গাড়ির প্রতি অনেকেরই শখ রয়েছে। তা যদি বিলাসবহুল গাড়ি হয়, তা হলে তো কথাই নেই। দামি গাড়ি নিয়ে জনমানসে উৎসাহের অন্ত নেই। কিন্তু যদি এমনটা সম্ভব হয়, কোনও সাধারণ গাড়িকেই বিলাসবহুল গাড়িতে পাল্টে ফেলা গেল! তা হলে কেমন হবে? যেমন মারুতি ৮০০ কিনা হয়ে গেল রোলস রয়েস!
এ-ও সম্ভব! হ্যাঁ, এমন কীর্তি করে তাক লাগিয়েছেন কেরলের এক ১৮ বছরের তরুণ। মারুতি ৮০০ গাড়িটিকেই রোলস রয়েসের মতো বিলাসবহুল যান বানিয়ে ফেলে চমকে দিয়েছেন তিনি।
মারুতি ৮০০ থেকে রোলস রয়েস বানানোর এ হেন কীর্তির ভিডিয়ো সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে তুলে ধরেছেন ফাজ়িল বশির নামে এক যুবক। তাঁর ভিডিয়োতেই কেরলের তরুণের কাহিনি বর্ণিত হয়েছে।
ওই তরুণের নাম হাদিফ। তিনি কেরলের ত্রিশূর এলাকার বাসিন্দা। বাড়িতে বসে মারুতি ৮০০ দিয়েই রোলস রয়েস গাড়ি তৈরি করেছেন হাদিফ।
ছোটবেলা থেকেই গাড়ির প্রতি ঝোঁক হাদিফের। করোনা অতিমারির সময় মোটরবাইকের ইঞ্জিন দিয়েই একটি ছোটখাটো জিপ বানিয়ে তাক লাগিয়েছিলেন ওই তরুণ। এ বার বানালেন রোলস রয়েস।
গাড়ির মধ্যে রোলস রয়েস সবচেয়ে পছন্দের হাদিফের। তাই নিজের হাতে সেই স্বপ্নের গাড়ি তৈরি করলেন তিনি। কিন্তু কী ভাবে এই অসাধ্যসাধন হল?
পুরনো মারুতি ৮০০ গাড়িটি তাঁর এক বন্ধু হাদিফকে দিয়েছিলেন। গাড়িটির অবস্থা বেহাল ছিল। হাদিফ সেই ঝরঝরে মারুতিটিকে দিয়েই রোলস রয়েস বানানোর কথা ভাবেন। আর তাই তাঁর বন্ধু কোনও দ্বিধা না করেই মারুতিটি হাদিফকে দেন।
তার পর শুরু হল মারুতি ৮০০ থেকে রোলস রয়েস তৈরির কাজ। প্রথমেই মারুতি ৮০০-এর সামনের দিকটা নতুন করে তৈরি করলেন। আসল বনেট ভেঙে ফেলে নতুন করে তৈরি করলেন।
মারুতি ৮০০ এবং রোলস রয়েসের সামনের দিকের চেহারাটা আলাদা। তাই সেই কাজটাই প্রথমে সারলেন তিনি। রোলস রয়েসের সামনের দিকটা যেমন দেখতে, ঠিক তেমন ভাবেই বানালেন মারুতি ৮০০-কে।
গাড়ির বাইরের অংশটাই বদল করেছেন হাদিফ। তবে গাড়ির অন্দরসজ্জায় তেমন কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। মারুতি ৮০০-এর মতোই স্টিয়ারিং রয়েছে।
তবে গাড়ির সিটগুলো বদল করা হয়েছে। এক বন্ধুর মাধ্যমে রোলস রয়েসের সিটগুলি পেয়েছেন হাদিফ। সেই সিটগুলিই ওই গাড়িতে ব্যবহার করেছেন তিনি।
গাড়ির কনসোল এবং স্টিয়ারিং বাদামি রঙের করা হয়েছে। গাড়িটি সাদা রঙের। ব্যবহার করা হয়েছে কালো রঙের বনেট।
রোলস রয়েস অত্যন্ত বিলাসবহুল গাড়ি। ভারতে এই গাড়ির দাম কয়েক কোটি টাকা। সেখানে মারুতি ৮০০-কে অনেক সস্তায় দেশি রোলস রয়েসে রূপান্তরিত করলেন ওই তরুণ। জানা গিয়েছে, এ জন্য খরচ পড়েছে ৪৫ হাজার টাকা।
হাদিফের এ হেন কাজে উৎসাহ দেয় তাঁর পরিবার। তাঁর কাজকে সমর্থন জানিয়েছেন হাদিফের বাবা। কাজের জন্য যা খরচ হয়, তা বাবার থেকেই পান হাদিফ।
কয়েক মাসের চেষ্টায় এমন রোলস রয়েস বানিয়েছেন হাদিফ। আগামী দিনে আরও নামী-দামি গাড়ির প্রতিকৃতি বানাতে চান তিনি। সেই লক্ষ্যেই পা বাড়িয়েছেন কেরলের ওই তরুণ।