হিন্দি ফিল্মজগতে সবেমাত্র আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। কেরিয়ারের প্রথম ছবিই ফ্লপ। কেরিয়ারের শুরুতেই পর পর আটটি ছবি বক্স অফিসে ব্যর্থ হয় অভিনেত্রীর। কিন্তু হাল ছাড়েননি তিনি। বলিপাড়ায় তিনিই প্রথম ২০০ কোটি টাকার ছবি বক্স অফিসে উপহার দেন। তিনি আর কেউ নন, মাধুরী দীক্ষিত নেনে।
নব্বইয়ের দশকে সর্বোচ্চ উপার্জনকারী অভিনেত্রীদের তালিকায় শীর্ষে নাম লিখিয়েছিলেন মাধুরী। কেরিয়ারের শুরু খুব একটা সুখকর না হলেও পরে একের পর এক হিট ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, নব্বইয়ের দশকে নাকি শাহরুখ খান এবং সলমন খানের চেয়েও বেশি পারিশ্রমিক আদায় করেছিলেন মাধুরী।
১৯৮৪ সালে ‘অবোধ’ ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় পা রেখেছিলেন মাধুরী। এই ছবিতে বাঙালি অভিনেতা তাপস পালের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। কিন্তু বক্স অফিসে এই ছবি ব্যর্থ হয়।
প্রথম ছবি মুক্তির প্রায় এক বছর পর মাধুরীর পরবর্তী ছবি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। ১৯৮৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘আওয়ারা বাপ’ ছবিতে রাজেশ খন্নার সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায় মাধুরীকে। এই ছবিও বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে।
কেরিয়ারের দ্বিতীয় ছবি ফ্লপ হওয়ার পর আরও ছ’টি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান মাধুরী। কিন্তু কোনও ছবিই ভাল ব্যবসা করতে পারেনি।
‘স্বাতী’, ‘মানব হত্যা’, ‘হেফাজত’, ‘উত্তর দক্ষিণ’, ‘মোহরে’ এবং ‘খতরো কি খিলাড়ি’ ছবিতে অভিনয় করেন মাধুরী। কিন্তু এই ছ’টি ছবিও বক্স অফিসে তেমন সাড়া ফেলেনি।
কেরিয়ারে পর পর আটটি ছবি ব্যর্থ হওয়ার পরেও মুষড়ে পড়েননি মাধুরী। অভিনয় চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কেরিয়ার শুরুর চার বছরের মাথায় বলিপাড়ায় নিজের পরিচিতি তৈরি করতে সফল হন মাধুরী।
১৯৮৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দয়াবান’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান মাধুরী। এই ছবিতে বিনোদ খন্না, ফিরোজ় খান এবং অমরীশ পুরীর মতো অভিনেতাদের সঙ্গে অভিনয় করেন তিনি। ছবিটি বক্স অফিসে ভাল ব্যবসা করে। অভিনেত্রী হিসাবেও সুনাম ছড়িয়ে পড়ে মাধুরীর।
১৯৮৮ সালে মাধুরীর কেরিয়ার অন্য দিকে মোড় নেয়। সেই বছর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘তেজ়াব’ ছবিটি। এই ছবিতে অনিল কপূরের সঙ্গে অভিনয় করেন মাধুরী। ছবিটি বক্স অফিসে দুর্দান্ত ব্যবসা করে। অনিল এবং মাধুরীর জুটিও পছন্দ হয় দর্শকের।
নব্বইয়ের দশকে ‘দিল’, ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’, ‘দিল তো পাগল হ্যায়’, ‘সাজন’, ‘থানেদার’, ‘খলনায়ক’, ‘রাজা’র মতো বহু হিট ছবিতে অভিনয় করেন মাধুরী।
সলমনের বিপরীতে ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ ছবিতে অভিনয় করে বলিপাড়ায় সাড়া ফেলে দেন মাধুরী। ছ’কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হয় ছবিটি।
‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ ছবিটি মুক্তির পর সারা ভারতে ৭২ কোটি টাকা আয় করে। বিশ্ব জুড়ে এই ছবির মোট উপার্জন ছিল ২১০ কোটি টাকা।
নব্বইয়ের দশকে একের পর এক হিট ছবিতে অভিনয় করার পর পারিশ্রমিক বৃদ্ধি পায় মাধুরীর। বলিপাড়া সূত্রে খবর, সেই সময় প্রতি ছবিতে অভিনয়ের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক আদায় করতেন মাধুরী।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, মাধুরী যে সময় ৫০ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক আদায় করতেন সে সময় শাহরুখ প্রতি ছবিতে অভিনয়ের জন্য ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতেন।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ ছবিতে অভিনয় করে ২.৭ কোটি টাকা উপার্জন করেছিলেন মাধুরী। কানাঘুষো শোনা যায় সলমনের চেয়েও বেশি পারিশ্রমিক আদায় করেছিলেন অভিনেত্রী।
অভিনয় থেকে কয়েক বছরের বিরতির পর আবার ফিরে আসেন মাধুরী। ২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দ্য ফেম গেম’ নামের ওয়েব সিরিজ়ে শেষ অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।