শতবর্ষ আগে হঠাৎ ঝড়ে হারিয়ে গিয়েছিল জাহাজ। পাওয়া যায়নি ধ্বংসাবশেষ। ১২০ বছর পরে খোঁজ মিলল সেই এস এস নেমেসিসের।
১২০ বছর আগে রহস্যময় ভাবে সমুদ্রের বুকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল এসএস নেমেসিস নামে ওই জাহাজ।
সেই জাহাজে ৩২ জন কর্মী ছিলেন। এ বার সেই জাহাজেরই খোঁজ মিলল অস্ট্রেলিয়ায়।
নিউ ইয়র্ক পোস্ট-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাষ্পচালিত ওই জাহাজটি ১৯০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন থেকে কয়লা নিয়ে পাড়ি দিয়েছিল।
কিন্তু নিউ সাউথ ওয়েলসের কাছে সেটি শক্তিশালী ঝড়ের কবলে পড়ে। সেই ঘটনার পর কর্মীদের দেহ উদ্ধার হলেও জাহাজের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়নি। ফলে সেটি কোথায় নিখোঁজ হয়ে যায়, তা রহস্যই থেকে গিয়েছিল।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেশ কিছু দিন ধরে সমুদ্রগর্ভে পণ্যবাহী ওই জাহাজের জন্য তল্লাশি চালাচ্ছিল ‘সাবসি প্রফেশনাল মেরিন সার্ভিসেস’ নামে একটি সংস্থা।
তখনই সিডনির কাছে সমুদ্রগর্ভে একটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষের খোঁজ মেলে। সমুদ্রের ৫২৫ ফুট গভীরে সেই ধ্বংসাবশেষের হদিস পায় সংস্থাটি।
কিন্তু সেই ধ্বংসাবশেষ যে এসএস নেমেসিস-এরই তা নিশ্চিত হতে পারছিল না সংস্থাটি।
এর পর এই অনুসন্ধানে যোগ দেয় অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল সায়েন্স এজেন্সি। সমুদ্রের নীচে গিয়ে ওই ধ্বংসাবশেষের ছবি তুলে এনে জাহাজের বৈশিষ্ট্যগুলি মিলিয়ে দেখা হয়।
ছবি পরীক্ষার পর তারা নিশ্চিত করে ধ্বংসাবশেষটি এসএস নেমেসিসেরই। জাহাজের বেশ কিছু অংশ অক্ষতও রয়েছে বলে জানিয়েছে সায়েন্স এজেন্সি।
তাদের দাবি, ঝড়ের কারণে জাহাজের ইঞ্জিনে গোলযোগ দেখা দেয়। তা ছাড়া বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়েছিল ওই জাহাজের উপর। ফলে কর্মীরা লাইফবোট নিয়ে পালানোর সুযোগ পাননি।
অস্ট্রেলিয়া সরকার জাহাজের ওই কর্মীদের পরিবারগুলিকে খুঁজে বার করার কাজ শুরু করেছে।
নিউ সাউথ ওয়েলসের পরিবেশ মন্ত্রী পেনি শেপ জানিয়েছেন, ৪০ জন শিশু ওই দুর্ঘটনায় তাঁদের বাবা-মাকে হারিয়েছে।
জাহাজের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়ার এই ঘটনা আশা করা যায় সেই পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে।
এই দুর্ঘটনাকে সিডনির সমুদ্র ইতিহাসে সবচেয়ে রহস্যময় দুর্ঘটনা বলে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শেপ। এসএস নেমেসিসের উদ্ধার নিউ সাউথ ওয়েলসের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় লিখবে।