Nifty 50

শেষ পাঁচ দিনে ‘পিঞ্চ হিটিং’! পাঁচ বছরে স্লগ ওভারে কতটা লাভের মুখ দেখিয়েছে নিফটি ৫০?

বছরের শেষ পাঁচটি লেনদেনের দিনে কতটা লাভের মুখ দেখেন নিফটি ৫০-এর বিনিয়োগকারীরা? গত পাঁচ বছরের তথ্যের হদিস দিল আনন্দবাজার অনলাইন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:৪৭
Share:
০১ ১৬

বিদায় নেওয়ার পথে ২০২৪। চলতি বছরে আর মাত্র দু’দিন শেয়ার বাজারে লেনদেনের সুযোগ পাবেন লগ্নিকারীরা। স্টকের সূচক অস্থির থাকায় ‘স্লগ ওভার’-এর ফলাফল নিয়ে ইতিমধ্যেই তুঙ্গে উঠেছে জল্পনা। শেষ দু’দিনে শেয়ার কেনাবেচায় কতটা পকেট ভরবে, দোলাচলের মধ্যেও তার চুলচেরা হিসাব কষছেন বিনিয়োগকারীরা।

০২ ১৬

এ ব্যাপারে ২০২০ সাল থেকে বাজারের ফলাফল সংক্রান্ত চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন বিশ্লেষকেরা। সেখানে চোখ রাখলে দেখা যাবে, গত পাঁচ বছরে শেষ পাঁচটি লেনদেনের সেশনে নিফটি ৫০-এর সূচক বৃদ্ধি পেয়েছে দু’শতাংশ। কিন্তু, এ বছরের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।

Advertisement
০৩ ১৬

চলতি বছরের শেষ শুক্রবার, (২৭ ডিসেম্বর) ঊর্ধ্বমুখী ছিল নিফটি ৫০। দিনের শেষে ২৩,৮১৩.৪০ পয়েন্টে দৌড় থামিয়েছে এই শেয়ার সূচক। এতে প্রায় ৬৪ পয়েন্টের বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। অর্থাৎ নিফটি বেড়েছে ০.২৭ শতাংশ। কিন্তু, তার পরও বিগত পাঁচ বছরের মতো এ বারও এটি একই ফল করবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান বাজার বিশ্লেষকেরা।

০৪ ১৬

এ বছরের শেষ পাঁচ দিনের প্রথম সেশনেই (পড়ুন ২৪ ডিসেম্বর) দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ চার শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল নিফটির সূচক। কিন্তু, তার পরই হু হু করে নামতে থাকে স্টকের লেখচিত্র। ফলে ফের আগের জায়গায় ফিরে যায় বাজার। এর ঠিক আগের সপ্তাহেই সেখানে ১,২০০ পয়েন্টের পতন দেখা গিয়েছে।

০৫ ১৬

২০২০ সালের শেষ দিনে ১৩ হাজার ৯৮২ পয়েন্টে বন্ধ হয় নিফটি। ওই বছরের শেষ পাঁচটি লেনদেনের দিনে সর্বাধিক লাভ করেন বিনিয়োগকারীরা। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (এনএসই) বৃদ্ধি পেয়েছিল ২.৮ শতাংশ। ঠিক তার পরের বছর, অর্থাৎ ২০২১ সালে লাভের অঙ্ক কমে দাঁড়ায় ২.০৬ শতাংশ। সে বার বছরের শেষ দিনে নিফটি থেমেছিল ১৭ হাজার ৩৫৪ পয়েন্টে।

০৬ ১৬

গত পাঁচ বছরের মধ্যে ২০২২ সালেই সবচেয়ে কম লাভবান হয়েছেন লগ্নিকারীরা। ওই বছরের শেষ পাঁচ দিনে এনএসই বৃদ্ধি পায় মাত্র ১.৬৮ শতাংশ। তথ্য বলছে, ১৮ হাজার ১০৫ পয়েন্টে গিয়ে বছর শেষ করেছিল নিফটি। গত বছরের (পড়ুন ২০২৩) শেষ পাঁচ দিনে ২.২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায় বাজার। আর নিফটি বছর শেষ করে ২১ হাজার ৭৩১ পয়েন্টে।

০৭ ১৬

বছরের শেষ পাঁচ দিনে লোকসানের নজিরও কিন্তু রয়েছে। গত ১৩ বছরের মধ্যে মাত্র দু’বার ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন লগ্নিকারীরা। ২০১১ এবং ২০১৯ সালে বছরের শেষ পাঁচটি লেনদেনের দিনে বাজার বৃদ্ধি পাওয়ার বদলে নিম্নমুখী হয়েছিল। ফলে ঋণাত্মক থেকেছিল নিফটির সূচক।

০৮ ১৬

২০১১ সালে ৪,৬২৪ পয়েন্টে দৌড় থামায় নিফটি। ওই বছর শেষ পাঁচটি কেনাবেচার দিনে বাজার কমেছিল ১.৯০ শতাংশ। ২০১৯ সালে অবশ্য কমে যায় লোকসান। সে বার শেষ পাঁচ দিনে ০.৭৭ শতাংশ ঋণাত্মক ছিল বাজার। আর ১২ হাজার ১৬৮ পয়েন্টে বছর শেষ করেছিল নিফটি।

০৯ ১৬

এ ছাড়া ২০১৬ সালেও শেষ পাঁচ দিনে ভাল রিটার্ন পেয়েছিলেন লগ্নিকারীরা। ওই বছর এনএসই বৃদ্ধি পেয়েছিল ২.৫১ শতাংশ। ফলে ৮,১৮৬ পয়েন্টে উঠে থেমে যায় নিফটির দৌড়। আর সবচেয়ে কম লাভের বছরটি হল ২০১৪ সাল। সে বার শেষ পাঁচ দিনে মাত্র ০.১৯ শতাংশ বেড়েছিল এনএসই। বছরশেষে ৮, ২৮৩ পয়েন্টে গিয়ে থেমেছিল নিফটি।

১০ ১৬

এ বছর এখনও পর্যন্ত নিফটি প্রায় ন’শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু, উদ্বেগের বিষয় হল সেপ্টেম্বর থেকে এটি সবুজ ক্ষেত্রে নেই। গত বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পায় এনএসই। আর ২০২২ সালে ৪.৩৩ শতাংশ লাভের সঙ্গে দৌড় থামিয়েছিল নিফটি ৫০।

১১ ১৬

বিশেষজ্ঞদের কথায়, এ বছরের গোড়ার দিকে কর্পোরেট আয় এবং গার্হস্থ্য খরচ বৃদ্ধি এবং স্থিতিশীল মাইক্রো ল্যান্ডস্কেপ দেখতে পাওয়া গিয়েছে। ফলে, সেপ্টেম্বরে সর্বকালীন উচ্চতা ছুঁয়ে ফেলে নিফটি। বছরের নবম মাসে ২৬ হাজার ২৭৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছিল এই শেয়ার সূচক।

১২ ১৬

কিন্তু, তার পর থেকে ভূ-রাজনৈতিক সমস্যা ভারতের বাজারে কুপ্রভাব ফেলেছে। পূর্ব ইউরোপে এবং পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধ এর মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়া নভেম্বরে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবং তার পর যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সুদ কমানোর সিদ্ধান্তের খেসারতও এ দেশের বাজারকে দিতে হচ্ছে বলে মনে করেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।

১৩ ১৬

গত দু’মাসে সর্বকালীন উচ্চতা থেকে ১১ শতাংশ সংশোধন করেছে এনএসই। এই সংশোধনের ফলে নিফটিতে ২০২০ সালের কোভিড অতিমারির পর তৃতীয় সর্বোচ্চ পতন দেখা গিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে বিদেশি লগ্নিকারীরা এ দেশের বাজার থেকে অনেকটাই মুখ ফিরিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

১৪ ১৬

ব্রোকারেজ সংস্থাগুলির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের শেষ দু’মাসে প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকার বেশি স্টক বিক্রি করে দিয়েছেন বিদেশি লগ্নিকারীরা। এই বিনিয়োগকারীরা টাকা তুলে নেওয়ায় এনএসইর সূচক নিম্নমুখী হয়েছে। এর জন্য দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়কে দায়ী করেছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।

১৫ ১৬

নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ট্রাম্প। তিনি ভোটে জেতা ইস্তক ডলারের নিরিখে টাকার দাম পড়েই চলেছে। বছরশেষে টাকার মূল্য ৮৬তে গিয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। টাকার দামের এ-হেন পতনের জেরে ভারতীয় বাজারে কমছে লাভ। বিশ্লেষকদের দাবি, এর জন্যই এখান থেকে সরে যাচ্ছেন লগ্নিকারীরা।

১৬ ১৬

বিশেষজ্ঞদের একাংশের অনুমান, এ বছর ২৪ হাজার পয়েন্টে শেষ করবে নিফটি। সে ক্ষেত্রে শেষ পাঁচ দিনে এক শতাংশ লাভ করবেন এনএসইর বিনিয়োগকারীরা। ২০১৯ সালের পর এটাই সবচেয়ে ধীর বৃদ্ধি বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement