Shiny Abraham

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নেমেও রুপো, পিটি ঊষাকে টক্কর দেওয়া সাইনি আব্রাহামকে এখন চেনা দায়

পিটি ঊষা, সাইনি আব্রাহাম, এমডি বালসাম্মা এবং বন্দনা রাও। আশির দশকে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড ইভেন্টে দেশীয় তারকাদের কথা উঠলেই এই ৪ জনের নাম এক নিশ্বাসে ভেসে উঠত।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:০৭
Share:
০১ ২০

আশির দশকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এশীয় স্তরের অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় পা রাখার ‘সাহস’ দেখিয়েছিলেন। সেই সাহসে ভর করেই বোধ হয় ওই প্রতিযোগিতা থেকে রুপো ছিনিয়ে নেন তিনি। মা হওয়ার পর আবার ট্র্যাকে ফিরে গিয়েছিলেন সাইনি কুরিসিঙ্গল আব্রাহাম। এককালে যিনি পিটি ঊষাকেও টক্কর দিতেন। সাইনির ঝুলিতে এ হেন ‘নজির’ ছাড়াও অজস্র কীর্তি রয়েছে।

০২ ২০

পিটি ঊষা, সাইনি আব্রাহাম, এমডি বালসাম্মা এবং বন্দনা রাও। আশির দশকে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড ইভেন্টে দেশীয় তারকাদের কথা উঠলেই এই ৪ জনের নাম এক নিশ্বাসে ভেসে উঠত। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভারতের পতাকার ভার বহন করতেন এই কন্যারা। এঁদের মধ্যে আবার ঊষার সঙ্গে সাইনির তুলনা টেনে পাতার পর পাতা লেখালেখি চলত সংবাদমাধ্যমে।

Advertisement
০৩ ২০

আশির দশকে এ দেশের বেশির ভাগ মেয়েদের মতো স্বামী-সন্তান নিয়ে সুখে ঘরসংসার করা অথবা নিশ্চিন্তের চাকরির বদলে অ্যাথলেটিক্সে ঝুঁকেছিলেন সাইনি। অবশ্য ছোটবেলা থেকেই তাঁর সে দিকে ঝোঁক ছিল।

০৪ ২০

ঊষার মতো সাইনিও কেরলের বাসিন্দা। আইডুক্কি জেলার ১৯৬৫ সালের ৮ মে জন্ম তাঁর। ঊষা ছিলেন বয়সে তাঁর থেকে বছরখানেকের বড়। বেড়ে ওঠার সময় কেরলের কোট্টয়ামের স্পোটর্স ডিভিশনে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানেই অ্যাথলেটিক্সে হাতেখড়ি তাঁর।

০৫ ২০

তিরুঅনন্তপুরমের জিভি রাজা স্পোর্টস স্কুলেও কিছু দিন প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন সাইনি। এর পর পলইয়ের আলফোন্সা কলেজে পড়াশোনা শুরু করেন।

০৬ ২০

ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের ৪০০ বা ৮০০ মিটারের ইভেন্টে ঊষার সঙ্গেই কেরিয়ার শুরু হয়েছিল সাইনির। ১৯৮২ সালে নয়াদিল্লিতে এশীয় গেমসের আসরে দু’জনকেই দেখা গিয়েছিল। সেই প্রতিযোগিতার আগের বছরে ৮০০ মিটারে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হন সাইনি।

০৭ ২০

জাতীয় স্তরে ৮০০ মিটারের দৌড়ে নিজেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গিয়েছিলেন সাইনি। বস্তুত, ১৪ বছরের কেরিয়ারে প্রতি বছরই জাতীয় প্রতিযোগিতায় এই ইভেন্ট জিতেছেন তিনি।

০৮ ২০

’৮৪-তে আর এক বার নতুন উচ্চতা ছুঁয়ে ফেলেন সাইনি। সে বার লস অ্যাঞ্জেলসে অলিম্পিক্সের আসর বসেছিল। প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসাবে অলিম্পিক্স ইভেন্টের সেমিফাইনালে পৌঁছন সাইনি। ৮০০ মিটারে ২.০৪.০৯ সেকেন্ড সময় নিয়ে চতুর্থ স্থান দখল করেন তিনি।

০৯ ২০

লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক্সে আরও একটি মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন সাইনি। ৪X৪০০ মিটারের রিলেতে ভারতীয় দলে সদস্য ছিলেন তিনি। যে দলে সাইনির সঙ্গে ছিলেন ঊষা, বালসাম্মা এবং বন্দনাও। চার জনের দলটি ফাইনালে উঠলেও সকলের শেষে থামে। তবে তার আগে এশীয় রেকর্ড গড়ে ফেলেছিলেন সাইনিরা। রিলে শেষ করতে সময় নিয়েছিলেন ৩.৩২.৪০ সেকেন্ড।

১০ ২০

পরের বছর আরও জোড়া চমক দিয়েছিলেন সাইনি। এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ৮০০ মিটারে সোনা ছিনিয়ে নেন তিনি। সেই সঙ্গে ৪০০ মিটারের দৌড়ে রুপো জিতে নেন।

১১ ২০

’৮৫-র পর অবশ্য এশিয়ান গেমসে আশাহত করেছিলেন সাইনি। সোলে এশিয়ান গেমসের ৮০০ মিটারের দৌড়ে সকলের থেকে এগিয়ে থেকেও সোনা হাতছাড়া হয় তাঁর। দৌড়ের শেষে জানা যায়, নির্ধারিত সময়ের আগেই লেন বদল করেছিলেন সাইনি। ফলে ‘ডিসকোয়ালিফাই’ হয়ে যান তিনি।

১২ ২০

যদিও সোল এশিয়াডের ৪০০ মিটারের ইভেন্টে ঊষার পিছনে শেষ করে রুপো জিতে মুখরক্ষা করেন সাইনি।

১৩ ২০

অনেকের মতে, সাইনির কেরিয়ারের সেরা মুহূর্ত এসেছিল ’৮৯-এর এশীয় ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড প্রতিযোগিতা। সেই প্রতিযোগিতায় ৮০০ মিটারের দৌড়ে রুপো জিতেছিলেন তিনি। সে সময় অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন সাইনি।

১৪ ২০

এশীয় ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড প্রতিযোগিতার আগের বছর ডিসেম্বরে সাঁতারু উইলসন চেরিয়নের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন সাইনি। আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের পতাকা বহনকারী চেরিয়ান অর্জুন পুরস্কারও পেয়েছিলেন।

১৫ ২০

মা হওয়ার পরেও ট্র্যাক থেকে সরে যাননি সাইনি। বরং প্রথম সন্তান শিল্পার জন্মের পর নাকি ট্র্যাকে তাঁর গতি বেড়ে গিয়েছিল। ’৯৫-এর সাফ গেমসে ৮০০ মিটারের দৌড় শেষ করেছিলেন ১.৫৯.৮৫ সেকেন্ডে। যা ছিল সেই সময় নতুন রেকর্ড।

১৬ ২০

’৯২-এর বার্সেলোনা অলিম্পিক্সে আরও এক মাইলফলক স্পর্শ করেন সাইনি। প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসাবে অলিম্পিক্সের আসরে দেশের পতাকা বহন করেন তিনি।

১৭ ২০

ট্র্যাককে বিদায় জানালেও অনেকের মনেই গেঁথে রয়েছেন সাইনি। ৮০০ মিটারের ইভেন্টকে আপন করে নিলেও ৪০০ মিটারে তিনিই প্রথম ভারতীয় মহিলা, যিনি ১ মিনিটের কম সময়ে দৌড়েছিলেন। ’৮১-তে লখনউয়ে জাতীয় প্রতিযোগিতায় সে নজির গড়েন সাইনি।

১৮ ২০

৮০০ মিটারেও নজির গড়েছিলেন সাইনি। ’৯৫-এ দেশের মাটিতে সাফ গেমসে ওই ইভেন্টে প্রথম ভারতীয় অ্যাথলিট হিসাবে ২ মিনিটের কম সময়ে দৌড়েছিলেন তিনি। ৩০ বছরের সাইনি সময় নিয়েছিলেন ১.৫৯.৮৫ সেকেন্ড।

১৯ ২০

এশিয়ান গেমসে ১টি সোনা ও ব্রোঞ্জ এবং ২টি রুপো জিতেছেন সাইনি। অন্য দিকে, এশিয়ান ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে ৭টি সোনা, ৫টি রুপো এবং ২টি ব্রোঞ্জ রয়েছে তাঁর। কেরিয়ারের মধ্যগগনে থাকাকালীন ’৮৫-তে অর্জুন পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছিল সাইনিকে। এর পর ’৯৮-এ পদ্মশ্রী পান তিনি।

ছবি: সংগৃহীত।

২০ ২০

এককালে ট্র্যাকে শোরগোল ফেলে দেওয়া সাইনি আজকাল কী করছেন? ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (এফসিআই)-র নানা টুইটে দেখা যায় তাঁকে। আশির দশকের সেই অ্যাথলিট এখন বছর সাতান্নর উচ্চপদস্থ আধিকারিক। আজকাল চেন্নাইয়ে এই কেন্দ্রীয় সংস্থার পশ্চিমাঞ্চলীয় অফিসে জেনারেল ম্যানেজার হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন সাইনি।

সমস্ত ছবি সাইনি আব্রাহামের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement