নাইট ক্লাবের কথা তো আমরা অনেকেই শুনেছি। কিন্তু সেক্স ক্লাব? নতুন লাগছে? এ এমন এক ক্লাব যেখানে উদ্দাম যৌনতায় মেতে ওঠেন ওই ক্লাবে প্রবেশকারী মানুষেরা। কিন্তু আর কী কী হয় রুদ্ধদ্বার সেক্স ক্লাবের অন্দরে? জানালেন বিশ্বের অন্যতম দামি এবং জনপ্রিয় সেক্স ক্লাবের কর্মী। রুদ্ধদ্বার ক্লাবের অন্দরের কাহিনি এই প্রথম প্রকাশ্যে এল।
হ্যালি গ্রেস একজন মডেল এবং পোশাক শিল্পী। তবে তিনি সেক্স ক্লাবের এক জন মনোরঞ্জন কর্মী হিসাবেও কাজ করছেন। ক্লাবে আসা মানুষদের মনোরঞ্জন করতে তিনি বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছেন।
পৃথিবী জুড়ে থাকা সেক্স ক্লাবগুলির মধ্যে অন্যতম নিউ ইয়র্কের এসএনসিটিএম। সেখানেই কর্মরত হ্যালি।
নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা হ্যালির বয়স ২৬। এসএনসিটিএম-এ বন্ধ দরজার আড়ালে কী ঘটে, সেই সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমে বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছেন হ্যালি।
হ্যালি জানান, এসএনসিটিএম-এ তাঁর শো হয় অভিব্যক্তিতে ভরা এবং কামোদ্দীপক। দর্শকদের বাস্তব থেকে বার করে উন্মাদনায় ভরা কল্পনার জগতে প্রবেশ করানোই হ্যালির কাজ।
হ্যালি বলেন, ‘‘আমি যখন এসএনসিটিএম-এর দর্শকদের জন্য পারফর্ম করি তখন আমি আমার করা চরিত্রে বাঁচি। আমি বিভিন্ন উপায়ে নিজের প্রতিটি পারফরম্যান্স উপভোগ করি।’’
হ্যালি যোগ করেন, ‘‘সাম্প্রতিক কালে আমার প্রিয় যৌনক্রিয়াগুলির মধ্যে একটি হল, বেহালাবাদকের সুরে সুরে হাত বাঁধা অবস্থায় দর্শকদের মনোরঞ্জন করা।’’
হ্যালির দাবি, ‘‘আমার কাজটি সাধারণত সারা রাত জুড়ে তিনটি পর্যায়ে হয়। আমি প্রায় প্রতিটি সন্ধ্যাতেই দর্শকদের মধ্যে স্বল্পবসনা হয়ে নৃত্য পরিবেশন করি। তার পরে রাত বাড়লে আমার সঙ্গীর সঙ্গে মূল মঞ্চে বিভিন্ন সৃজনশীল যৌনক্রিয়া দেখাই৷ দর্শকরা সেই দৃশ্য তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করত।’’
প্রতি সন্ধ্যাতেই শোয়ের বিষয়বস্তু আলাদা আলাদা হয় বলেও জানিয়েছেন হ্যালি। এই ‘খেলা’ দর্শকদের বাস্তবের দুনিয়া থেকে নিয়ে গিয়ে কল্পনার জগতে প্রবেশ করাতে সাহায্য করে বলেও হ্যালি উল্লেখ করেছেন।
যে কেউ কি এই সেক্স ক্লাবগুলিতে প্রবেশাধিকার পাবেন? এর উত্তরও দিয়েছেন হ্যালি। তিনি জানিয়েছেন, এই ক্লাবগুলির সদস্যপদ পেতে হলে অবশ্যই সমাজের উচ্চস্তরের মানুষ হতে হবে।
এসএনসিটিএম শুধু মাত্র ধনী, বিখ্যাত বা আকর্ষণীয় মানুষদেরই এই ক্লাবের সদস্য হওয়ার সুযোগ দেয় বলেও হ্যালির দাবি।
এই ক্লাবে যদি কেউ ব্যক্তিগত ভাবে শো দেখতে চান, তার সুযোগও আছে। তবে সে ক্ষেত্রে ওই সদস্যকে প্রতি বছর ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ৫৫ লক্ষ টাকা ক্লাবকে দিতে হবে বলেও জানিয়েছেন হ্যালি।
এসএনসিটিএম ক্লাবের পর পর দু’টি পার্টিতে যোগ দেওয়ার পর হ্যালি সেখানে কাজ করার আগ্রহ দেখান। সেই সুযোগও তিনি পেয়ে যান শীঘ্রই।
হ্যালি জানিয়েছেন, আগে ক্লাবের ব্যাপারে জানলেও, সেই ক্লাব কেমন হয় সে সম্পর্কে তাঁর কোনও ধারণা ছিল না। ধারণা স্পষ্ট হয় ক্লাবের কর্মী হিসাবে যোগ দেওয়ার পরেই।
হ্যালি বলেন, “লাইভ শোয়ে যৌনক্রিয়া করার প্রধান উদ্দেশ্য মানুষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করা। মানুষ এই ক্লাবে যোগ দিয়ে নিজেদের সুপ্ত আগ্রহগুলি অন্বেষণ করতে পারেন। ইন্দ্রিয়গুলিকে আরও উত্তেজিত করার সুযোগ পান।’’
এই ক্লাবে রাতে হওয়া শোগুলি মাঝেমাঝে অভিনয় এবং সংলাপের মাধ্যমেও পরিবেশনা করা হয়। এই শো দর্শকেরা বেশি উপভোগ করেন বলেও হ্যালি জানিয়েছেন।
হ্যালি জানিয়েছে, ক্লাবে দর্শকরা চাইলে কলাকুশলীদের সঙ্গে সঙ্গম করতে পারেন। কিন্তু কেউ কেউ আবার বাইরে থেকে নিজেদের সঙ্গী নিয়ে এসে এই শো দেখে যৌনকর্মে লিপ্ত হন বলেও তিনি জানিয়েছেন।
হ্যালি জানান, বর্তমানে ক্লাবের সুবিধা থাকলেও দর্শকদের সামনে বসিয়ে যৌনক্রিয়া করার এই প্রক্রিয়া নতুন নয়৷ প্রাচীন মিশর বা গ্রিসেও এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হত।
এই ধরনের ক্লাব যৌনপল্লির থেকে আলাদা। এই ধরনের ক্লাবে পৃষ্ঠপোষকদের প্রবেশ মূল্য দিতে হয় এবং বার্ষিক সদস্যপদ নিতেও মূল্য দিতে হয়। এই ক্লাবের সদস্যদের শুধু যৌনকর্মীদের সঙ্গে নয়, অন্য পৃষ্ঠপোষকদের সঙ্গেও যৌন মিলনের সুযোগ রয়েছে।
আফ্রিকান আমেরিকান সমকামী পুরুষদের এই ধরনের প্রথম সেক্স ক্লাব ছিল ‘ব্ল্যাক জ্যাক’, ১৯৮৬ সালে অ্যালান বেল এই ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন।