ভারত-মলদ্বীপ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে জটিলতা কমার লক্ষণ নেই। মোদীকে কটাক্ষ করার জেরে ‘বয়কট মলদ্বীপ’-এর রেশ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে দ্বীপরাষ্ট্র।
এরই মধ্যে চিন সফর থেকে ফিরে এসেই মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু সে দেশ থেকে ১৫ মার্চের মধ্যে ভারতীয় সেনা সরানোর ‘আর্জি’ জানিয়েছেন। এই নিয়ে দু’দেশের মধ্যে অব্যাহত কূটনৈতিক টানাপড়েন।
মলদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরানোর যে ‘আর্জি’ মুইজ্জু সরকার করেছে, তা নিয়ে ‘কার্যকর সমাধান’ খোঁজার চেষ্টা করছে ভারত।
দুই দেশের মধ্যে চলা কূটনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যে বৃহস্পতিবার এমনটাই জানাল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।
মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর নেতৃত্বাধীন মলদ্বীপ সরকার ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের জন্য ইতিমধ্যেই সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। সে দেশের সরকারের ‘আর্জি’ ১৫ মার্চের মধ্যে মলদ্বীপ থেকে সেনা সরাতে হবে ভারতকে।
মুইজ্জুর সচিবালয়ের শীর্ষ আধিকারিক আবদুল্লা নাজ়িম ইব্রাহিম সম্প্রতি দেশের একটি সংবাদপত্রকে বলেছেন, “ভারতীয় সেনারা মলদ্বীপে থাকতে পারবেন না। কারণ, এটাই প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু এবং তাঁর সরকারের সিদ্ধান্ত।”
প্রসঙ্গত, এর আগেও ক্ষমতায় আসার পরে পরেই ভারতকে সেনা সরানোর আর্জি জানিয়ে আসছে মুইজ্জু সরকার। ২০১০ সাল থেকে একটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অংশ হিসেবে ভারতীয় সেনা মলদ্বীপে রয়েছে।
মলদ্বীপের সেনাকে যুদ্ধ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণও দেয় তারা। পাশাপাশি মলদ্বীপের অন্তর্গত প্রত্যন্ত দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য মানবিক সহায়তা এবং চিকিৎসা উপাদান পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বও রয়েছে ভারতীয় সেনার কাঁধে।
সেই সেনাকেই মলদ্বীপ থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রশাসন।
এই প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, তা হল ভারতীয় বিমান চলাচলের জন্য একসঙ্গে কার্যকর সমাধান খুঁজে বের করা। ১৪ জানুয়ারি একটি বিশেষ বৈঠক হয়। আলোচনা চলছে। দ্বিতীয় একটি বৈঠক হবে। কী হবে তা আগে থেকেই ভেবে নেওয়ার দরকার নেই।’’
সূত্রের খবর, মলদ্বীপের রাজধানী মালেতে ভারত এবং মালদ্বীপের উচ্চ স্তরের প্রথম বৈঠকের মধ্যে সেনা সরানোর বিষয়টি উঠে আসে।
সেই বৈঠকে ভারতের প্রতিনিধি হিসাবে রাষ্ট্রদূত মুনু মাহাওয়ার-সহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আহমেদ নজিমের নেতৃত্বে মলদ্বীপের প্রতিনিধিদল ভারতীয় সেনা সরানোর প্রস্তাব দিয়েছিল।
ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক সেই বৈঠকের কথা জানালেও প্রথমে সেনা প্রত্যাহারের কথা উল্লেখ করেনি। বরং, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপরই বেশি জোর দিয়েছিল ভারত।
তবে সম্প্রতি চিন সফরের পর মুইজ্জুর সরকার ১৫ মার্চের মধ্যে ভারতীয় সেনা সরানোর বিষয়টিতে জোর দেওয়ার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মলদ্বীপের নয়া প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মইজ্জু চিনা সফর থেকে ফেরার পরেই এই ঘোষণা করায় এর পিছনে চিনা মদত আছে কি না তা নিয়েও তৈরি হয়েছে জল্পনা।