একের পর এক অনাবৃত শরীরে ছবি। গায়ে লেগে রয়েছে ছিটেফোঁটা কাপড়। নয়তো বিতর্কিত মন্তব্য। এমনটাই তো উরফি জাভেদ! হাতেগোনা ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। সে সবের জন্য উরফিকে কম জনই চেনেন। বরং তিনি বিতর্কের কারণে অনেক বেশি পরিচিত। কেন বার বার বিতর্ক উসকে দেন উরফি? কেন এত বেপরোয়া? নেপথ্যে কি রয়েছে ছোটবেলার সেই সব ভয়ঙ্কর স্মৃতি?
উত্তরপ্রদেশের লখনউতে জন্ম উরফির। সেখানেই পড়াশোনা শুরু। অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস কমিউনিকেশনে স্নাতক পাশ করেছেন তিনি। শোনা যায়, তার পরেই লখনউ ছেড়ে চলে যান মুম্বই। সেখানেই ধারাবাহিকে হাতেখড়ি।
উরফিকে ধারাবাহিকের থেকে বেশি জনপ্রিয়তা দিয়েছে সমাজমাধ্যমে তাঁর পোস্ট। আর সে কারণে বিতর্কেও জড়িয়েছেন বার বার। যদিও উরফি কোনও দিন এ সবে পাত্তা দেননি। কেন সমালোচনায় পাত্তা দেননি? ছোটবেলায় বাবার স্মৃতিই কি অনেক বেশি কঠিন করে গড়ে তুলেছিল উরফিকে?
একটি সাক্ষাৎকারে উরফি জানিয়েছেন, ছোট বেলায় নিয়মিত মারধর করতেন বাবা। তিন বোনের উপরেই চলত অত্যাচার। রেহাই পেতেন না তাঁদের মাও। তাঁকে নিগ্রহ করতেন বাবা। সঙ্গে চলত অকথ্য গালিগালাজ।
উরফি সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে বার হওয়ারও অনুমতি ছিল না তাঁর। বাবা অনুমতি দিতেন না। সারা দিন বাড়িতে বসেই কাটত। কী করতেন বাড়ি বসে? পড়াশোনার পাশাপাশি টিভি দেখতেন উরফি।
আর ফ্যাশনে খুব আগ্রহ ছিল, সে কথা নিজেই জানিয়েছেন। উরফি বলেন, ‘‘ফ্যাশন নিয়ে আমার যে খুব বেশি জ্ঞান ছিল, তা নয়। তবে আমার স্পষ্ট ধারণা ছিল যে, আমি কী পরতে চাই। আমি সকলের থেকে নিজেকে আলাদা দেখাতে চাইতাম। সকলের থেকে সেরা দেখাক আমায়, সেটাই চাইতাম। ভাবতাম, যখন পার্টিতে যাব, সকলে যাতে আমাকেই দেখেন।’’
ছোট বেলায় বাবা তাঁকে এতটাই অত্যাচার করতেন, যে অনেক বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। সে কথাও নিজেই জানিয়েছেন উরফি। দেওয়ালে যখন যখন পিঠ ঠেকে গিয়েছিল তাঁর, তখন তখনই ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন। তাই আজও হেলায় সমালোচনার মোকাবিলা করেন। ঘনিষ্ঠ মহলে সেই কথা জানিয়েছেন উরফি।
একটি সাক্ষাৎকারে উরফি জানিয়েছিলেন, বাবার পাশাপাশি পরিবারের লোকজনও হেনস্থা করেছিলেন তাঁকে। বিভিন্ন বিষয়ে খোঁটা দিতেন। তাঁর কথায়, ‘‘অনেকেই পর্ন ছবির তারকা ভাবতেন। আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খুঁটিনাটি তথ্য জানতে চেয়েছিলেন তাঁরা। ভেবেছিলেন, কোটি কোটি টাকা রয়েছে।’’
উরফির মতো সমাজ মাধ্যমে বিখ্যাত তাঁর তিন বোনও। প্রায়ই সমাজ মাধ্যমে সাহসী পোশাক পরে ছবি দেন। উরফির এক বোন ডলি জাভেদের অনুগামীর সংখ্যা সমাজমাধ্যমে উরফিরই মতো।
১৯ বছরের ডলির প্রায় এক লক্ষ অনুগামী রয়েছে সমাজমাধ্যমে। উরফির মতো সাহসী না হলেও বোন আসফিও কিন্তু সমাজমাধ্যমে জনপ্রিয়। অনুগামীর সংখ্যা বহু। প্রায় দেড় লাখের কাছাকাছি।
উরফির আর এক বোন উরুসাও জনপ্রিয়। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত। থাকেন মুম্বইতে। সমাজমাধ্যমে তাঁর অনুগামীর সংখ্যাও প্রায় এক লাখ।
উরফিদের এক ভাইও রয়েছেন। নাম সেলিম আসলাম। চার বোনের থেকে ছোট। উরফির মা জাফিয়া সুলতানাও মাঝেমধ্যেই মেয়েদের সঙ্গে ছবি দেন।
উরফি আর তাঁর তিন বোনের ছবি দেখে সমাজমাধ্যমে অনেকেই টিপ্পনি কাটেন। বিশেষত উরফির বোনেদের। কেউ কেউ মন্তব্য করেন, দিদির পথে কি তাঁরাও এ বার যাবেন? উরফিরা পাত্তা দেন না।
পাত্তা দেন না বাবাকেও। সে কথা প্রায়ই বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে জানান উরফি। একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, পরিবারের সকলের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও বাবার সঙ্গে নেই। আর সে নিয়ে কোনও আক্ষেপও নেই। জানিয়েছেন উরফি।