United States of Kailasa

কোথায় রয়েছে নিত্যানন্দের কৈলাস? কেন স্বীকৃতি পাচ্ছে না ধর্ষণে অভিযুক্ত স্বঘোষিত গুরুর দেশ?

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইকুয়েডরের উপকূলে একটি দ্বীপ কিনেছিলেন নিত্যানন্দ। আর সেখানেই নাকি আটঘাট বেঁধে আস্ত একটি দেশ গড়ে ফেলেছেন স্বঘোষিত গুরু।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৩ ০৮:২৫
Share:
০১ ২০

নিজে দেশ ‘তৈরি’ করেছেন বিতর্কিত স্বঘোষিত আধ্যাত্মিক গুরু নিত্যানন্দ। নাম ‘ইউনাইটেড স্টেটস অফ কৈলাস’ (ইউএসকে)। সেই দেশেরই প্রতিনিধিত্ব করতে গত মাসে রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রতিনিধি দল পাঠান ভারত থেকে ফেরার এই আধ্যাত্মিক গুরু।

০২ ২০

ধর্ষণ এবং অপহরণের অভিযোগে অভিযুক্ত নিত্যানন্দ ২০১৯ সালে ভারত থেকে পালিয়ে যান। অনেক দিন খবর ছিল না তাঁর। এর এক বছর পরে হঠাৎই আবার উদয় হয়ে দাবি করেন, নিজে একটি আলাদা দেশ তৈরি করেছেন তিনি। যে দেশে সকলেই নাকি হিন্দু ধর্মাবলম্বী।

Advertisement
০৩ ২০

যদিও এই দেশটি কোথায় তা কেউ জানে না। অনুরাগীরা অবশ্য মাঝেমধ্যেই নিত্যানন্দের সেই দেশের উন্নয়নের খতিয়ান সমাজমাধ্যমে এসে দিয়ে যান। পাশাপাশি কৈলাসের প্রতিনিধিরাও নিয়মিত সারা বিশ্বের কূটনীতিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ছবি এবং ভিডিয়ো পোস্ট করেন।

০৪ ২০

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইকুয়েডরের উপকূলে একটি দ্বীপ কিনেছিলেন নিত্যানন্দ। সেখানেই নাকি আটঘাট বেঁধে আস্ত একটি দেশ গড়ে ফেলেছেন এই স্বঘোষিত গুরু।

০৫ ২০

যদিও এখনও পর্যন্ত কৈলাসের কোনও ছবি প্রকাশ্যে আসেনি। মনে করা হয়, নিত্যানন্দের আঁটসাঁট নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণেই এখনও পর্যন্ত কেউ সেই দেশের ছবি তুলে আনতে পারেননি। আবার অনেকে মনে করেন যে, আসলে নিত্যানন্দের কৈলাস রয়েছে জনজীবন থেকে অনেক দূরে, লোকচক্ষুর আড়ালে। আর সেই কারণে নাকি সেখানে এখনও পর্যন্ত বাইরের কেউ গিয়ে পৌঁছতেই পারেননি।

০৬ ২০

বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ইকুয়েডরের কাছে ছোটখাট দ্বীপে কৈলাস গড়েছেন নিত্যানন্দ। যদিও ইকুয়েডর সরকার সে সময় বিবিসিকে বলেছিল যে, ইকুয়েডর বা এর আশাপাশে নিত্যানন্দের দেশের অস্তিত্ব নেই।

০৭ ২০

কৈলাস পর্বতের নামানুসারে নিজের দেশের নাম কৈলাস রেখেছেন বলে দাবি করেছেন নিত্যানন্দ। হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, কৈলাসে বাস করেন শিব। কৈলাসকে অন্যতম পবিত্র স্থান হিসাবেও গণ্য করা হয়। আর সেই কারণেই নিত্যানন্দ দেশের নাম কৈলাস রেখেছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

০৮ ২০

কাল্পনিক দেশের ওয়েবসাইট অনুসারে, কানাডা, আমেরিকা এবং অন্যান্য দেশের হিন্দু শৈব সম্প্রদায়ের সদস্যরা এই কৈলাস তৈরি করেছেন। নেতৃত্বে রয়েছেন নিত্যানন্দ। তবে কৈলাস সকলের জন্যই একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল বলে ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে।

০৯ ২০

ওয়েবাইটে আরও উল্লেখ রয়েছে, ‘নিষ্ঠাবান বা নির্যাতিত’ হিন্দুরা কৈলাসে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করতে পারেন এবং নিজেদের আধ্যাত্মিকতা, শিল্প, সংস্কৃতি নিয়ে চর্চা করতে পারবেন।

১০ ২০

কৈলাসকে ‘আন্তর্জাতিক হিন্দু প্রবাসীদের আবাসস্থল এবং আশ্রয়স্থল’ বলে উল্লেখ করেন অনুরাগীরা।

১১ ২০

নিত্যানন্দের দেশের নিজস্ব পতাকা, সংবিধান, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, পাসপোর্ট এবং প্রতীক রয়েছে বলেও কৈলাসের অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডলে দাবি করা হয়েছে৷

১২ ২০

বৃহস্পতিবার, কৈলাসের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে বিশ্ববাসীকে সে দেশের ই-নাগরিকত্বের জন্য, ই-ভিসা নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

১৩ ২০

অন্যান্য দেশের মতো, কৈলাসেও ট্রেজ়ারি, বাণিজ্য, সার্বভৌম, আবাসন, মানবসেবা এবং আরও অনেক দফতর রয়েছে বলে ওয়েবসাইটে উল্লেখ রয়েছে।

১৪ ২০

কিন্তু কৈলাস কি আদৌ একটি স্বীকৃত দেশ? একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশের কাছে যা যা থাকার দরকার তা কি রয়েছে নিত্যানন্দের কাছে?

১৫ ২০

বার বার আবেদন জানানো সত্ত্বেও কৈলাসকে স্বীকৃতি দেয়নি রাষ্ট্রপুঞ্জ। বার বার বৈঠক করেও কোনও লাভ হয়নি।

১৬ ২০

১৯৩৩ সালের মন্টেভিডিয়ো কনভেনশন অনুসারে, একটি অঞ্চলকে তখনই দেশ বলা যায়, যদি এটির একটি স্থায়ী জনসংখ্যা থাকে, সরকার থাকে এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার ক্ষমতা থাকে। তখনই অনুমোদন দেয় রাষ্ট্রপুঞ্জ।

১৭ ২০

রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বীকৃতি পেলে তবে বিশ্বব্যাঙ্ক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলেরও অনুমোদন পায় কোনও দেশ।

১৮ ২০

রাষ্ট্রপুঞ্জের পর্যবেক্ষণ, এর একটি মাপকাঠিতেও জায়গা পাবে না কৈলাস। আর সেই কারণে কৈলাসকে দেশ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া যায় না।

১৯ ২০

দেশের তকমা না পেলেও মাইক্রোনেশন বা ক্ষুদ্র দেশের তকমা পেতে পারে কৈলাস। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার মতে, ‘মাইক্রোনেশন’ হল সেই এলাকা, যা রাষ্ট্রপুঞ্জের অনুমোদন না পেয়েও নিজেদের স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বলে দাবি করে।

২০ ২০

ইন্ডিপেন্ডেন্টের মতে, ২০১৯ সালে বিশ্বে প্রায় ৮০টি মাইক্রোনেশন ছিল। ১৯৮০-এর দশকে আর এক ভারতীয় আধ্যাত্মিক গুরু রজনীশ আমেরিকার ওরেগনে রজনীশপুরম নামে মাইক্রোনেশন শুরু করেন। রজনীশপুরমে নিজস্ব পুলিশ, দমকল বিভাগ এবং পরিবহণ ব্যবস্থাও চালু করেছিলেন রজনীশ।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement