সম্প্রতি জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য (ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেল্থ সার্ভে)-র পঞ্চম সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ভারতবর্ষের ‘সাইকেল নগরী’ হিসেবে নজির গড়েছে পশ্চিমবঙ্গ।
দেশে পরিবার পিছু সাইকেল রাখার গড় হার যেখানে ৫০.৪ শতাংশ, সেখানে পশ্চিমবঙ্গ এই হার ৭৮.৯ শতাংশ। ফলে তালিকার শীর্ষে বাংলা।
দ্বিতীয় স্থানে উত্তরপ্রদেশ। ৭৫.৬ শতাংশ বাড়িতে অন্তত একটি করে সাইকেল আছে বলে উঠে এসেছে সমীক্ষায়।
২০১৯-২১ সালের তথ্য অনুযায়ী, ওড়িশায় ৭২.৫ শতাংশ, ছত্তীসগঢ়ে ৭০.৮ শতাংশ, অসমে ৭০.৩ শতাংশ বাড়িতে সাইকেল রয়েছে।
এ ছাড়া পঞ্জাবে ৬৭.৮ শতাংশ, ঝাড়খণ্ডে ৬৬.৩ শতাংশ এবং বিহারে ৬৪.৮ শতাংশ বাড়িতে সাইকেল পাওয়া গিয়েছে বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে।
তালিকায় তুলনামূলক ভাবে পিছিয়ে গুজরাত (২৯.৯ শতাংশ) এবং দিল্লি (২৭.২ শতাংশ)।
তালিকার সর্বনিম্নে রয়েছে নাগাল্যান্ড এবং সিকিম। এই দুই রাজ্যে হার ৬ শতাংশেরও নীচে।
পশ্চিমবঙ্গে এত বিপুল পরিমাণে সাইকেল থাকার কারণ পর্যবেক্ষণ করেও দেখা হয়েছে সমীক্ষায়।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সাইকেলের সংখ্যা বাড়ার পিছনে ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পের প্রভাব রয়েছে।
এই প্রকল্পে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সব পড়ুয়াকে সাইকেল দেওয়া হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১১ মে পর্যন্ত মোট এক কোটি তিন লক্ষ ৯৭ হাজার ৪৪৪টি সাইকেল ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে।
সমীক্ষায় প্রকাশ, বাংলায় সাইকেলের সংখ্যা বাড়ার পিছনে অন্যতম কারণ, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে, প্রধানত গ্রামাঞ্চলে পরিবহণ ব্যবস্থা সুগম নয়। এর ফলে স্থানীয়দের সাইকেলের মাধ্যমে যাতায়াত করতে সুবিধা হয়।
শুধু গ্রামেই নয়,কলকাতা শহরের বুকে সল্ট লেক এবং নিউ টাউন এলাকাতে আলাদা করে ‘বাইসাইকেল লেন’ তৈরি করা হয়েছে। পরিবেশ-বান্ধব শহর গড়তেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এক সরকারি আধিকারিকের কথায়, ‘‘অন্যান্য শহরেও এই পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই খবর পেয়ে তিনি অত্যন্ত খুশি। খড়্গপুরের বিদ্যাসাগর শিল্প পার্কে একটি সাইকেল তৈরির হাব উদ্বোধন করবেন বলে একটি প্রশাসনিক বৈঠকে ঘোষণাও করেন তিনি।