photo gallery

North American X-15: বিমান তো নয়, যেন রকেট! শব্দের প্রায় সাত গুণ বেশি গতিতে ছুটেছে নর্থ আমেরিকান এক্স-১৫

১৯৫৯ সালে প্রথম যাত্রা শুরু করেছিল এই সুপারসনিক। তার পর থেকে ন’বছরে ১৯৯টি টেস্ট ফ্লাইটের সাক্ষী থেকেছে।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২২ ০৯:১২
Share:
০১ ১৫

হাওয়ার গতিতে নয়, তার থেকেও বহু গুণ বেশি জোরে ছুটতে পারত। চিরাচরিত বিমানের মতো দেখতে নয়। বরং অনেকটা বুলেটের আকারে তৈরি এ যান আদতে একটি রকেট। যার সঙ্গে লাগানো ককপিট। তাতে বসেই উড়ে যেত নর্থ আমেরিকান এক্স-১৫। দক্ষ চালকের হাতে পড়ে যার গতি ছাড়াতে পারত শব্দের থেকে প্রায় সাত গুণ বেশি গণ্ডির সীমানা।

০২ ১৫

আম আদমির জন্য তৈরি নয়। নর্থ আমেরিকান এক্স-১৫ বিমানটি আসলে রকেটচালিত সুপারসনিক বিমান। এক্স-প্লেন সিরিজের অঙ্গ হিসাবে যেটি গড়ে তুলেছিল আমেরিকার বায়ুসেনা এবং ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)।

Advertisement
০৩ ১৫

প্রথম বার ৬০ বছরের বেশি আগে আকাশ ছুঁয়েছিল নর্থ আমেরিকান এক্স-১৫। তবে মানবচালিত বিমানের মধ্যে এখনও এটিই সবচেয়ে দ্রুতগামী বলে পরিচিত।

০৪ ১৫

১৯৫৯ সালে প্রথম যাত্রা শুরু করেছিল এই সুপারসনিক। তার পর থেকে ন’বছরে ১৯৯টি টেস্ট ফ্লাইটের সাক্ষী থেকেছে। এক্স-১৫ ওড়ানোর জন্য ১২ জনের একটি দলই তৈরি করেছে আমেরিকার বায়ুসেনা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন এককালে চাঁদে পা রাখা নীল আর্মস্ট্রং-ও।

০৫ ১৫

শব্দের সঙ্গে কথা বলা এক্স-১৫ চালিয়ে কেমন অনুভূতি হয়েছিল? বিল ডানা নামে এক চালকের কথায়, ‘‘এটাই হল ‘আসল’ বিমান যা ওড়ে।’ নাসা-র আর্মস্ট্রং রিসার্চ ফ্লাইট সেন্টারের প্রধান ইতিহাসবিদ ক্রিস্টিয়ান গেলজার আবার অন্য অনুভূতির আভাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘সবচেয়ে বেশি স্পিড, সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা এবং সবচেয়ে বেশি ভয়— এ বিমান ওড়ালে এই সবেরই অনুভতি একসঙ্গে হয়েছিল।’’

০৬ ১৫

মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে পরীক্ষানিরীক্ষামূলক ভাবে ৬০টি বিমান তৈরি করেছিল আমেরিকার বায়ুসেনা এবং নাসা। তাদের মধ্যে ‘এক্স’ সিরিজের এই বিমানগুলিও রয়েছে। ১৯৫২ সাল থেকে এর উৎপাদন শুরুর সময় এক্স-১৫ সুপারসনিকের গতি ছিল ঘণ্টায় ৭০০ মাইল। তবে লক্ষ্য ছিল আরও উঁচু। শব্দের চেয়েও পাঁচ গুণ বেশি গতি। অর্থাৎ ম্যাক ৫ বা প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৪ হাজার মাইল।

০৭ ১৫

গেলজার জানিয়েছেন, গতির লক্ষ্যে পৌঁছতে ঝুঁকিও কম ছিল না। তাঁর কথায়, ‘‘এ ধরনের বিমানকে সাধারণ বিমানের তুলনায় আরও উঁচুতে উ়ড়াতে হবে। ভূপৃষ্ট থেকে আড়াই লক্ষ ফুট উঁচুতে ওড়ানোই লক্ষ্য ছিল আমাদের। আর সেটি যে বড়সড় ঝুঁকি নেওয়া, তা বলার নয়।’’ গেলজার জানিয়েছে, রাশিরায় সঙ্গে আমেরিকার ঠান্ডা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটেই এই বিমান তৈরির জন্য গবেষণা শুরু হয়ে গিয়েছিল।

০৮ ১৫

বিমানের গতির মতোই এর উড়ানোর পদ্ধতিও আলাদা। অন্যান্য বিমানের মতো এটি রানওয়েতে দৌ়ড়ে আকাশে রওনা দিত না। বরং একটি মোটরযান করে উঁচুতে নিয়ে গিয়ে কার্যত আকাশের বুকে ছুড়ে দেওয়া হত। ওই মোটরযানটি হল বি-৫২ বম্বার।

০৯ ১৫

কী ভাবে আকাশে উড়ত এক্স-১৫? গেলজার জানিয়েছেন, দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার এডওয়ার্ড বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকে নেভাদা বা ইউটা-র দিকে ঘণ্টায় ৬০০ মাইলেরও বেশি গতিবেগে উড়ে যেত বি-৫২ বম্বার। তবে একা নয়, পেটে থাকত এক্স-১৫। এর পর ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪৫ হাজার ফুট উঁচুতে নিয়ে গিয়ে এক্স-১৫’কে আকাশে ছেড়ে দিত। সে সময় আকাশে যেন গ্লাইডারের মতো ভাসতে থাকত ৫০ ফুট লম্বা সুপারসনিক। এর পরই ইঞ্জিন চালু করতেন সুপারসনিকের চালক।

১০ ১৫

বিমানের উড়ানের মতোই অভিনব এর জ্বালানীও। এর জ্বালানী হিসাবে তরল অক্সিজেনের সঙ্গে অ্যামোনিয়ার মিশ্রণ ব্যবহার করা হত।

১১ ১৫

আর পাঁচটা বিমানের থেকে যে এটি কতটা আলাদা, তা বোঝা যায় মিল্ট টমসন নামে এক চালকের কথায়। তিনি বলেন, ‘‘এটা অন্য বিমানগুলোর মতই আকাশে ভাসত। তবে যখন উপরে উঠতে শুরু করত, তখন মনে হত যেন কারও পরোয়া করে না।’’ মিল্ট আরও বলেন, ‘‘যে ক’টা বিমান উড়িয়েছি, তার মধ্যে একমাত্র এই বিমানের ইঞ্জিন বন্ধ থাকলে স্বস্তি পেতাম।’’

১২ ১৫

আকাশে ওড়ার মতোই নীচে নামার ক্ষেত্রে ভিন্ন চরিত্র দেখা গিয়েছিল এ সুপারসনিকের। রানওয়ে ছোঁয়ার জন্য বেশির ভাগ বিমান ঘণ্টায় ২০০ মাইল গতিতে প্রস্তুতি নেয়। তবে এক্স-১৫ তা শুরু করত ২০ হাজার ফুট উঁচুতে। সে সময় তার গতি ঘণ্টায় দেড় হাজার ফুট।

১৩ ১৫

এত গতিসম্পন্ন বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়েনি? এখনও পর্যন্ত ২০০টি উড়ানে মাত্র দু’বার জরুরি অবতরণ করতে হয়েছে এই সুপারসনিককে। তার মধ্যে ১৯৬৭ সালে মাইকেল অ্যাডামস নামে এক চালকের প্রাণও কেড়ে নিয়েছে।

১৪ ১৫

তবে ওই দু’টি দুর্ঘটনাকে বাদ দিলে এক্স-১৫’এর নয় বছরের জীবদ্দশায় বিশেয় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ১৯৬৮ সালের ডিসেম্বরে আকাশের পথ ছেড়ে দেয় নর্থ আমেরিকান এক্স-১৫।

১৫ ১৫

অবসর নেওয়ার আগের বছর একটি রেকর্ড গড়ে নেয় সেটি। ’৬৭-এ এই সুপারসনিকের ককপিটে বসে পিট নাইট একে উড়িয়েছিলেন ঘণ্টায় ৪ হাজার ৫২০ মাইল বা ম্যাক ৬.৭ বেগে। অর্থা়ৎ শব্দের থেকে ৬.৭ গুণ বেশি জোরে আকাশে ছুটেছিল নর্থ আমেরিকান এক্স-১৫!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement