শুধু চারমিনার, গোলকোন্ডা দুর্গ, রামোজি ফিল্ম সিটি প্রভৃতি দর্শনীয় স্থানের জন্যই নয়, হায়দরাবাদে এমন প্রচুর খাবার পাওয়া যায়, যার সুনাম রয়েছে দেশ জুড়ে।
প্রথমেই মনে আসে হায়দরাবাদি দম বিরিয়ানির কথা। এ ছাড়া ইরানি চা থেকে অরিসেলু, সকিনালুর মতো বিখ্যাত খাবার নিজামের শহরে পাওয়া যায়। হায়দরাবাদ গেলে সকলে এক বার হলেও যা চেখে দেখার সুযোগ খোঁজেন।
এই খাদ্যাভিযান থেকে বাদ পড়লেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অমিত শাহ-সহ বহু মন্ত্রী। তবে, শহর জুড়ে ঘুরে বেড়িয়ে এই অভিযান চালাতে হয়নি তাঁদের। হায়দরাবাদের যত রকমের সুস্বাদু খাবার রয়েছে, এক ছাদের তলায় পরিবেশন করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন জি ইয়াদাম্মা। পেশায় তিনি এক জন খাদ্য সরবরাহকারী (ক্যাটারার)।
মোদী-সহ বিজেপির অন্য মন্ত্রীরা দু’দিনের জন্য হায়দরাবাদে জাতীয় কর্মসমিতি বৈঠকে যোগদান করেছিলেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মন্ত্রীরা আসবেন, এ কথা মাথায় রেখেই ইয়াদাম্মা খাবারের তালিকা প্রস্তুত করেছিলেন, যাতে কেউ কোনও অসুবিধায় না পড়েন।
ফলের রস থেকে শুরু করে শেষ পাতে মিষ্টিমুখ— কিছুই বাদ পড়েনি খাদ্যতালিকা থেকে। সব মিলিয়ে মোট ৫০টি খাবারের আয়োজন করেছিলেন ইয়াদাম্মা। সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, তিনি সিদ্ধিপেট জেলার গুদাতিপল্লী গ্রামের বাসিন্দা।
আনারস ও তরমুজ ফলের রসের পাশাপাশি ফ্রেশ লাইম সোডা, ইরানি চা ও কফির আয়োজন করা হয়েছিল।
এর সঙ্গে ছিল ভাজাভুজি। গাড়েলু, সকিনালু, মক্কা গুড়ালু, সারভা পিন্ডি প্রভৃতি পরিবেশন করা হয়েছিল। স্বাদ বাড়ানোর জন্য এগুলির সঙ্গে ছিল টম্যাটো, চিনাবাদাম, নারকেল ও লঙ্কার চাটনি।
এ ছাড়া মূল খাবার পরিবেশন করার আগে তিনি কিছু মুখরোচক খাবারেরও আয়োজন করেছিলেন। সেই তালিকায় ছিল— আলু ও চিজ দিয়ে তৈরি এক রকম পকোড়া, ভুট্টা দানা দিয়ে তৈরি শিঙারা, স্প্রিং রোল, স্যান্ডউইচ ইত্যাদি।
মূল খাবারের আকর্ষণ ছিল হায়দরাবাদের বিখ্যাত বিরিয়ানি। এ ছাড়াও রাখা হয় সাদা ভাত, দই-ভাত (কার্ড রাইস), পুদিনা রাইস, পুলিহরা, যা সমগ্র দক্ষিণ ভারতেই জনপ্রিয়।
আম ডাল, মেথি ও মুগ ডাল দিয়ে তৈরি ডাল ফ্রাই, টম্যাটো ও বরবটির তরকারি, আলু কোর্মা, ওকরা ছাড়াও লাউ, ঝিঙে, বেগুন দিয়ে বানানো তরকারিও স্থান পায় তালিকায়।
এ ছাড়াও তালিকায় জায়গা করে নেয় অন্ধ্র প্রদেশের বিখ্যাত গোঙ্গুরা আচার। শেষ পাতে চাটনির বাহার দেখেও মুগ্ধ হতে হয়। টম্যাটো চাটনি-সহ শশার চাটনি এবং লাউয়ের চাটনি— কিছুই বাদ পড়েনি।
অরিসেলু (চালের গুঁড়ো, ঘি ও গুড় দিয়ে তৈরি মিষ্টি), পরমান্নম্ (চাল ও গুড় দিয়ে তৈরি), সেওয়াই দিয়ে তৈরি পুডিং, মিষ্টি পুরন পোলি (পরোটা আকারের মিষ্টি)— শেষ পাতে মিষ্টিমুখের আয়োজন করা হয়েছিল।
রাঁধুনিদের সঙ্গে বিভিন্ন খাবার নিয়ে খুঁটিনাটি আলোচনাও করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ইন্ডিয়া টুডে জানাচ্ছে, বৈঠকে উপস্থিত দুই মন্ত্রী বলেছেন, তাঁরা এই বৈঠকে এসে তেলঙ্গানার ভোটযুদ্ধে কী কী করতে হবে, শুধু মাত্র এই বিষয়েই অবগত হননি, বরং রাজ্যের বিখ্যাত খাবারের সঙ্গেও তাঁদের পরিচিতি হয়েছে।