কার কখন ভাগ্যের চাকা ঘুরবে, তা বোধহয় কেউই বলতে পারেন না! এই যেমন রমেশ বাবুর কথাই ধরা যাক। এক সময় দারিদ্র ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী। সেই তিনিই এখন কোটিপতি। শুধু কি তাই! তাঁর গ্যারাজে রয়েছে কয়েকশো নামীদামি গাড়ি। মুকেশ অম্বানী, গৌতম আদানি, রতন টাটাদের মতো ধনকুবেরদের থেকেও বেশি গাড়ি রয়েছে রমেশের।
পেশায় তিনি নাপিত। সঙ্গে রয়েছে ট্যুরস অ্যান্ড ট্র্যাভেলসের ব্যবসা। আর এই দুই পেশাতেই বাজিমাত করেছেন রমেশ। বর্তমানে এক জন সফল উদ্যোগপতি তিনি।
রমেশের ছোট্ট সেলুন রয়েছে। তবে তার সঙ্গে সঙ্গেই তাল মিলিয়ে সামলাচ্ছেন ট্যুরস অ্যান্ড ট্র্যাভেলসের ব্যবসা। এ ভাবেই সাফল্যের মুখ দেখেছেন রমেশ। তবে সেই সাফল্য সহজে আসেনি। অনেক কৃচ্ছ্রসাধন করতে হয়েছে তাঁকে।
পেশায় নাপিত ছিলেন রমেশের বাবা পি গোপালও। তাঁরা থাকতেন বেঙ্গালুরুতে। মাত্র সাত বছর বয়সে বাবাকে হারান রমেশ। বাবার মৃত্যুর পর অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিলেন রমেশ। আর্থিক সঙ্কটে জেরবার হয়েছিল তাঁর পরিবার। সেই সময় সংসার চালাতে সংবাদপত্র বিক্রি করতেন তিনি।
কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। এর পরই নিজের ব্যবসা শুরু করেন রমেশ। সেই ব্যবসার সৌজন্যেই লক্ষ্মীলাভ হয় তাঁর।
সাধারণ পরিবারের পুত্র থেকে কোটিপতি— সাফল্যের এই যাত্রাপথে রমেশের নামীদামি গাড়ির সম্ভার নজরকাড়া। ৪০০টিরও বেশি গাড়ির মালিক রমেশ।
অনেকেরই গাড়ির শখ থাকে। ব্যতিক্রম নন রমেশও। তাই তাঁর ব্যবসায় ‘লক্ষ্মীলাভ’ হতেই গাড়ি কেনার প্রতি ঝুঁকেছিলেন রমেশ।
প্রথমে একটি মারুতি ওমনি গাড়ি কিনেছিলেন রমেশ। পরিবহণ ব্যবসায় প্রথমে ওই গাড়িটি ব্যবহার করতেন তিনি। তার পর তাঁর ব্যবসা যখন আড়েবহরে বাড়ল, তখন বিলাসবহুল গাড়ি কেনা শুরু করেন রমেশ।
বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে প্রথমে মার্সিডিজ় ই ক্লাস সেডান কিনেছিলেন রমেশ। যার দাম শুরু ৭৫ লক্ষ টাকা থেকে।
রোলস রয়েস, বিএমডব্লিউ, জাগুয়ার, বেন্টলের মতো নামী সংস্থার গাড়ি রয়েছে রমেশের গ্যারাজে।
বলা হয়, দেশের মধ্যে রমেশই সেই ব্যক্তি, যিনি এত সংখ্যক গাড়ির মালিক। তাবড় তাবড় শিল্পপতিকেও এ ক্ষেত্রে পিছনে ফেলে দিয়েছেন রমেশ।
রমেশের যেখানে ৪০০টিরও বেশি গাড়ি রয়েছে, সেখানে মুকেশ অম্বানীর রয়েছে মাত্র ১৬৮টি গাড়ি।
দেশের আরও এক শিল্পপতি গৌতম আদানিকেও টেক্কা দিয়েছেন রমেশ। আদানি গোষ্ঠীর মালিকের ঝুলিতে রয়েছে ১০টি বিলাসবহুল গাড়ি।
রমেশের ‘কার রেন্টাল কোম্পানি’-তে ৩০০ জনেরও বেশি কর্মী রয়েছেন। তাঁর সংস্থার গ্রাহকের তালিকাও চমকপ্রদ। অমিতাভ বচ্চন, ঐশ্বর্য রাই বচ্চন, আমির খান, সচিন তেণ্ডুলকরের মতো খ্যাতনামীরা রমেশের সংস্থার গ্রাহক।
যাঁর এত বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ কত? জানা গিয়েছে, রমেশের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১২০০ কোটি টাকা।