দেখে মনে হবে যেন আস্ত রাজপ্রাসাদ! ঝাঁ চকচকে কামরা। রকমারি আলোর ঝলকানি। থাকার জন্য এলাহি আয়োজন।
কী ভাবছেন, এটা কোনও পাঁচতারা হোটেল! আজ্ঞে না। ধারেভারে বিলাসবহুল হোটেলের ঘর মনে হলেও আদতে এটি একটি ট্রেন।
বিশ্বের যে সমস্ত বিলাসবহুল ট্রেন রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস।
এই ট্রেন কিন্তু হাল আমলের নয়। ১৮৮৩ সালে দীর্ঘতম রুটের যাত্রিবাহী ট্রেন হিসাবে ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসের সুনাম রয়েছে।
১৮৮৩ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত পরিষেবা দিয়েছে এই ট্রেন।
১৮৮৩ সালে ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস তৈরি করেছিল বেলজিয়ান সংস্থা ‘কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল ডেস ওয়াগন-লিটস’।
১৮৮৩ সালের ৪ অক্টোবর যখন প্রথম এই ট্রেনের চাকা গড়িয়েছিল, তখন এই ট্রেনের যাত্রাপথ ছিল প্যারিসের গার দে লেস্ত থেকে মিউনিখ ও ভিয়েনা হয়ে রোমানিয়ার গিউরগিউ পর্যন্ত। যদিও পরবর্তী সময়ে এই ট্রেনের যাত্রাপথ একাধিক বার বদলেছে।
প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বেশ কিছু দিন এই ট্রেন পরিষেবা বন্ধ ছিল।
প্রায় ১৩৯ বছরের পুরনো এই ট্রেন আবারও রেলপথে দৌড়বে। নতুন করে সাজানো হয়েছে এই ট্রেন। ২০২৪ সালে প্যারিস অলিম্পিক্সের সময় আবারও চালু হবে এই ট্রেন পরিষেবা।
১৯২০ ও ১৯৩০ সালের সময়কার আসল যে ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস ছিল, তার ১৭টি কামরা ব্যবহার করা হয়েছে নতুন ট্রেনটিতে।
সংস্কার করে নতুন রূপে সুসজ্জিত এই ট্রেনে থাকছে ১২টি স্লিপিং কার।
ট্রেনের মধ্যে এলাহি বন্দোবস্ত। থাকছে একটি রেস্তরাঁ, পানশালা। তিনটি লাউঞ্জেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ট্রেনের সজ্জায় যাতে প্রাচীন আমলের ছাপ থাকে, আবার কামরার অন্দরসজ্জা যাতে সময়োপযোগী করা যায়, সে ব্যাপারে নজর দেওয়া হয়েছে।
ট্রেনটিকে নতুন রূপে সাজানোর কাজে যুক্ত রয়েছেন ফরাসি স্থপতি ম্যাক্সিমে ডি’আঞ্জেক। তাঁর সঙ্গে জোরকদমে কাজ চালাচ্ছেন ফরাসি কারিগরা।
সংবাদসংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ট্রেনে তিন ধরনের স্যুট থাকবে। থাকছে সেলুনও। এত বিলাসবহুল ট্রেনে চড়তে হলে পকেট থেকে অনেক টাকাই গুনতে হবে। সিএনএন জানাচ্ছে, ট্রেনে এক রাত কাটানোর জন্য এক জন যাত্রীকে দিতে হবে প্রায় ২ হাজার ২৫৫ ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় ১ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা।