বর্তমানে কাঁকড়াবিছের যে সব প্রজাতি রয়েছে তাদের দৈর্ঘ্য ২৩ সেন্টিমিটার থেকে ২৯ সেন্টিমিটারের মধ্যে। কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে বড় কাঁকড়াবিছের দৈর্ঘ্য এর প্রায় আট গুণ বেশি ছিল তা জানেন কি?
স্করপিয়নিডাই ফ্যামিলির অন্তর্গত ‘জায়েন্ট ফরেস্ট স্করপিয়ন’ যার বিজ্ঞানসম্মত নাম জাইগানটোমেটরাস সোয়ামারডামি— বর্তমানে দীর্ঘতম কাঁকড়াবিছের মধ্যে অন্যতম।
‘জায়েন্ট ফরেস্ট স্করপিয়ন’-এর দৈর্ঘ্য ২৩ সেন্টিমিটার এবং ওজন ৫৬ গ্রাম। কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে বড় কাঁকড়াবিছের দৈর্ঘ্য ছিল ২ মিটারের কাছাকাছি।
বিজ্ঞানীদের মতে, আজ থেকে ৩০ কোটি বছর আগে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কাঁকড়াবিছের অস্তিত্ব ছিল যার নাম ছিল লাং স্করপিয়ন।
লাং স্করপিয়নের বিজ্ঞানসম্মত নাম পালমোনোস্করপিয়াস। ৩০ কোটি বছর আগে কার্বনিফেরাস যুগে অস্তিত্ব ছিল এই কাঁকড়াবিছের।
স্কটল্যান্ড থেকে লাং স্করপিয়নের জীবাশ্ম পাওয়া যায়। এই কাঁকড়াবিছের দেহের রং এবং গঠন এমন ছিল যে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে হেঁটে গেলেও তা মাটির সঙ্গে মিশে থাকতে পারত।
লাং স্করপিয়নের গায়ের রং ছিল কালচে বাদামি বর্ণের। তার উপর লালচে কমলা রঙের সমান্তরাল দাগ ছিল।
বিজ্ঞানীদের দাবি, লাং স্করপিয়নের গায়ে যে লালচে কমলা রঙের দাগ ছিল তার উপর অতিবেগুনি রশ্মি ফেললে জ্বলজ্বল করে উঠত।
সাধারণত কাঁকড়াবিছে চার জোড়া বুক লাংয়ের মাধ্যমে শ্বাসক্রিয়া চালায়। এখন কাঁকড়াবিছে যে পরিমাণ অক্সিজেন গ্রহণ করে, লাং স্করপিয়ন সে তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি অক্সিজেন গ্রহণ করত। সে কারণে তাদের দেহাকৃতিও হত বিশাল।
বিশালাকৃতি লাং স্করপিয়নের বিষ কতটা ভয়াবহ এবং তা মানুষের মৃত্যুর কারণ কি না তা নিয়ে কী জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা?
‘প্রিহিস্টোরিক পার্ক’ সিরিজ়ের ‘দ্য বাগ হাউস’ নামের একটি পর্বে দেখা যায় নাইজেল মার্ভেন নামে এক প্রাণীবিদ পালমোনোস্করপিয়াসের কামড় খেয়েছেন। কিন্তু কাঁকড়াবিছের কামড় খাওয়ার পর কোনও প্রভাব পড়ল না তাঁর শরীরে। বহাল তবিয়তে কাঁকড়াবিছেটি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন তিনি।
বিজ্ঞানীদের দাবি, ৩০ কোটি বছর আগে লাং স্করপিয়নের বিষ বর্তমানে মানুষের শরীরে প্রভাব ফেলে না।
৩০ কোটি বছর আগে লাং স্করপিয়ন নামে যে কাঁকড়াবিছেটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় কাঁকড়াবিছে হিসাবে নাম লিখিয়েছে তা পরিবেশগত পরিবর্তনের কারণে বিলুপ্ত হয়ে যায়।