নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি যখন মুম্বইয়ে এসেছিলেন, তখন তাঁর কাছে অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই ছিল না। মাথা গোঁজার ঠাঁই তো দূর অস্ত্। সেই নওয়াজ এখন মুম্বইয়ে নিজের বাংলো বানিয়েছেন। নাম দিয়েছেন ‘নবাব’।
বাংলোটি নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে বলিউডে। নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ছবি। নওয়াজ নিজেও বাংলোর একটি ছবি ভাগ করে নিয়েছেন ভক্তদের সঙ্গে। যদিও সেই ছবির বিবরণে তাঁর বাড়ি নিয়ে একটি কথাও বলেননি।
তবে বলিউডে কোনও খবরই চাপা থাকে না। নওয়াজ না বললেও তাঁর ‘নবাব’-এর খুঁটিনাটি অনেক তথ্যই প্রকাশ্যে এসেছে। যার মধ্যে একটি এই যে, বাংলোটি মনের মতো করে বানানোর জন্য তিন বছর অপেক্ষা করেছেন নওয়াজ।
একালে যে খানে ২৪ ঘণ্টায় বাড়ি তৈরি হচ্ছে বলে খবর হচ্ছে, সেখানে একটি বাংলো বানাতে তিন বছর লেগেছে শুনলে চমকে যেতে পারেন। তবে নওয়াজ নাকি তাঁর নবাবকে মনের মতো করে সাজাতে ইচ্ছে করেই সময় নিয়েছেন।
এমনও জানা গিয়েছে যে বাড়ির প্রতিটি ঘর, বারান্দা, দেওয়ালের বিন্যাস নিজেই ঠিক করেছেন নওয়াজ। তিনিই এই বাড়ির অন্দরসজ্জা এবং বহির্সজ্জার পরিকল্পক।
বাড়িটি বানাতে কত খরচ হয়েছে, তা অবশ্য জানা যায়নি। তবে যাঁরা বাড়িটি দেখেছেন, তাঁরা নাকি শাহরুখ খানের ‘মন্নত’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন নওয়াজের বাংলোর।
তবে বাংলোটি প্রাসাদোপম এবং বিলাসবহুল হলেও তার অনুপ্রেরণা নাকি আদতে ‘স্যাক্রেড গেমস’ অভিনেতার ছোটবেলার বাড়ি থেকে নেওয়া।
উত্তরপ্রদেশের বুধনার বাসিন্দা নওয়াজ বড় হয়েছেন সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে। তাঁর বাবা ছিলেন কৃষক। তবে এককালে নওয়াজের পরিবারের জমিদারিও ছিল। উত্তরপ্রদেশে তাঁদের লম্বরদার বলা হত। ক্ষমতাশালী পরিবারকেই এই নামে ডাকা হয়।
নওয়াজের ছোটবেলার বেশির ভাগটাই কেটেছে উত্তরাখণ্ডে। তবে উত্তরপ্রদেশে তাঁদের ভিটে বাড়ির সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল জমিদারি মেজাজ। নওয়াজ ঘনিষ্ঠরা এক সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, বুধনার ছোটবেলার স্মৃতিই নিজের নতুন বাড়িতে ফিরে পেতে চেয়েছেন নওয়াজ।
বাড়ির নাম ‘নবাব’। সেই নামও আসলে নওয়াজ রেখেছেন বাবা নবাবউদ্দিন সিদ্দিকির নামে। যিনি ২০১৫ সালে প্রয়াত হন।
নওয়াজের বাড়ির যে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে বাড়িতে ধবধবে সাদা পাথরের কারুকাজ। প্রাসাদ বানাতে শ্বেতপাথর ব্যবহার করেছেন অভিনেতা।
বলিউডে টানা পরিশ্রম করে সুযোগ পাওয়া আর সুযোগ পেতে বার বার ঠোক্কর খাওয়া অভিনেতা নওয়াজের কাছে তা অসম্ভবও নয়। এখন বছরে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেন নওয়াজ।
এককালে ভাদোদরায় ওষুধের দোকানে কাজ করতেন। সেই নওয়াজ এখন ১৫০ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক।
দামি গাড়ির শখও আছে অভিনেতার। মার্সিডিজে চড়েন। আবার ফোর্ডের এসইউভি এন্ডেভারও কিনেছেন সম্প্রতি।
তবে আফশোস একটাই, মুম্বইয়ে নবাব নওয়াজের শ্বেতপাথরের নবাবখানায় কোনও মুমতাজ নেই আর। ২০২০ সাল থেকে খাতায় কলমে অভিনেতা একা।