Share Market Highlights

মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে ছুটল শেয়ার ষাঁড়! পাঁচ দিনে ২৬০০ পয়েন্ট ঊর্ধ্বমুখী সেনসেক্স

চলতি আর্থিক বছরের শেষে ফের ঊর্ধ্বমুখী হল শেয়ার বাজার। মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে পাঁচ দিনে ২,৬১৪ পয়েন্টের বেশি বাড়ল সেনসেক্স। নিফটি-৫০ বৃদ্ধি পেয়েছে ৮১০ পয়েন্ট।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৫ ১৬:৪৩
Share:
০১ ২০
Share Market Highlights

রাহুর দশা কেটে গিয়ে অবশেষে তুঙ্গে বৃহস্পতি! ফের শেয়ার বাজারে শুরু হয়েছে ষাঁড়ের দৌড়! ফলে চৈত্র সংক্রান্তির আগে লগ্নিকারীদের মুখে ফুটল হাসি। এই পরিস্থিতি বজায় থাকলে অবিলম্বে সেনসেক্স-নিফটি আবারও পেরোবে ৮৫ হাজারের গণ্ডি। এমনটাই মত আর্থিক বিশ্লেষকদের।

০২ ২০
Share Market Highlights

চলতি আর্থিক বছরের (পড়ুন ২০২৪-’২৫) একেবারে শেষে পৌঁছে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে শেয়ার বাজার। মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে টানা পাঁচ দিন উপরে থাকল সেনসেক্স এবং নিফটি। বম্বে এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক ইতিবাচক হওয়ার বেশ কয়েক মাসের ব্যবধানে পর পর মোটা অঙ্কের লাভের মুখ দেখলেন বিনিয়োগকারীরা।

Advertisement
০৩ ২০
Share Market Highlights

মার্চের তৃতীয় সপ্তাহের শেষ কাজের দিনে (পড়ুন ২১ তারিখ) ৫৫৭.৪৫ পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়েছে সেনসেক্স। ফলে দিনশেষে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের (বিএসই) সূচক দৌড় থামায় ৭৬,৯০৫.৫১ পয়েন্টে। শতাংশের নিরিখে এই বাজার বৃদ্ধি পেয়েছে ০.৭৩। দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭৭ হাজারে উঠেছিল বাজার।

০৪ ২০

২১ মার্চ একই ছবি দেখা গিয়েছে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে (এনএসই)। সেখানে ১৫৯.৭৫ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে নিফটি ৫০-এর সূচক থেমেছে ২৩,৩৫০.৪০ পয়েন্টে। অর্থাৎ, এই বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে ০.৬৯ শতাংশ। নিফটি-৫০ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ ওঠে ২৩,৪০২ পয়েন্টে।

০৫ ২০

মার্চের তৃতীয় সপ্তাহের পাঁচ দিনে মোট ২,৬১৪.০৪ পয়েন্ট উঠেছে সেনসেক্স। আর নিফটি-৫০ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে ৮১০.৭৫ পয়েন্ট। সে দিক থেকে এই সময়সীমায় দু’টি সূচকের তুল্যমূল্য বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছে। অর্থাৎ, ৩.৫২ এবং ৩.৬০ শতাংশ।

০৬ ২০

বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতার মধ্যেও সেনসেক্স এবং নিফটি ৫০-এ সাড়ে তিন শতাংশের বৃদ্ধিকে অত্যন্ত ইতিবাচক হিসাবে উল্লেখ করেছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা। খরা কাটিয়ে বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। পাশাপাশি, এর নেপথ্যে একাধিক কারণের কথা বলতে শোনা গিয়েছে তাঁদের।

০৭ ২০

গত তিন-চার মাস ধরেই বিদেশি পোর্টফোলিয়ো লগ্নিকারীদের (ফরেন পোর্টফোলিয়ো ইনভেস্টর বা এফপিআই) মধ্যে ছিল ভারতীয় শেয়ার বাজার ত্যাগের প্রবণতা। কিন্তু, মার্চে ধীরে ধীরে ফেরত আসতে শুরু করেছেন তাঁরা। ফলে বাজারে টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। একে বড় স্বস্তি হিসাবে উল্লেখ করেছে সমস্ত ব্রোকারেজ ফার্ম।

০৮ ২০

ব্রোকারেজ ফার্মগুলির দাবি, মার্চের ১৮ তারিখ থেকে বিদেশি পোর্টফোলিয়ো লগ্নিকারীরা নগদ অর্থের নিট ক্রেতা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া ভারতীয় ইক্যুইটিতে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন তাঁরা। ফলে লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে সেনসেক্স এবং নিফটির সূচক।

০৯ ২০

গত বছরের অক্টোবর থেকেই বিদেশি লগ্নিকারীরা ভারতীয় শেয়ার বাজারের থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করে। বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছে, এফপিআইয়ের পাশাপাশি মার্চে বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা (ফরেন ইনস্টিটিউশনাল ইনভেস্টর বা এফআইআই) নতুন করে লগ্নি করা শুরু করেছেন। এতে ভাগ্যের চাকা বদলাতে শুরু করেছে।

১০ ২০

ব্রোকারেজ ফার্মগুলি জানিয়েছে, এফপিআই এবং এফআইআই বিনিয়োগ ফের আসতে শুরু করায় খুচরো লগ্নিকারীদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পেয়েছে। গত পাঁচ দিনে তাঁরা বাড়িয়েছেন শেয়ারে লেনদেন। ফলে মাঝারি এবং ছোট পুঁজির সংস্থাগুলির স্টকের সূচক অনেকটা ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।

১১ ২০

গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছোয় সেনসেক্স। ওই দিন ৮৫,৯৭৮.২৫ পয়েন্টে পৌঁছোয় বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের (বিএসই) সূচক। কিন্তু এর পর থেকে ক্রমশ নামতে থাকে বাজার। গত পাঁচ মাসে মোট শেয়ার সূচক ১৫ শতাংশের নীচে চলে যাওয়ায় বিপুল লোকসানের মুখে পড়েন বিনিয়োগকারীরা।

১২ ২০

বর্তমানে শেয়ার বাজারে ‘প্রাইস টু আর্নিং’-এর অনুপাত ২১-এ দাঁড়িয়ে রয়েছে। গত দু’বছর এর গড় ছিল ২৩.৬। ফলে বড় পুঁজির সংস্থায় লগ্নি করলেই বিনিয়োগকারীদের ভরছিল পকেট। বিশেষজ্ঞদের দাবি, বাজার সেই পুরনো জায়গায় ফিরে যেতে চাইছে। আর তাই লগ্নিকারীদের মধ্যে শেয়ার কেনার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

১৩ ২০

বাজারের সূচক উপরের দিকে ওঠার অন্যতম বড় কারণ হিসাবে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধিকেও দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞেরা। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার গত সাত মাসের মধ্যে সবচেয়ে নীচে নেমে এসেছে। গত মাসে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৩.৬১ শতাংশ।

১৪ ২০

এ ছাড়া জানুয়ারিতে বৃদ্ধি পায় দেশের শিল্পোৎপাদনের হার। বছরের প্রথম মাসে এর সূচক পাঁচ শতাংশ উপরে ওঠে। গত বছরের ডিসেম্বরে দেশের শিল্পোৎপাদনের হার ছিল ৩.২ শতাংশ। খুচরো মুদ্রাস্ফীতি কমা এবং শিল্পোৎপাদনের হার বৃদ্ধির সরাসরি প্রভাব শেয়ার বাজারের উপর পড়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।

১৫ ২০

এই আবহে আবার দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হারের পূর্বাভাস দিয়েছে সমীক্ষক সংস্থা ‘ফিচ রেটিং’। তাদের দাবি, ২০২৫-’২৬ আর্থিক বছরে ভারতের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্টস বা জিডিপি) বৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৬.৫ শতাংশ। পরের অর্থবর্ষে (পড়ুন ২০২৬-’২৭) সেটা আরও কমে ৬.৩ শতাংশে নেমে আসবে।

১৬ ২০

চলতি বছরের মার্চে ‘ইকোনমিক আউটলুক রিপোর্ট’ প্রকাশ করে ফিচ রেটিং। সেখানে সমীক্ষক সংস্থাটি বলেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই প্রত্যাশার চেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক বাণিজ্যিক নীতি নিয়েছে ওয়াশিংটন। কিন্তু অবস্থানগত কারণে এতে খুব বেশি বিপদে পড়বে না নয়াদিল্লি।

১৭ ২০

এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে সংসদে পেশ করা বাজেটে আয়করে বিপুল ছাড়ের কথা ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বিশ্লেষকের একাংশের দাবি, এতে আমজনতার পকেটে থাকবে অতিরিক্ত টাকা। ফলে বাজারে বৃদ্ধি পাবে ভোগ্যপণ্যের বিক্রি। ভারতের আর্থিক বৃদ্ধিতে এটি সাহায্য করবে বলে মনে করছেন ‘ফিচ’-এর সমীক্ষকেরা।

১৮ ২০

সম্প্রতি এ দেশের অর্থনীতি নিয়ে আর্থিক সংস্থা ‘মর্গান স্ট্যানলি’র করা পূর্বাভাস নিয়ে দুনিয়া জুড়ে পড়ে গিয়েছে হইচই। তাদের দাবি, আর মাত্র তিন বছরের মধ্যেই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে ভারত। অর্থাৎ, ২০২৮ সালের মধ্যে নয়াদিল্লির আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫.৭ লক্ষ কোটি ডলারে গিয়ে পৌঁছোবে।

১৯ ২০

২০২৩ সালে ভারতীয় অর্থনীতির আকার ছিল সাড়ে তিন লক্ষ কোটি ডলার। আগামী বছর সেটাই বেড়ে ৪.৭ লক্ষ কোটি ডলারে পৌঁছোবে বলে মনে করা হচ্ছে। দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার ওই অঙ্ক ছুঁয়ে ফেললে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির ঘরে ঢুকে পড়বে ভারত। নয়াদিল্লির সামনে থাকবে তিনটি মাত্র দেশ। সেগুলি হল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন এবং জার্মানি।

২০ ২০

এ ছাড়া আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ‘ফেডারেল রিজ়ার্ভ’ এবং ভারতের ‘রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’ (আরবিআই) সুদের হারে পরিবর্তন করলে বাজারে পড়বে তার প্রভাব। এ বছর আরও অন্তত দু’বার সুদের হার বদল করতে পারে মার্কিন ‘ফেডারেল রিজ়ার্ভ’। অন্য দিকে খুচরো মুদ্রাস্ফীতি চার থেকে ছ’শতাংশের নীচে চলে গেলে এপ্রিলে সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমাতে পারে আরবিআই।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement