হায়দরাবাদের ধনী পরিবারগুলির মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে তাঁদের পরিবার। তবে পারিবারিক সম্পত্তি ছাড়াও প্রায় একার জোরেই ১,৩০০ কোটি টাকার মালিক কোনিডেলা রাম চরণ তেজা। তেলুগু ফিল্মের ভক্তদের কাছে যিনি রাম চরণ নামে পরিচিত।
বাবার পথ অনুসরণ করে তেলুগু ফিল্মে পা রেখেছিলেন। সেটি ছিল ২০০৭ সাল। পি জগন্নাথের পরিচালনায় ‘চিরুতা’ ফিল্মে অভিষেক। তার পর থেকে পর পর কম হিট ফিল্ম করেননি। মাত্র ৩৬ বছর বয়সেই জনপ্রিয়তায় যেন বাবাকেও ছাপিয়ে গিয়েছেন রাম চরণ। এই মুহূর্তে তেলুগু ফিল্ম তো বটেই, রোজগারের নিরিখে বহু বলিউড তারকাকে ছাপিয়ে গিয়েছেন চিরঞ্জীবী-পুত্র।
তবে ফিল্মে অভিনয় ছাড়াও রাম চরণের আয়ের একাধিক উৎস রয়েছে। বিমান সংস্থায় অংশীদারি, আস্ত একটি পোলো ক্লাব... পড়ে শোনালে তালিকা ক্রমশই দীর্ঘ হতে থাকে।
ফিল্মের কত তারকারই তো নিজস্ব বিমান রয়েছে। তবে এ দেশের ক’জন তারকার বিমান সংস্থায় অংশীদারিত্ব রয়েছে? বিশেষ চিন্তা-ভাবনা করতে হবে না। ‘মগধীরা’-র নায়কের সম্পত্তির তালিকায় তা-ও রয়েছে।
ফিল্মে অভিনয়ের পাশাপাশি হায়দরাবাদের টার্বো মেঘা এয়ারওয়েজ প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি বিমান সংস্থার চেয়ারম্যান হিসাবেও দায়িত্ব সামলাচ্ছেন রাম চরণ। ‘ট্রুজেট’ নামে ওই সংস্থাটির নিজস্ব উড়ান ছাড়াও অন্যান্য বিমান সংস্থার পরিষেবার কাজ করে।
ফিল্মের পর্দায় বহু বার ঘোড়ায় চড়েছেন। তবে পর্দায় বাইরেও ঘোড়ায় চড়ার শখ রাম চরণের। সেই ছোটবেলা থেকেই ঘোড়ার প্রতি ভালবাসা তাঁর। নিজের আস্তাবলে বাদশা এবং কাজল নামে দু’টি ঘোড়াও রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাম চরণ।
ছোটবেলার কোনও কোনও শখ যে অভিনয় জীবনেও কত কাজে আসে! বস্তুত, এস এস রাজামৌলির নির্দেশে ঘোড়ার পিঠে বসেই ‘মগধীরা’-র বহু দৃশ্যের শ্যুটিং করেছিলেন রাম চরণ। তিনি যে একটি পোলো ক্লাবের মালিক হবেন, তা আর নতুন কথা কী! হায়দরাবাদ পোলো ক্লাবের মালিক রাম চরণের আবার নিজের দলও রয়েছে।
ফি মাসে নাকি চার কোটি টাকারও বেশি রোজগার রাম চরণের। অন্যান্য শখের মধ্যে দামি গাড়িও নেশা রয়েছে। ঘোড়াশালে ঘোড়ার পাশাপাশি হাতিশালে হাতি না থাকলেও গ্যারাজে একাধিক দামি গাড়ি রয়েছে। অ্যাস্টন মার্টিন বা রোলস রয়েস ফ্যান্টম থেকে মার্সিডিজের জিএল৩৫০ মডেল— কোটি কোটি টাকার একাধিক গাড়ির মধ্যে শুধু এ ক’টির নাম শুনলেই চোখ কপালে ওঠার জোগাড়।
ঘোড়া এবং গাড়ি তো হল। কিন্তু বাড়ি? মুম্বইয়ে একটি অভিজাত পেন্টহাউসের মালিক তেলুগু ছবির সুপারস্টার। রাজামৌলির ফিল্ম ‘আর আর আর’-এর শ্যুটিংয়ের জন্য মুম্বই গেলে এই পেন্ট হাউসে স্ত্রী উপসনার সঙ্গে থাকেন রাম চরণ। ছিমছাম ইউরোপীয় ধাঁচের এই পেন্টহাউসটিকে দেখলে হলিউড ফিল্মের বিলাসবহুল সেট বলে ভুল হতে পারে।
মুম্বই ছাড়াও হায়দরাবাদের অভিজাত এলাকা জুবিলি হিলসে ৩০ কোটিরও বেশি অর্থমূল্যের একটি বাড়ি রয়েছে রাম চরণের। ২৫ হাজার বর্গফুটের ওই বাড়িতে রয়েছে সমস্ত রকমের আধুনিক সুযোগসুবিধা। সুইমিং পুল, জিম... মায় একটি টেনিস কোর্টও!
নিজের পরের দু’টি ফিল্মের জন্য ১০০ কোটি টাকা করে পারিশ্রমিক চেয়েছেন রাম চরণ। অন্তত, ফিল্মি পাড়ায় তেমনই কানাঘুষো চলছে। কিয়ারা আডবাণীর সঙ্গে শঙ্করের পরিচালনায় ‘আরসি ১৫’। তার পরের ফিল্মে গৌতম তিন্নানুরির পরিচালনায় দিশা পাটানির সঙ্গে রোম্যান্স করতে দেখা যেতে পারে তাঁকে।
ফিল্মের পারিশ্রমিক ছাড়াও একাধিক বিজ্ঞাপনে মুখ দেখিয়ে কম আয় করেন না রাম চরণ। আর এক বার তাতে মুখ দেখালেই হল! রয়্যালটি বাবদ ফি মাসে বেশ মোটা অঙ্কই জমা পড়ে রাম চরণের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে!