মাঘ মাসে জাঁকিয়ে বসেছে শীত। সোমবার থেকেই তাপমাত্রা এক ধাক্কায় তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে গিয়েছে। সোমবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। মঙ্গলবার তার আরও পারদপতন হয়েছে।
মঙ্গলবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত মঙ্গলবারই মরসুমের শীতলতম দিন।
চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার সেই তাপমাত্রা কমে দাঁড়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
আলিপুর হাওয়া অফিসের মতে, নতুন বছরের শীতলতম দিন ছিল সেটি। কিন্তু মঙ্গলবার আরও তাপমাত্রা কমে কলকাতার। তাই এখনও পর্যন্ত মরসুমের শীতলতম দিন সেটিই।
শুধু কলকাতায় নয়, রাজ্য জুড়ে বহু জেলায় তাপমাত্রা কমে দশ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নেমে গিয়েছে। উত্তরের জেলাগুলি থেকে তাপমাত্রার নিরিখে খুব একটা পিছিয়ে নেই দক্ষিণের জেলাগুলি। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দার্জিলিং এবং পুরুলিয়া জেলার তাপমাত্রার মধ্যে খুব হেরফের নেই।
মঙ্গলবার দার্জিলিং জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার দার্জিলিঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পুরুলিয়া জেলায় মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রার দিক থেকে উত্তরের দার্জিলিং থেকে কোনও অংশে কম যাচ্ছে না পুরুলিয়া।
পুরুলিয়ার পাশাপাশি তাপমাত্রা কমেছে অন্যান্য জেলাতেও। মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মরসুমের শীতলতম দিনে শিলিগুড়ির চেয়েও তাপমাত্রা কম মুর্শিদাবাদ জেলার। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দশ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে তাপমাত্রা রয়েছে কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার জেলার পাশাপাশি বাঁকুড়া এবং বর্ধমান জেলায়।
মঙ্গলবার কালিম্পং জেলার চেয়েও তাপমাত্রা কম রয়েছে জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার জেলায়। এই দুই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে ৭.২ এবং ৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কালিম্পং জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আট ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কালিম্পং জেলার মতোই আট ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে রয়েছে বাঁকুড়া এবং বর্ধমান জেলার তাপমাত্রা। মঙ্গলবার দুই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে ৮.৪ এবং ৮.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মঙ্গলবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে থাকতে পারে। সোমবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার তুলনায় ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম।
তাপমাত্রা কমার পাশাপাশি রয়েছে বৃষ্টির পূর্বাভাসও। মঙ্গলবার এবং বুধবার দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলার কয়েকটি এলাকায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। রয়েছে তুষারপাতের সম্ভাবনাও। উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলায়।
মঙ্গলবার হালকা বৃষ্টিতে ভিজতে পারে পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং বাঁকুড়া জেলার কয়েকটি এলাকা।
বুধবার দক্ষিণবঙ্গের আরও কিছু জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বুধবার হালকা বৃষ্টিতে ভিজতে পারে কলকাতার পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া এবং মালদহ জেলার কয়েকটি এলাকা।
বৃহস্পতিবারও বৃষ্টির রেশ থাকতে পারে দক্ষিণের কয়েকটি জেলায়। ওই দিন রাজ্যের সমুদ্র উপকূলবর্তী দুই জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের কয়েকটি এলাকায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে।
কলকাতা-সহ রাজ্যের সমস্ত জেলাগুলিতে তাপমাত্রা নীচের দিকেই থাকবে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তবে তাপমাত্রার এই পতন বেশি দিন স্থায়ী হবে না।
মনে করা হচ্ছে অসময়ের বৃষ্টির জেরে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ তৈরি হলেও তাপমাত্রা বাড়বে। সব জেলাতেই সকালের দিকে কুয়াশা থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
আগামী দুই থেকে তিন দিন পর রাজ্যে আবার তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়তে পারে আগামী কয়েক দিনে।