ছবির সাফল্যের পর বার বার প্রাণনাশের হমকি পেয়েছেন শাহরুখ খান। তাই মুম্বই পুলিশের তরফে ‘ওয়াই প্লাস’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পেলেন বলিউডের ‘বাদশা।’
চলতি বছরে মুক্তি পেয়েছে‘পাঠান’ এবং ‘জওয়ান’। শাহরুখের দু’টি ছবিই বিশ্বজোড়া বক্স অফিসে হাজার কোটির ক্লাবে নাম লিখিয়েছে। বলিপাড়া সূত্রে খবর, কেরিয়ারের সাফল্যই অভিনেতার বিপদ বাড়িয়েছে।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ‘পাঠান’ ছবির প্রচারের সময় থেকেই অন্ধকার জগৎ থেকে প্রাণনাশের হুমকি পেতে শুরু করেন শাহরুখ। এমনকি সমাজমাধ্যমেও হুমকি পান অভিনেতা। শাহরুখের সুরক্ষা দিতে তাঁকে ‘ওয়াই প্লাস’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দিয়েছে মুম্বই পুলিশ।
‘ওয়াই প্লাস’ ক্যাটেগরি অনুযায়ী শাহরুখের সঙ্গে তাঁর নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে সব সময় ছ’জন সশস্ত্র পুলিশ কম্যান্ডো উপস্থিত থাকবেন। এই ছ’জনকে মহারাষ্ট্র পুলিশের ‘স্পেশ্যাল প্রোটেকশন ইউনিট’ থেকে নির্বাচন করা হবে।
ছ’জন কম্যান্ডো-সহ মোট ১১ জন নিরাপত্তারক্ষী থাকবেন শাহরুখের সঙ্গে। যাতায়াতের জন্য একটি বিশেষ গাড়িও দেওয়া হবে।
শাহরুখের বাংলো ‘মন্নত’-এর সামনে সুরক্ষার জন্য ২৪ ঘণ্টা ৪ জন পুলিশকর্মীকে মোতায়েন করা হবে। তাঁদের সঙ্গে একে-৪৭ রাইফেল, গ্লক পিস্তল এবং এম-পি ৫ মেশিনগান থাকবে বলে জানা গিয়েছে।
এত দিন পর্যন্ত সুরক্ষার জন্য অভিনেতার সঙ্গে সব সময় দু’জন পুলিশ কনস্টেবল থাকতেন।
তবে শাহরুখ একা নন।বলিউডে বহু তারকা রয়েছেন, যাঁরা মুম্বই পুলিশের তরফে ‘ওয়াই প্লাস’, ‘এক্স’ এবং ‘এক্স প্লাস’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পান।
‘ওয়াই প্লাস’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তায় রয়েছেন সলমন খান। সিধু মুসেওয়ালার খুনের পর সলমনকে এই নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার।
ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী শেরার পাশাপাশি সলমনের নিরাপত্তার জন্য ২৪ ঘণ্টা হাজির থাকেন কমান্ডো-সহ ১২ জন পুলিশকর্মী।
‘ওয়াই প্লাস’ ক্যাটেগরির আগে ‘এক্স’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পেতেন সলমন। পরে অভিনেতার নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে মহারাষ্ট্র সরকার নিরাপত্তার পরিধি বাড়িয়ে দেয়।
‘ওয়াই প্লাস’ না হলেও ‘এক্স’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা রয়েছে অমিতাভ বচ্চনের।
আমির খান এবং অনুপম খেরের মতো বলি তারকাকেও মুম্বই পুলিশ ‘এক্স’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেয়।
অমিতাভ, আমির এবং অনুপমের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা তিন জন নিরাপত্তারক্ষী থাকেন। বলিপাড়া সূত্রে খবর, সারা দিনে তিন বার শিফট অনুযায়ী নিরাপত্তারক্ষীদের বদল হয়।
প্রাণনাশের হুমকি পাওয়ার কারণে বলিউডের ‘খিলা়ড়ি’ অক্ষয়কে ‘এক্স প্লাস’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মহারাষ্ট্র সরকার।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, আগে অমিতাভকে ‘ওয়াই’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়া হত। পরে তা কমিয়ে মহারাষ্ট্র সরকার অভিনেতাকে ‘এক্স’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
২০১৫ সালে প্রেক্ষাগৃহে ‘পিকে’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর প্রাণনাশের হুমকি পেতে শুরু করেন আমির। অভিনেতার সুরক্ষার জন্য মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে তাঁকে ‘এক্স’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয়।
২০২২ সালের মার্চ মাসে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্স’। এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন অনুপম। ছবিটি মুক্তির পর প্রাণনাশের হুমকি পেতে শুরু করেন অভিনেতা। সে কারণে তাঁকে ‘এক্স’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা প্রদান করা হয়।
কয়েকদিনের জন্য হলেও ‘ওয়াই’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয় ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্স’ ছবির পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীকে। ছবিমুক্তির পর অনুপমের পাশাপাশি প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছিলেন তিনিও।
‘ওয়াই প্লাস’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা সাময়িক ভাবে বলি অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতকেও দিয়েছিল মহারাষ্ট্র সরকার। ২০২০ সালে মহারাষ্ট্রের সাংসদ সঞ্জয় রাউতের সঙ্গে বিতর্কের কারণে মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে ‘ওয়াই প্লাস’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পান অভিনেত্রী।