শেষ ভাল যার সব ভাল তার। কিন্তু যদি পরিণতি ভাল না হয় তা হলে কোনও কিছুই সম্পূর্ণ হয় না। ভালবাসার ক্ষেত্রেও তাই। কিছু কিছু ভালবাসা যে শুধু পূর্ণতাই পায় না তা নয়, বরং তার পরিণতি হয় ভয়ঙ্কর। ভারতের বুকে ঘটেছিল ভালবাসার এমনই সব ঘটনা যার পরিণতিকে ভয়ঙ্কর বললেও কম বলা হয়।
২০২০ সালের মার্চ। উত্তরপ্রদেশে ৪২ বছর বয়সি এক মহিলাকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় এক দম্পতিকে।
ওই মহিলার সঙ্গে অভিযুক্ত সন্দীপ কৌশিকের বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। বেশ কিছু দিন ধরে একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কে থাকার পর ওই মহিলা সন্দীপকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। সন্দীপকে বিবাহবিচ্ছেদের জন্যও চাপ দিতে থাকেন।
এই চাপ সহ্য করতে পারেননি সন্দীপ। ওই মহিলাকে খুনের দায়ে গ্রেফতার করা হয় সন্দীপকে। তিনি পরে স্বীকার করেন যে, তাঁর স্ত্রীও এই পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন। গ্রেফতার হন তাঁর স্ত্রীও।
জেরায় সন্দীপ জানান, ওই মহিলাকে দেখা করার জন্য বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে দু’বার গুলি করেন তিনি। এর পরই তাঁর মৃত্যু হয়।
সম্প্রতি গাজিয়াবাদে লিভ-ইন সঙ্গীকে খুন করেন এক মহিলা। লিভ-ইনে থাকা প্রেমিক তাঁকে বিয়ে করতে অস্বীকার করার পরই এই চরম সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
অভিযোগ ওঠে, প্রেমিকের গলা কেটে তাঁকে খুন করে পরে মৃতদেহ ট্রলি ব্যাগে ভরেন অভিযুক্ত।
অভিযুক্ত প্রীতি শর্মা এর পর এই ট্রলি ব্যাগটি একটি চলন্ত ট্রেনের ভিতরে রেখে দিয়ে আসেন।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে যে অভিযুক্ত প্রীতির আগেও এক বার বিয়ে হয়েছিল। ২০১৮ সালে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়।
এর পরই লিভ-ইনে থাকা শুরু করেন প্রীতি। তাঁর প্রেমিক তাঁকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। তবে পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার কারণেই প্রীতি নিজের লিভ-ইন প্রেমিককে খুন করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
২০২২ সালের ২৪ মে মহারাষ্ট্রের ঠানের ভিওয়ান্ডিতে এক স্বামী শুধু মাত্র ভাত রান্না না করে রাখার জন্য স্ত্রীকে পিটিয়ে খুন করেন।
পুরনো জিনিসের ব্যবসা করা অভিযুক্ত শঙ্কর ওয়াঘমারের সঙ্গে এই ঘটনার এক বছর আগে জ্যোৎস্নার বিয়ে হয়। প্রতিবেশীরা দাবি করেন বিয়ের প্রথম দিকে দম্পতির মধ্যে সম্পর্ক ভাল থাকলেও পরে তাঁদের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন জ্যোৎস্না অসুস্থ ছিলেন। আর সেই কারণেই তিনি রান্না করতে পারেননি। কাজ থেকে ফিরে ওয়াঘমারে দেখেন, স্ত্রী রান্না করেননি। এর পরেই রাগের মাথায় জ্যোৎস্নাকে পিটিয়ে খুন করেন ওয়াঘমারে।
স্ত্রীকে জিন্স পরতে দিতে চাননি স্বামী। সেই নিয়ে কথা কাটাকাটি। অভিযোগ, সেই সময় স্বামীকে কুপিয়ে খুন করেন স্ত্রী। এই বছরেরই ১৬ জুলাই ঝাড়খণ্ডের জামতারা জেলার জোড়ভিথা গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযুক্ত মহিলার নাম পুষ্প হেমব্রম।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন রাতে পাশের গোপালপুর গ্রামে মেলা দেখতে গিয়েছিলেন পুষ্প। তাঁর পরনে ছিল জিন্স। মেলা দেখে বাড়ি ফিরে আসার পর স্ত্রীকে জিন্স পরে থাকতে দেখে বেজায় চটে যান পুষ্পের স্বামী। জিন্স পরা নিয়ে দম্পতির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় শুরু হয়।
পুষ্পের স্বামী বার বার জিজ্ঞাসা করতে থাকেন, কেন তিনি জিন্স পরে বাড়ির বাইরে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, এর পর ছুরি নিয়ে স্বামীর দিকে তেড়ে যান পুষ্প। স্বামীকে ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি আক্রমণ করেন তিনি। চিৎকার শুনে পরিবারের অন্য সদস্যরা এসে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
অম্বেডকর জয়ন্তী উদ্যাপন করতে গিয়েছিলেন স্ত্রী। সেই অনুষ্ঠান থেকে দেরি করে বাড়ি ফেরায় স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করেন স্বামী। ২০১৬ সালে মুন্বইয়ে এই ঘটনাটি ঘটে। ৪৮ বছর বয়সি অভিযুক্ত পেশায় গাড়ির চালক ছিলেন।
স্ত্রী দেরি করে বাড়ি ফিরে আসার পর দম্পতির মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে বিতণ্ডা চরম রূপ নেয়। রান্নাঘর থেকে ছুরি তুলে নিয়ে এসে স্ত্রীকে কোপাতে শুরু করেন ওই ব্যক্তি। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের তরফে দাবি করা হয় যে, তাঁদের সম্পর্কের পরিণতি এমন দুর্ভাগ্যজনক হলেও একে অপরকে ভালবেসেই বিয়ে করেছিলেন তাঁরা।