যত রাত বাড়ছে, পার্টিতে বেড়ে উঠছে অতিথিদের ভিড়। তবে এই পার্টি জনসাধারণের জন্য নয়। নামীদামি তারকাদের জন্য বিলাসবহুল প্রাসাদসম বাড়িতে মনোরঞ্জনের আয়োজন করা হয়েছ। সেই পার্টিতে কখনও আসেন হলিপাড়ার পরিচালক, কখনও আসেন হলিউডের সুন্দরীরা।
অতিথিদের বিনোদনের জন্য রয়েছে হরেক রকম ব্যবস্থা। খানাপিনার মাধ্যমে অতিথিদের মন ভরে গেলেও পার্টি ফ্লোরের কোনায় কোনায় ভেসে ওঠে উত্তেজনা।
পার্টির মাঝেই ঘোরাফেরা করতে দেখা যায় কমবয়সি তরুণীদের। তবে তাঁদের পরনে সুতোর লেশমাত্র নেই।
কোনও তরুণীর গায়ে পোশাক না থাকলেও তাঁর নগ্নতা ঢেকেছেন তুলির ছোঁয়ায়। সারা শরীরে এমন ভাবে উল্কি আঁকিয়েছেন, রং করেছেন— যা খালি চোখকে চটজলদি ফাঁকি দিতে পারে।
তবে, বিলাসবহুল বাড়ির এই জাঁকজমকপূর্ণ গোপন পার্টিতে দিশাহীন হয়ে ঘুরে বেড়ান না তরুণীরা। অতিথি হিসাবে নিমন্ত্রিত না হলেও তাঁদের আহ্বান জানানো হয় অতিথিদের বিনোদনের জন্য।
তথাকথিত গোপন পার্টি আসলে প্লেবয় ম্যানসনের অন্দরমহলের কাহিনি। ক্যালিফর্নিয়ার এই ম্যানসনে কোনও পার্টি হলে দেখা মিলত টিফ্যানি ল্যাঙ্গের।
২০০৩ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত প্লেবয় ম্যানসনের ‘পেইন্ট গার্ল’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন টিফ্যানি।
প্লেবয় ম্যানসনের সেই বিলাসবহুল পার্টির পাশাপাশি নিজের জীবনের নানা ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন টিফ্যানি। ডেলি স্টারকে দেওয়া এক প্রতিবেদনে তিনি জানান যে, বাইরে থেকে প্লেবয় ম্যানসন নিয়ে সকলের উৎসাহ থাকলেও এর ভিতরের পরিবেশ আন্দাজ করাও কঠিন।
প্লেবয় পত্রিকার মুখ্য সম্পাদক হিউগ হেফনার তাঁর এই প্রাসাদসম বাড়িতে বিনোদনের কোনও অভাব রাখতেন না বলে দাবি করেন টিফ্যানি।
টানা তিন বছর হিউগের পার্টি প্যাডের প্রধান সদস্যা ছিলেন টিফ্যানি। জনসাধারণ ম্যানসনের পার্টিতে আসতে পারতেন না। তবে হলিউডের জনপ্রিয় তারকাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হয়েছে টিফ্যানির।
প্লেবয় ম্যানসনের এক পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন ‘কিল বিল’ ছবির পরিচালক কোয়ান্তিন তারান্তিনো। পরিচালকের বিনোদনের জন্য নগ্নও হতে হয়েছিল টিফ্যানিকে।
তবে, নগ্নতা ঢাকা দিয়েছিলেন ‘পেইন্ট গার্ল’। ‘কিল বিল’ ছবিতে বহুল পরিচিত হলুদরঙা পোশাক অনুকরণ করে তাঁর শরীরে রং করেছিলেন তিনি। পরিচালকের সঙ্গে ছবি তুলে জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছিলেন।
টিফ্যানি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘আমার এক প্রাক্তন প্রেমিক ভেবেছিল এই বাড়ির ভিতর থাকলে দুর্দান্ত অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকা যায়। তবে ম্যানসনে কিছু সময় কাটানোর পর ও আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে, আমি এখানে কী করছি?’’
টিফ্যানিকে পার্টিতে পোশাকহীন অবস্থায় হাঁটাচলা করতে দেখেন তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক। ম্যানসনের অন্দরমহলে টিফ্যানিকে কী কাজের নির্দেশ দেওয়া হয় তা দেখে অবাক হয়ে যান ওই যুবক।
টিফ্যানি বলেন, ‘‘আমরা যাঁরা এখানে থাকি, তাঁদের কাছে সব কিছু খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু বাইরে থেকে কেউ এখানে হঠাৎ করে এলে এ সব তাঁর কাছে অস্বাভাবিক লাগতে বাধ্য।’’
২০১৫ সালে প্লেবয় ম্যানসনের পার্টি প্যাডের চাকরি ছেড়ে দেন টিফ্যানি। তার পর অন্য চাকরির সন্ধান করতে থাকেন তিনি। কিন্তু ‘পেইন্ট গার্ল’-এর তকমা তাঁর নামের সঙ্গে জুড়ে যাওয়ায় কেউ কাজ দিতে চাননি টিফ্যানিকে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও চাকরির চেষ্টা করেছিলেন টিফ্যানি। কিন্তু অতীত কখনও তাঁর পিছু ছাড়েনি বলে জানিয়েছেন তিনি। বর্তমানে গোপন পার্টির অন্ধকার থেকে তিনি বহু দূরে রয়েছেন। তিন সন্তান নিয়েই ব্যস্ত জীবন টিফ্যানির।