লোকসভা ভোটের আগেই রামমন্দির উদ্বোধন নিয়ে এমনিতেই উত্তপ্ত রাজনৈতিক মহল। বিরোধীদের দাবি রামমন্দিরকে কেন্দ্র করেই মেরুকরণের রাজনীতি করবে বিজেপি। যদিও বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই।
তবে এ বার তার পাল্টা দিতেই মাঠে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। রামমন্দির উদ্বোধনের আট দিন আগেই রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে নতুন কর্মসূচি শুরু করতে চলেছে কংগ্রেস। ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র সাফল্যের পরে এ বার তার দ্বিতীয় অধ্যায়ের ঘোষণা করলেন কংগ্রেস সভাপতি।
রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছে কংগ্রেস। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বাধীন এই কর্মসূচিকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়েছে হাতশিবির।
২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে আবার এক কর্মসূচি নিলেন রাহুল। এ বার তার নাম ‘ভারত ন্যায় যাত্রা।’ আগামী বছরের ১৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে কংগ্রেসের ভারত জোড়ো যাত্রার ‘দ্বিতীয় অধ্যায়।’ এ বার উত্তর-পূর্বের মণিপুর থেকে মহারাষ্ট্রের মুম্বই পর্যন্ত হাঁটবেন রাহুল।
কংগ্রেস সূত্রে খবর, এ বার মোট ১৪টি রাজ্যে পদযাত্রা করবেন রাহুল গান্ধী। মণিপুর থেকে হাঁটা শুরু করবেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। যাত্রার শেষ মুম্বই শহরে। সব মিলিয়ে ৮৫টি জেলায় হবে এই পদযাত্রা।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই শেষ হবে এই কর্মসূচি। আপাতত কর্মসূচি শেষ করার তারিখ দেওয়া হয়েছে ২০ মার্চ। দলের নতুন কর্মসূচি নিয়ে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল বলেন, ‘‘কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে আগামী ১৪ জানুয়ারি ‘ভারত ন্যায় যাত্রা’র সূচনা করবেন।’’
তিনি জানান ইম্ফল থেকে এই কর্মসূচি শুরু হবে। এ বারের যাত্রার লক্ষ্য, মূলত পূর্ব থেকে পশ্চিম ভারত। ৬,২০০ কিলোমিটার এই যাত্রায় থাকছে মণিপুর, নাগাল্যান্ড, অসম, মেঘালয়, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান, গুজরাত এবং মহারাষ্ট্র।
ভারত জোড়ো যাত্রার প্রথম পর্বে উত্তর থেকে দক্ষিণ ভারত পর্যন্ত সমাজের বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছেন রাহুল এবং কংগ্রেস নেতৃত্ব।
মণিপুর থেকে এ বারের যাত্রা শুরুর কারণ নিয়ে কংগ্রেস নেতা বেণুগোপাল বলেন, ‘‘মণিপুর ছাড়া কি এই যাত্রা সম্ভব? মণিপুরের মানুষের দুঃখ এবং দুর্দশায় আমরা উদ্বিগ্ন। তাই রাজধানী ইম্ফল থেকে শুরু হবে যাত্রা। শেষ হবে ২০ মার্চ মুম্বই শহরে।’’
বস্তুত, মণিপুরে হিংসার ঘটনায় মোদী সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ধারাবাহিক আক্রমণ করেছেন রাহুল। মণিপুর ইস্যুতে সংসদও উত্তাল হয়েছে।
অন্য দিকে, ২২ জানুয়ারি রয়েছে অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বকেও অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং থেকে কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে থেকে কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী।
সনিয়া কিংবা অন্যান্য কংগ্রেস নেতা উপস্থিত থাকবেন কি না তা নিয়ে কোনও চূড়ান্ত ঘোষণা কংগ্রেস এখনও করেনি। তবে মন্দির উদ্বোধনের ঠিক আট দিন আগে কংগ্রেসের এই নতুন কর্মসূচি বেশ ‘তৎপর্যপূর্ণ’।
হাঁটার পাশাপাশি বাসযাত্রাও থাকছে ভারত ন্যায় যাত্রায়। ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ মোট চার হাজার ২০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছিল।
কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত ১৫০ দিন যাত্রা করেছিলেন রাহুল। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে রাহুলের নেতৃত্বাধীন সেই যাত্রা শ্রীনগরে শেষ হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি।