দু’জনেই প্রায় একই সময়ে অভিনয়জগতে পা রাখেন। দু’জনেই তারকা-কন্যা। পেশাগত জীবন নিয়ে কোনও দিনই কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি দুই অভিনেত্রীর। বরং একে অপরের প্রিয় বান্ধবী ছিলেন তাঁরা। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কাটাছেঁড়াই নাকি বন্ধুত্বে চিড় ধরিয়েছিল করিনা কপূর খান এবং এষা দেওলের। নেপথ্যে ছিলেন এক তারকা-পুত্র।
কপূর পরিবারের কন্যা করিনা। ধর্মেন্দ্র এবং হেমা মালিনীর কন্যা এষা। তারকা পরিবারের কন্যা হওয়ার কারণে তাঁদের আলাপ হলেও বন্ধুত্ব হয় সহপাঠী হওয়ার সুবাদে। একই স্কুলে পড়তেন দু’জনে। সেই সূত্রে বন্ধুত্ব আরও গভীর হয় তাঁদের।
কানাঘুষো শোনা যায়, একে অপরকে নাকি ব্যক্তিগত জীবনের সব কথা বলতেন করিনা এবং এষা। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে করিনা জানিয়েওছিলেন যে, তাঁদের বন্ধুত্ব দেখে নাকি অনেকেই হিংসা করতেন।
সাক্ষাৎকারে করিনা বলেছিলেন, ‘‘আমার চার থেকে পাঁচ জন বন্ধু রয়েছে। কর্ণ জোহর এবং মনীশ মলহোত্র আমার বন্ধু। অভিষেক বচ্চন এবং অক্ষয় কুমারকেও আমার ভাল লাগে। আমি সকলের সঙ্গেই ভাল থাকি। কিন্তু আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু হল এষা। ওকে আমি ছোট বোনের মতো দেখি। ওর স্বভাব আমার মতোই। আমাদের পছন্দ-অপছন্দ সব এক। কী করা উচিত, কী করা উচিত নয়— এ সব বিষয়ে আমি ওকে অনেক জ্ঞান দিই। আমাদের দু’জনের বন্ধুত্ব দেখে সকলে হিংসা করে তা নিয়ে আমি নিশ্চিত।’’
দুই তারকা-কন্যা এত ভাল বন্ধু, তবুও এষার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনে উপস্থিত ছিলেন না করিনা। কিন্তু অভিনেত্রীর অনুপস্থিতির কারণ কী? কানাঘুষো শোনা যায়, এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন বলি অভিনেতা জায়েদ খান। তিনি বলি অভিনেতা সঞ্জয় খানের পুত্র।
জায়েদ এবং এষা একই স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। দুই তারকার বন্ধুত্ব খুব পোক্ত। কিন্তু বলিপাড়ার অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায়, জায়েদের সঙ্গে নাকি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন এষা। সেই কারণেই করিনার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তাঁর।
কানাঘুষো শোনা যায়, এষা যে জায়েদের সঙ্গে মিশছেন তা পছন্দ করতেন না হেমা। কী ভাবে কন্যাকে সেই সম্পর্ক থেকে সরিয়ে আনবেন তা বুঝতে পারছিলেন না তিনি। তাই করিনার কাছে সাহায্য চান হেমা। তিনি ভাবেন, প্রিয় বন্ধু বোঝালে হয়তো জায়েদের সঙ্গে মেলামেশা কমিয়ে দেবেন এষা। কিন্তু ঘটল এর বিপরীত।
এষার এক ঘনিষ্ঠ দাবি করেন, জায়েদকে ঘিরে অশান্তি শুরু হয় এষা এবং করিনার। এমনকি করিনাকে নাকি এষা বলে বসেন, ‘‘অন্তত আমি কোনও বিবাহিত পুরুষের পিছনে ছুটে সময় নষ্ট করছি না।’’এষার কথায় আঘাত পান করিনা।
করিনা এবং এষার ঝগড়া মেটাতে এগিয়ে আসেন বলি অভিনেত্রী অমৃতা অরোরা। এষার সঙ্গে দেখা করে করিনার পক্ষ নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন অমৃতা। এই ঘটনায় আরও রেগে যান এষা।
কানাঘুষো শোনা যায়, অমৃতাকে নাকি চড়ও মেরেছিলেন এষা। এই বিষয়ে জানার পর এষার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন করিনা। তার পর থেকে অমৃতার সঙ্গে করিনার বন্ধুত্ব আরও গভীর হয়।
বলিপাড়ার একাংশের দাবি, জায়েদের প্রেমে এষা এতটাই ডুবে গিয়েছিলেন যে করিনার মতো প্রিয় বান্ধবীকেও হারিয়ে ফেলেন তিনি। কিন্তু বলিপাড়ার একাংশের মতে, করিনা এবং এষার বন্ধুত্বে চিড় ধরানোর নেপথ্যে রয়েছেন এক বলি অভিনেতার প্রাক্তন স্ত্রী।
তিনি বলি অভিনেতা হৃতিক রোশনের প্রাক্তন স্ত্রী সুজ়ান খান। সুজ়ান সম্পর্কে জায়েদের দিদি তিনি। সেই সূত্রে এষার সঙ্গে তাঁর পরিচয়।
কানাঘুষো শোনা যায়, হৃতিকের সঙ্গে নাকি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন করিনা। সেই সম্পর্ক বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। তবে করিনার উপর সেই কারণে রাগ জমেছিল সুজ়ানের। প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য নাকি করিনার নামে এষার কানভারী করতে থাকেন তিনি। সুজ়ানের কথার চালে বয়ে গিয়েই নাকি করিনার উপর আরও রাগারাগি করতেন এষা।
২০১২ সালে ভরত তখতানিকে বিয়ে করেন এষা। কিন্তু বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি করিনাকে। বলিপাড়ায় গুঞ্জন ছড়াতে থাকে যে, বন্ধুত্বে চিড় ধরার কারণে অতিথিদের তালিকা থেকে ইচ্ছাকৃত ভাবে বাদ রাখা হয়েছে করিনাকে।
এষার বিয়ের অনুষ্ঠানে কেন যেতে পারেননি সেই বিষয়ে প্রশ্ন করলে করিনা এক পুরনো সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ‘হিরোইন’ ছবির শুটিংয়ের জন্য তিনি ব্যস্ত ছিলেন। এষা তাঁকে নিমন্ত্রণ করেছিলেন। কিন্তু তাইল্যান্ডে থাকার কারণে তিনি হাজির থাকতে পারেননি।