গায়ে রাজবেশ, মাথায় সোনালি মুকুট, গলায় মণিমাণিক্যের মালা। মনে পড়ছে রমানন্দ সাগরের তৈরি রামায়ণের চরিত্রগুলি? রাম, লক্ষণ এবং সীতার চরিত্রে অরুণ গোভিল, সুনীল লহরী, দীপিকা চিখলিয়া যেন প্রতিটি পরিবারের আপনজনে পরিণত হয়েছিলেন। পরিচালক রামায়ণের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের এমন আঙ্গিক এবং বেশভূষায় সাজিয়েছিলেন যে, অরুণ-সুনীল-দীপিকাকে সে সময়ে রাস্তায় দেখতে পেলেও তাঁদের পায়ে ঢিপঢাপ মাথা ঠুকতেন ভক্তেরা। পর্দায় তাঁদের পোশাক, শালীনতা এবং বাচনভঙ্গি দেখলে এমনিই মাথা নত হত ভক্তকুলের। রমানন্দের ছোঁয়ায় পর্দার রাম-লক্ষণ-সীতা-হনুমান হয়ে উঠেছিলেন সত্যিকারের দেবদেবী। কিন্তু সেই রমানন্দের নাতনিই বিশ্বাসী নন পোশাক দিয়ে অঙ্গ ঢেকে রাখায়!
সাক্ষী চোপড়া। রমানন্দের প্রপৌত্রী সাক্ষী একজন জনপ্রিয় সমাজমাধ্যম তারকা। ইনস্টাগ্রাম এবং টিকটকে তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা আকাশছোঁয়া।
নিজেকে গায়িকা এবং গীতিকার হিসাবে পরিচিতি দিতে পছন্দ করেন সাক্ষী। তবে তিনি তাঁর কণ্ঠ কিংবা গান লেখার জন্য বিখ্যাত হননি। তিনি বিখ্যাত সম্পূর্ণ অন্য কারণে।
সমাজমাধ্যমের বিতর্কিত তারকা উরফি জাভেদের মতো সাক্ষীও ধরা দেন খোলামেলা পোশাকে। তাঁর পোশাকের দৈর্ঘ্য উরফির থেকেও কম।
অনেক ছবিতেই সাক্ষীকে দেখা যায় কেবল অন্তর্বাস বা বিকিনি পরে। কিছু ছবিতে আবার সেটুকুও থাকে না। অনেক সময় আবার এমন সব পোশাক পরে দেখা যায়, যার পাতলা আচ্ছাদন ভেদ করে চোখ অনায়াসে চলে যায় অনাবৃত শরীরে।
সাক্ষীর সেই সব ছবি চাক্ষুষ করতে প্রতিনিয়ত তাঁর সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্টগুলিতে ভিড় জমান লক্ষ লক্ষ অনুরাগী।
সেই সব ছবিতে মন্তব্য করা মানুষের সংখ্যাও কম নয়। অনেকে আবার তাঁর পোশাক পরার ধরনের জন্য তাঁকে নিয়ে নানা ধরনের কটূক্তিও করেন। রমানন্দের নাতনি হয়ে কী করে তিনি এই ধরনের খোলামেলা জামাকাপড় পরেন, সেই প্রশ্নও করেন অনেকে।
তবে নিন্দকদের কটূক্তি এবং কটাক্ষ শুনে কখনও দমতে দেখা যায়নি সাক্ষীকে। উরফির মতো তিনি নিন্দকদের জবাব দিতে পছন্দ করেন না। তবে নিজস্ব মতামত মাঝেমাঝেই সমাজমাধ্যমে এসে উজাড় করে দেন।
সাক্ষীর দাবি, মহিলাদের বক্ষযুগল উন্মুক্ত করে ঘুরে বেড়ানোয় বা ছবি তোলায় কোনও অশালীনতা নেই। আগেকার দিনেও মহিলারা শাড়ি দিয়েই নিজেদের বক্ষযুগল ঢেকে রাখতেন। আলাদা করে ব্লাউজ জাতীয় কিছু পরতেন না। আরও আগে মহিলারা সেটুকুও করতেন না। ছেলেদের মতোই বক্ষ উন্মুক্ত রেখেই ঘুরে বেড়াতেন।
তাই মহিলাদের আপাদমস্তক ঢেকে রাখার প্রয়োজনীয়তা নেই বলেই মনে করেন সাক্ষী।
সাক্ষীর সাহসী চরিত্রের জন্য তাঁকে রিয়্যালিটি শো বিগ বসের ১৪ নম্বর সিজ়নে অংশগ্রহণ করার আর্জি জানানো হয়েছিল নির্মাতাদের তরফে। তবে সাক্ষী সেই প্রস্তাবে সাড়া দেননি।
রমানন্দের নাতনি মীনাক্ষী সাগরের মেয়ে সাক্ষী। মীনাক্ষী এক জন চলচ্চিত্র প্রযোজক। তিনি রমানন্দের কনিষ্ঠ পুত্র তথা প্রযোজক মতি সাগরের মেয়ে।
প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ‘জো জিতা ওহি সিকন্দর’ খ্যাত অভিনেতা মামিক সিংহকে ২০১৮ সালে বিয়ে করেন মিনাক্ষী।
সাক্ষীর শৈশব মুম্বইয়ে কাটলেও, বর্তমানে তিনি আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেসের বাসিন্দা। সেখানে তিনি এক জন মডেল হিসাবে কাজ করেন। সঙ্গীত জগতে প্রবেশ করতেও চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি।
ইনস্টাগ্রামে সাক্ষীর অনুরাগীর সংখ্যা সাড়ে ৫ লক্ষেরও বেশি। পাশাপাশি একটি দুষ্টু ওয়েবসাইটে মাঝেমধ্যে টাকার বিনিময়ে ছবি, ভিডিয়ো আপলোড করেন সাক্ষী।
ইউটিউবেও সাক্ষীর প্রায় ৩০ হাজার অনুরাগী রয়েছে। সাক্ষী তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে মাত্র দু’টি ভিডিও আপলোড করেছেন। আর তাতেই তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা এত।