ছবি: দীপঙ্কর ভৌমিক।
থ
রথর করে কাঁপছে রুদ্রর মুখের পেশি। মিনিটখানেক বাদে নিজেকে সামলে নিয়ে সোজা চোখে ডাক্তারের দিকে তাকাল রুদ্র।
“হাউ লং দ্যাট পুয়োর গার্ল উইল সারভাইভ, ডক্টর?”
“ইট মে বি থ্রি ডেজ়, অর থ্রি উইকস,” এক রাশ হতাশা ঝরে পড়ল ডাক্তারের গলায়।
রুদ্র ফের প্রশ্ন করল, “মেয়েটা বলছিল কারা নাকি ওর গায়ের চামড়া তুলে নিয়েছে। এ ব্যাপারে আপনি কিছু বলতে পারেন স্যর?”
জবাবে ভুরু কুঁচকে রুদ্রর দিকে তাকালেন ডাক্তারবাবু, “আমারও এ রকম একটা সন্দেহ হয়েছিল। আর সে জন্যই মেয়েটার বয়স বুঝতে কয়েকটা বোন টেস্ট করিয়েছিলাম আমি। টেস্ট রেজ়াল্ট বলছে ওর বয়স ষোলো থেকে আঠেরোর মধ্যে। অথচ সে তুলনায় মেয়েটার স্কিন অসম্ভব খসখসে। যেন আশি-নব্বই বছরের বৃদ্ধা! এক বার নয়, বার বার এ রকম করা হলে তবেই কারও স্কিন এই কন্ডিশনে পৌঁছতে পারে। তবে এ ব্যাপারে আরও দু’-একটা টেস্ট করেই নিশ্চিত হতে পারব।”
“কত ক্ষণ লাগবে আপনার রিপোর্টগুলো পেতে?” রুদ্রর প্রশ্নের জবাবে মুচকি হাসলেন ডক্টর পত্রনবীশ, “এক জন সরকারী কর্মচারী হিসেবে আপনি তো সিস্টেমের ঢিলেঢালা ব্যাপারটা জানেনই অফিসার। আমি নিজে খুব তাড়া দিয়ে করালেও রিপোর্ট পেতে পেতে কাল সন্ধে।”
“মেয়েটার সঙ্গে কেন এটা করা হয়েছে বলতে পারেন?” পাশ থেকে প্রশ্নটা ছুড়ে দিল সন্তোষী।
জবাবে হতাশা ডাক্তারের গলায়, “দেখুন, চামড়া তোলা হয়েছে কি না সেটা হয়তো টেস্ট রিপোর্টগুলো হাতে পেলে বলতে পারব। কিন্তু কেন কাজটা করা হয়েছে অথবা এর পেছনে মোটিভ কী, এর উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।”
“থ্যাঙ্ক ইউ ডক্টর!” চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াল রুদ্র, “আপনার পারমিশন নিয়ে কালকে মেয়েটার সঙ্গে দু’চারটে কথা বলতে চাই আমরা। ওর স্টেটমেন্টের উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে।”
“সেটা ডিপেন্ড করছে পেশেন্টের কন্ডিশনের ওপর,” গম্ভীর শোনাল ডাক্তারের গলা।
“অবশ্যই, এ ব্যাপারে আপনার গ্রিন সিগন্যাল পেলেই প্রসিড করব আমরা। গুড নাইট ডক্টর।”
চেম্বার থেকে বেরিয়ে এল রুদ্র। পিছনে পিছনে বাকি সবাই। করিডর ধরে হাঁটতে হাঁটতে নিচু গলায় কারও সঙ্গে ফোনে দু’-চারটে কথা বলে নিল রুদ্র। সামনে লিফ্ট। লম্বা লাইন। দ্রুতপায়ে সিঁড়ি বেয়ে নামতে লাগল রুদ্র।
পার্কিং লটে দাঁড় করানো সুমোটার লুকিং গ্লাসে স্যরদের এগিয়ে আসতে দেখল তারক। থু থু করে গুটখার পিক ফেলে সোজা হয়ে বসল সিটে। এসে ঝপাঝপ দরজা খুলে গাড়িতে যে যার সিটে বসে পড়ল সবাই।
“কোথায় যাব স্যর?” প্রশ্ন করল তারক।
“ফরেনসিক অফিস,” সিটবেল্ট বাঁধতে বাঁধতে গম্ভীর গলায় বলল রুদ্র।
পার্ক সার্কাসে চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজের ঠিক উল্টো দিকে ফরেনসিক দফতর। বিশাল দরজাটার সামনে এসে ব্রেক কষল ডি ডি-র সুমো। দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে ভিতরে ঢুকে গেল সবাই। দরজার এক পাশে নিয়ে এসে গাড়িটাকে দাঁড় করিয়ে দিল তারক। রিমোটের নব টিপে সাউন্ড সিস্টেম চালু করল। রফিসাহেবের গলা, ‘দিওয়ানা হুয়া বাদল…’। রফিসাহেব তারকের ভগবান। ফের পকেট থেকে বেরিয়ে আসে দিনের বারো কি তেরো নম্বর গুটখার প্যাকেট। ছিঁড়ে মুখে ফেলে সুরের আমেজে চোখ বুজে মাথা দোলাতে লাগল তারক।
দোতলার ছোট ঘরটায় আসবাবপত্র বলতে বড় একটা টেবিল আর গোটা দুয়েক স্টিলের আলমারি। টেবিলের ওপর দু’পাশে এক গাদা ফাইলপত্তর আর মাঝখানে একটা ঢাউস স্ক্রিনের ডেস্কটপ। টেবিলে ঝুঁকে রয়েছেন ডক্টর শক্তিপদ চট্টরাজ। চোখে হাই পাওয়ার চশমা। এক মাথা অবিন্যস্ত কাঁচাপাকা চুল। ঈষৎ খেপাটে চোখের দৃষ্টি। সেই দৃষ্টি আপাতত গেঁথে রয়েছে কম্পিউটারের স্ক্রিনে। ডক্টর চট্টরাজ। প্রবাদপ্রতিম অপরাধবিজ্ঞানী। দেশ-বিদেশ মিলিয়ে কমপক্ষে হাজার তিরিশেক মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট ক্রাইমের কেস হিস্ট্রি ফাইলবন্দি হয়ে রয়েছে ওঁর ডেস্কটপ আর দুটো আলমারিতে। গোটা ডিপার্টমেন্টে ডক্টর চট্টরাজের পরিচিতি ‘গড অব ক্রিমিনোলজি’ বা ‘এনসাইক্লোপিডিয়া অব ক্রিমিনোলজি’ নামে। সারা পৃথিবীর পুলিশ-সহ আরও অনেক নিরাপত্তা বিভাগ প্রায়ই আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে যায় ওঁকে, তাদের বিভিন্ন সভা-সেমিনারে বক্তব্য রাখার জন্য। একই সঙ্গে রূঢ়ভাষী, দুর্ব্যবহারকারী এবং খটখটে স্পষ্টবাদী বলে কিঞ্চিৎ দুর্নামও রয়েছে গোটা দফতরে। ফলে তাদের মধ্যে অনেকেই আড়ালে তাঁকে ‘শক্তিক্ষ্যাপা’ বলে ডেকে থাকে। তবে ওপরমহল মানুষটার কদর জানে। আর সে কারণেই অবসরের বেশ কয়েক বছর বাদেও বলতে গেলে খানিকটা জোরজার করেই এক্সটেনশনে রেখে দিয়েছে। কোনও অজ্ঞাত কারণে রুদ্রকে বেশ কিছুটা পছন্দই করেন ডক্টর চট্টরাজ।
ঢোকার আগে দরজায় নক করল রুদ্র। ডেস্কটপের স্ক্রিন থেকে ঘাড় ঘুরিয়ে রুদ্রকে দেখামাত্র খোলা গলায় হেসে উঠলেন শক্তিপদ, “এসো এসো অভিমন্যু। তোমার ফিরে আসার খবরটা পেয়েছি। আবার সেই চক্রব্যূহের পাঁকে এসে ঢুকলে? বলো, তোমার জন্য আমি কী করতে পারি।”
“খুব সমস্যায় পড়ে আপনার কাছে এসেছি স্যর,” সমস্ত ঘটনাটা খুলে বলল রুদ্র। বলা শেষ হলে চকচকে চোখে রুদ্রর দিকে চেয়ে হাসলেন ডক্টর চট্টরাজ। উঠে দাঁড়ালেন চেয়ার ছেড়ে।
“দাঁড়াও, সবার জন্য আগে কফি করে নিয়ে আসি। তার পর কথা হবে।”
ঘরের এক কোণে জানলার তাকে রাখা কফি তৈরির পট। পরিমাণমতো জল, কফি, চিনি মিশিয়ে পটের সুইচ টিপলেন শক্তিপদ। কফি তৈরি মিনিটকয়েকের মধ্যে।
“ইফ ইউ ডোন্ট মাইন্ড স্যর, আমি কি সবাইকে কফিটা সার্ভ করে দিতে পারি?” প্রশ্ন করল সন্তোষী।
“ইটস মাই প্লেজ়ার, বেবি!” ফের উদাত্ত কণ্ঠে হেসে উঠলেন চট্টরাজ।
কফির কাপে প্রথম চুমুক দিয়ে রুদ্রর দিকে তাকালেন তুখোড় অপরাধবিজ্ঞানী, “আজ থেকে বছরদুয়েক আগে মুম্বই পুলিশের ইনভিটেশনে একটা ওয়ার্কশপ অ্যাটেন্ড করতে গিয়েছিলাম আমি। ওদের ওখানকার ডি ডি, আই বি, এস বি, ক্রাইম ব্রাঞ্চ, সব ডিপার্টমেন্টের রিপ্রেজ়েন্টেটিভরা ছিল সেই ওয়ার্কশপে। সেখানে ডিটেলে আলোচনা হয়েছিল ব্যাপারটা নিয়ে। ইট’স নাথিং বাট আ নটোরিয়াস কেস অব স্কিন ট্র্যাফিকিং।”
শোনামাত্র রুদ্রর মাথার মধ্যে ৪৪০ ভোল্টের বিদ্যুৎতরঙ্গ খেলে গেল যেন! মেয়েটার বয়ান অনুযায়ী ওকেও তো মুম্বইয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মুখে কিছু না বলে ও তাকিয়ে রইল ডক্টর চট্টরাজের দিকে। বলে চলেছেন ডক্টর চট্টরাজ, “এই স্পেশ্যাল টাইপ অব ক্রাইমটাকে মুম্বই পুলিশের নিজস্ব ভাষায় বলা হয়, ‘চামড়া তস্করি’। এর মেন ভিক্টিম নেপালি মেয়েরা। স্পেশালি মাইনর গার্লস। কারণ ওদের সফট, টেন্ডার অ্যান্ড সুপার্বলি গ্লোয়িং স্কিন। ফলে খুব সহজেই পাচারকারীদের নিশানায় পড়ে এরা।”
কফির কাপে একটা বড় চুমুক দিয়ে ফের শুরু করলেন শক্তিপদ, “একটা নাবালিকা নেপালি মেয়েকে কোনও রেড লাইট এরিয়ায় বিক্রি করে যে দাম পাওয়া যাবে, তার বহুগুণ পাওয়া যাবে মেয়েটাকে এই কারবারের জন্য বিক্রি করলে। কারণ স্কিন গ্র্যাফটিং-এর মাধ্যমে এই চামড়া বসানো হয় অন্য মহিলাদের শরীরে। তাদের ত্বকের জেল্লা বাড়ানোর জন্য। কিছু করাপ্টেড ডক্টরস, মোটা টাকার বিনিময়ে করে এই কাজটা। মেনলি বিশাল ধনী পরিবারের সব মহিলা, হাউসওয়াইভস, ফিল্মস্টারস, মডেলস, দোজ় হু হ্যাভ ডিপ পকেটস, এরাই এই ব্যবসার মেন কাস্টমার। এদের মধ্যে তাদেরই এই ঝোঁকটা বেশি যাদের বয়স ঢলতে শুরু করে দিয়েছে এবং চেহারার সেই জৌলুস আর নেই। আগেই বলেছি, এদের হাতে পয়সার অভাব নেই, ফলে চাহিদার জিনিসটার জন্য আকাশছোঁয়া দাম কবুল করে বসছে ন্যায়-অন্যায় বিচার না করে। সোসাইটির যে ক্লাসটার কথা এখানে বলছি তাদের মধ্যে সবাই নিশ্চয়ই এ রকম নয়, তবে একটা ছোট অংশের মধ্যেও এই প্রবণতাটা থাকলেও ব্যাপারটা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এ ক্ষেত্রে আর একটা ব্যাপারও রাদার ডেঞ্জারাস। এ ছাড়াও পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর বহু রিসার্চ ল্যাবরেটরি অনেক টাকা দাম দিয়ে গবেষণার জন্য বেআইনি পথে এই চামড়া কেনে। ছোট এক স্কোয়ার ইঞ্চি স্কিনের দাম সেখানে ভারতীয় টাকায় দেড় লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়। ফলে লাগামছাড়া মুনাফার লোভে মেয়েগুলোর শরীর থেকে কখনও কখনও একাধিক বার স্কিন রিমুভ করা হয় বলেও শোনা গেছে। তার পর মেয়েটি অসুস্থ অথবা তার স্কিন ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়লে বেচে দেওয়া হয় সস্তার রেড লাইট এরিয়ায়।”
ডক্টর পত্রনবীশের কথা শেষ হতে চাপা আর্তনাদ বেরল সন্তোষীর মুখ থেকে, “দ্যাট পুওর গার্ল!”
“কে অথবা কারা এর সঙ্গে জড়িত, সে ব্যাপারে কিছু জানা গেছিল কি?” মিনিটখানেকের দমচাপা নিস্তব্ধতা ভেঙে প্রশ্ন করল রুদ্র।
“চারটে মাইনর নেপালি মেয়েসমেত পিথোরাগড়ের দু’জন এজেন্ট ধরা পড়েছিল মুম্বই পুলিশের হাতে। কড়া ইন্টেরোগেশনে তারা কনফেস করেছিল, ইল্লিগ্যাল স্কিন ট্রেডিং-এর জন্যই তারা মেয়েগুলোকে মুম্বইয়ে নিয়ে এসেছে। জেরায় কিংপিন হিসেবে ওখানকার মোস্ট ডেঞ্জারাস একটা গ্যাং-এর নাম উঠে এসেছিল। দলের দু’-চারটে চুনোপুঁটি ধরা পড়লেও চাঁইরা সব পালিয়েছিল দুবাই, ব্যাঙ্কক, মালয়েশিয়া, সাউথ আফ্রিকা। যারা ধরা পড়েছিল, প্রমাণের অভাবে তারাও সবাই ছাড়া পেয়ে যায় মাসছয়েক বাদে।” গভীর হতাশা ঝরে পড়ল শক্তিপদর গলা থেকে!
দু’হাত দিয়ে ডক্টর পত্রনবীশের হাতদুটো জড়িয়ে ধরল রুদ্র, “ধন্যবাদ শব্দটা আপনার জন্য খুব ছোট স্যর। তবে আপনাকে কথা দিচ্ছি, ইতিহাসটা আর এক রকম হবে না এ বার, অন্ধকারের সপ্তরথীরা যতই ক্ষমতাবান আর শক্তিশালী হোক না কেন, অভিমন্যু এ বার চক্রব্যূহটাকে ভাঙবেই।”
কথা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সটান উঠে দাঁড়িয়ে রুদ্রর মাথায় হাত রাখলেন শক্তিপদ, “গড ব্লেস ইউ মাই বয়! তবে আমার ধারণা যদি সত্যি হয়, তা হলে এখানকার তুলনায় আরও ভয়ঙ্কর এক আন্ডারওয়ার্ল্ডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে যাচ্ছ তুমি। মুম্বইয়ের পুলিশ ডিপার্টমেন্টে বিভিন্ন ব্রাঞ্চে বড়কর্তাদের সঙ্গে চেনাশুনো আছে আমার। জানি, টপমোস্ট লেভেলের ব্যাকআপ থাকবে তোমার পেছনে। তবুও প্রয়োজন হলেই জানিয়ো, উইদাউট এনি হেজ়িটেশন।”
“শিয়োর স্যার,” বলে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াল রুদ্রও, “কিন্তু তার আগে কলকাতায় কানটা ধরে টান মারতে হবে। তবেই হয়তো আরব সাগরের পাড়ে মাথাটা ভেসে উঠবে।”
“অল অব মাই বেস্ট উইশেস উইথ ইউ, রুদ্র! হসপিটালের ডাক্তারবাবু কী রিপোর্ট দেন জানিয়ো।”
“পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ করে দেব আপনাকে, গুড নাইট স্যর,” বলে ঘর থেকে বেরিয়ে এল রুদ্র।
রাত সাড়ে এগারোটা। বালিদ্বীপের সমুদ্র লাগোয়া সাত তারা রিসর্টটার সুপার লাক্সারি স্যুটের মখমলি বিছানায় উদোম শুয়ে থেকে থেকে মাপা, নকল শীৎকার ছাড়ছিল রিচা মিরচন্দানি। মনে হচ্ছিল ওর শরীরের ওপর একটা মাকড়সার মতো খলবল করে ঘুরে বেড়াচ্ছে মনুভাইয়ের শরীরটা। মুখে অ্যালকোহল আর ডিসপেপসিয়া রোগজনিত বীভৎস দুর্গন্ধ! বহুমূল্য পারফিউম আর মাউথওয়াশের সুগন্ধও ঢাকতে পারছিল না ভয়ঙ্কর সেই পূতিগন্ধকে। মনে মনে কুৎসিত গাল দিচ্ছিল রিচা, ‘শালে না-মরদ, ইম্পোটেন্ট! তেরি মা কি…’
মিনিট তিনেকের মধ্যে রিচার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিছানার এক পাশে এলিয়ে পড়ল মনুভাইয়ের শরীরটা। মিনিটখানেক বাদেই নাক ডাকার ভোঁস ভোঁস আওয়াজ।