চায়ের কাপে চুমুক না দিলে অনেকেরই সকাল শুরু হয় না। আবার বিকেলে আড্ডার আসরে এক কাপ চা না হলে ঠিক যেন জমে না! কেউ কেউ মাটির ভাঁড়ের চায়ে তৃপ্তি পান। আবার, অনেকেই শৌখিন পাত্রে চা পান করেন। সে কারণে বাজারে রকমারি চায়ের পাত্র কম নেই! কিন্তু এমন কোনও চায়ের পাত্রের কথা কখনও শুনেছেন, যার দাম ২৪ কোটি টাকা!
চায়ের সঙ্গে কেটলির সম্পর্ক নিবিড়। চায়ের আসরে কেটলি না থাকলে যেন বেমানান লাগে। তাই বাড়িতে চায়ের আসরে অনেকেই শৌখিন কেটলি ব্যবহার করেন। রেস্তরাঁতেও চায়ের কেটলির সাজসজ্জা নজর কাড়ে। এই কেটলিটি শৌখিন তো বটেই, একই সঙ্গে মূল্যবান। দেখলে চোখ জুড়িয়ে যাবে।
কেটলির হাতলটি সাদা রঙের। বাকি চেহারায় জ্বলজ্বল করছে মণিমুক্তো। সোনা, হিরে দিয়ে কেটলিটিকে মুড়ে ফেলা হয়েছে।
এই বিশেষ ধরনের কেটলিই নতুন নজির গড়ে ফেলেছে। বিশ্বের সবচেয়ে দামি কেটলির শিরোপা অর্জন করে ফেলেছে সে।
কেটলিটির নাম ‘দ্য ইগোয়িস্ট’। ইংরেজিতে এই শব্দের অর্থ অহঙ্কারী। অবশ্য কেটলিটি যে রকম দেখতে, তাতে তার অহঙ্কার করাই সাজে।
কেটলিটি সাজিয়েছে ব্রিটেনের এন শেঠিয়া ফাউন্ডেশন। তাদের তৈরি এই কেটলির দাম প্রায় ২৪ কোটি টাকা।
২০১৬ সালে সবচেয়ে দামি চায়ের পাত্র হিসাবে বিশ্বে নজির গড়েছিল এই কেটলি। দিন কয়েক আগে এই কেটলিটির কাহিনি টুইটারে তুলে ধরেছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস।
কেটলিটি তৈরি করেছেন ইটালির বাসিন্দা, পেশায় গয়নার কারিগর ফুলভিয়ো স্কেভিয়া। কিন্তু কী এমন আছে এই কেটলিতে? কেনই বা এত দাম?
কেটলির হাতলটি তৈরি করা হয়েছে হাতির দাঁত দিয়ে। বাকি অংশে ব্যবহার করা হয়েছে সোনা, রুপো, হিরে।
কেটলিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৮ ক্যারাট সোনা। এ ছাড়াও ১৬৫৮ হিরে দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে কেটলিটি। ব্যবহার করা হয়েছে তাইল্যান্ড এবং মায়ানমারের ৩৮৬টি মূল্যবান রত্ন।
কেটলির ভিতরের অংশটি পিতলের মতো চকচকে। ঢাকনাটিও সোনা, হিরে দিয়ে বাঁধানো।
গত ৯ অগস্ট কেটলির ছবি টুইট করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস। তার পর থেকেই আলোচনায় উঠে এসেছে এই কেটলির কথা। ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ এই পোস্টটি দেখেছেন।
এত দামি কেটলির চা খেয়ে দেখবেন নাকি? এই নিয়ে সমাজমাধ্যমে নানা মুনির নানা মত। কেউ লিখেছেন, ‘‘কেটলিটি কিনতে চাই। কিন্তু চায়ের জন্য এটি ব্যবহার করতে পারব না। সাজিয়ে রাখব।’’
আবার কেউ মজা করে লিখেছেন, ‘‘একটা চায়ের পাত্র আমার থেকেও ধনী। আমায় দত্তক নিক এন শেঠিয়া ফাউন্ডেশন।’’
সাধারণের সাধ্যের বাইরে এই কেটলি। তাই অনেকেই বলছেন, মাটির ভাঁড়ের চা আর ২৪ কোটির কেটলির চা— ফারাক কোথায়! দুটোই তো চা। তবে চায়ের এমন শৌখিন পাত্রটি ঘিরে চাপ্রেমীদের উৎসাহ যে কম নয়, তা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের টুইটটি দেখলেই বোঝা যায়।