা ইন্দ্রদ্যুম্নের স্ত্রী, তবে আপনি অনুমান করিয়াছেন যে গুণ্ডিচা আসলে গুঁড়িকাষ্ঠ, ইহা হইলেও হইতে পারে।”

মেডিক্যাল কলেজের প্রথম সারির ছাত্র ছিলেন; কিন্তু সেখানকার সাহেবসুবো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিবাদ শুরু হলে আপসহীন রাজেন্দ্রলাল কলেজ ছেড়ে আইন পড়তে শুরু করেন। এখানে মন টিকল না বলে ‘পরিশেষে একাগ্রচিত্তে ভাষানুশীলনে রত হইলেন’। সুবক্তা রাজা রাজেন্দ্র সহজে নিজের বক্তব্য থেকে সরতেন না। যুক্তি আর আন্তরিকতার সঙ্গে সঙ্গে সেই বক্তব্যে থাকত তেজ এবং গভীরতা। বিরুদ্ধ মতের লোকেদের সঙ্গে বেঁধে যেত চরম বিবাদ। মিথ্যাচার আর কলুষতার বিরুদ্ধে তাঁর ছিল নিরন্তর সংগ্রাম। ডাক্তারি পড়ার সময়ই যে শুধু সাহেবদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন তা নয়, জীবনে কখনও রেয়াত করেননি ব্রিটিশ প্রশাসককে। কলকাতার কমিশনার হিসাবে তাঁর একই রকম তেজোদ্দীপ্ত ভূমিকা: “যোদ্ধৃবেশে তাঁর রুদ্রমূর্তি বিপজ্জনক ছিল। ম্যুনিসিপাল সভায় সেনেট সভায় সকলেই তাঁকে ভয় করে চলত।”— লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ। এমন দৃঢ়চেতা মানুষ বেশির ভাগ লোকেরই পছন্দসই হন না। ফলে পেয়েছেন ‘অহং-সর্বস্ব’, ‘খিটখিটে’, ‘প্রচারমুখী’ ইত্যাদি অপবাদ। যেমন ওয়ার্ড ইনস্টিটিউশন নিয়ে রাজেন্দ্রলাল ও বিদ্যাসাগরের মধ্যে মতবিরোধ ঘটে। হয়তো তাই করুণাসাগর ঈশ্বরচন্দ্র রাজেন্দ্রলালের সংস্কৃত ভাষাজ্ঞান সম্পর্কে বেশ কিছু কাছের মানুষের কাছে কটাক্ষ করে গেছেন!

‘বিজ্ঞেন্দ্র রাজেন্দ্রলাল বিজ্ঞান-আধার,/ বিলাত পর্যন্ত খ্যাতি হয়েছে বিস্তার’— লিখেছিলেন এক কবি। পাশ্চাত্যের একাধিক বিদ্যাপ্রতিষ্ঠানের সদস্য ছিলেন, পেয়েছেন সম্মান, স্বীকৃতি। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলডি উপাধি-প্রাপক এই বিদ্যোৎসাহী সম্পর্কে জার্মান পণ্ডিত ম্যাক্সমুলার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন, বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেছেন রাজেন্দ্রলালের ইংরেজি জ্ঞানের এবং তর্কবিদ্যায় পারদর্শিতার কথা। তবে ইংরেজি ভাষায় জ্ঞানচর্চার ফলে বঙ্গদেশে তাঁর জনপ্রিয়তা ইউরোপীয় পরিচিতির ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি। এ কারণে তাঁর পাণ্ডিত্য নিয়ে বাঙালি বিদ্বজ্জনের মনে দ্বিধা ছিল। অশ্রদ্ধাসূচক ‘সবজান্তা’ বা ‘অহং বড়ই বেশি’ ইত্যাদি কটাক্ষ করে গেছেন সে কালের নামী মানুষেরা। এই সব নেতিবাচক মন্তব্য ম্লান হয়ে গেছে রবীন্দ্রনাথের একটি মন্তব্যে: “রাজেন্দ্রলাল মিত্র সব্যসাচী ছিলেন।”

মানিকতলার বাগানে, যেখানে কোর্ট অব ওয়ার্ডস ছিল, সেখানে তরুণ রবীন্দ্রনাথ যখন-তখন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যেতেন। অধিকাংশ দিন সকালে গিয়ে তিনি দেখতেন, রাজেনবাবু লেখাপড়ার কাজে মগ্ন হয়ে আছেন। ঠাকুরবাড়ির এই তরুণ কবিকে দেখামাত্র তিনি কাজ রেখে দিয়ে কথাবার্তা আরম্ভ করে দিতেন। ভবিষ্যতের বিশ্বকবি সে দিন এই বহুবিদ্যা-বিশারদের কাছ থেকে অজস্র নতুন বিষয়ে জ্ঞান আহরণ করেছেন, পরে তাঁর গ্রন্থাদি থেকে কাহিনিসূত্র নিয়ে ‘অচলায়তন’-এর মতো নাটক, অজস্র কবিতা, গদ্য রচনা করেছেন। কী আন্তরিকতায় রবীন্দ্রনাথ সেই বিরলপ্রতিভা পণ্ডিতের চরিত্র এঁকেছেন ‘জীবনস্মৃতি’ গ্রন্থে তা বিশেষ উল্লেখ্য: “কেবল তিনি মননশীল লেখক ছিলেন ইহাই তাঁহার প্রধান গৌরব নহে। তাঁহার মূর্তিতেই তাঁহার মনুষ্যত্ব যেন প্রত্যক্ষ হইত। আমার মত অর্বাচীনকেও তিনি কিছুমাত্র অবজ্ঞা না করিয়া, ভারি একটি দাক্ষিণ্যের সহিত আমার সঙ্গেও বড়ো বড়ো বিষয়ে আলাপ করিতেন...।”

রাজেন্দ্রলাল রোজনামচা লিখতেন। সেখানে ‘১৮২২ সালে ফিবরেওরি মাসস্য ষোড়শ দিবসে’ বলে নিজের জন্মসন-সময় ইত্যাদি উল্লেখ করেছেন। আগামী ১৬ তারিখে দুশো বছর পূর্ণ করবেন তিনি। ভারতবিদ্যা নামক বহুত্বব্যঞ্জক অন্তহীন বিষয়টি একুশ শতকে এসে হিন্দুত্বের সঙ্কীর্ণ গোশালায় দমবন্ধ হয়ে মরছে, সেই মারণভাইরাসে আক্রান্ত আমরা রাজা রাজেন্দ্রলালের মিত্রের দ্বিশতবর্ষ মনে রাখব, এমন ভাবনা আশ্চর্য বোধ হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement