মাত্র ১৭ বছর বয়সে দেশের উঠতি পপ তারকা ও মডেলদের মধ্যে অন্যতম মুখ হিসাবে পরিচিতিলাভ করেছিলেন। দক্ষিণ কোরিয়ার বিখ্যাত পপ ব্যান্ড ‘বাবা’য় যোগ দেওয়ার পর খ্যাতির চূড়ায় পৌঁছে যান। ২০১৭ সালে কোরিয়ান ব্যান্ডে আত্মপ্রকাশ করেন শেউন ঘা।
‘বাবা’র সঙ্গে এক বছরের চুক্তিতে পপ তারকা হিসাবে যোগ দেওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই নিজের পেশা বদলানোর সিদ্ধান্ত নেন শেউন। হাতে কাজ না-থাকায় তিনি মডেলিং ও টেলিভিশনের দুনিয়ায় পা রাখার পরিকল্পনা করেন।
একা শেউন নন, এর আগেও কোরিয়ান ব্যান্ডের সদস্যেরা নিজের জগৎ বদলে অন্য পেশায় দীর্ঘ জীবন কাটিয়েছেন। কেউ নাচের জগতে মনোনিবেশ করেছেন, আবার কেউ সম্পূর্ণ ভাবে ভিন্ন কোনও পেশা বেছে নিয়েছেন। স্কুলের শিক্ষক বা ১০টা-৫টার সাধারণ চাকরি বেছে নিতেও দেখা গিয়েছে পপ তারকাদের।
‘বাবা’ ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শেউন নানা জায়গায় অনুষ্ঠান করে অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই প্রচারের আলোয় চলে আসেন। তাঁর পপ গায়ক ও তারকা-জীবনের মেয়াদ ছিল মাত্র কয়েক মাসের। শেউন ‘বাবা’ ব্যান্ড ছেড়ে দেওয়ার দু’বছরের মধ্যেই ব্যান্ডটি বন্ধও হয়ে যায়।
২০১৫ সালে আত্মপ্রকাশ করে ‘বাবা’। ছয় সদস্য নিয়ে পথচলা শুরু হয় তাদের। ‘রিটার্ন ফ্রম ভিয়েতনাম’ ছিল এই ব্যান্ডের প্রথম গান।
শোনা যায়, দুর্ঘটনায় আহত হয়ে শেউন ব্যান্ড ছেড়ে পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হন। একটি বিজ্ঞাপনে অডিশন দিতে গিয়ে তাঁর জীবনে অপ্রত্যাশিত একটি ঘটনা ঘটে যায়। প্রাপ্তবয়স্কদের ভিডিয়োয় কাজ করার প্রস্তাব আসে তাঁর কাছে। যে সংস্থার হয়ে মডেলিং করতে যান সেই সংস্থারই সিইও তাঁকে এই প্রস্তাব দেন।
পপ তারকার আসন থেকে সরে আসার পর মডেলিং ও অভিনয়ের মতো পেশায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন শেউন। এই প্রস্তাবটি আসতেই তিনি সেই প্রাপ্তবয়স্ক ভিডিয়োয় কাজ করার সম্মতি দেন। মাত্র ২০ বছর বয়সে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করতে শুরু করেন এই কোরীয় মডেল। ২০২০ সালের জুন মাস নাগাদ এই জগতে পা রাখেন শেউন।
২০০০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সোলে জন্ম শেউনের। মাত্র ২৪ বছরে পর্নজগতে তারকার তকমা পান তিনি। পূর্ব পেশার খাতিরেও তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। বিশেষ করে তাঁর নিষ্পাপ গড়নের জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন ‘বাবা’য়। পপ তারকা ইমেজকে কাজে লাগিয়ে বিশেষ ধরনের ভিডিয়োতেও দ্রুত উন্নতি করতে থাকেন।
মাত্র দু’মাসের মধ্যে ৪০টি ভিডিয়োয় কাজ করেন শেউন। প্রতি ২-৩ দিনের মধ্যে একটি ভিডিয়োয় অভিনয় শেষ করতেন প্রাক্তন এই পপ তারকা। শেউনই প্রথম পপ শিল্পী যিনি ব্যান্ড ছাড়ার পর এই ধরনের পেশা বেছে নিয়েছিলেন।
তাঁর ভিডিয়োগুলি এতই জনপ্রিয় হয় যে তিনি প্রতি ভিডিয়োর জন্য ১২ লক্ষ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক পেতে শুরু করেন। শোনা যায়, তিনি তাঁর প্রথম ভিডিয়োটি শেষ করার পর পারিশ্রমিক হিসাবে একটি সেডান পেয়েছিলেন।
প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই ধরনের ভিডিয়োগুলি বিপুল জনপ্রিয়। ভিডিয়ো দেখার জন্য টাকার বিনিময়ে সাবস্ক্রিপশন নিতে হয়। সে কারণে যাঁরা ভিডিয়োয় অভিনয় করেন, তাঁরা অন্য মাধ্যমগুলির তুলনায় বেশি পারিশ্রমিক পান।
তবে অভিনয়-জীবন বেশি দিন স্থায়ী হয়নি শেউনের। মাত্র এক বছরের মধ্যে তিনি ঘোষণা করেছেন এই ধরনের ভিডিয়োয় অভিনয় করবেন না। বর্তমানে তিনি একটি স্ট্রিমিং চ্যানেলের সঙ্গে যুক্ত। এ ছাড়াও ইনস্টাগ্রামেও সক্রিয় শেউন।
একাধিক পেশা পরিবর্তন, প্রাপ্তবয়স্ক ভিডিয়োয় অভিনয় করতে আসা নিয়ে সমাজমাধ্যমের সমালোচনায় পড়তে হয়েছিল তাঁকে। সেই সময় মুখ খুলেছিলেন শেউন।
তিনি তাঁর অনুরাগীদের উদ্দেশে জানান, ‘‘আমি মনে করি নারীর শরীর একটি শিল্প। আমি মডেল হিসাবে কাজ করেছি কারণ আমি ছবিতে নিজেকে সুন্দর দেখতে চেয়েছিলাম। পরে আমি ভিডিয়োয় নিজেকে আরও আবেদনময়ী হিসাবে দেখতে চেয়েছিলাম। তাই আমি প্রাপ্তবয়স্ক সিনেমার অভিনেত্রী হয়েছিলাম।’’