বাড়ি তো নয়, যেন প্রাসাদ! আস্তানা ছিল এক প্রাক্তন ব্রিটিশ সেনার। পরিত্যক্ত এই বাড়িটি বর্তমানে উত্তরাখণ্ডের অন্যতম ভয়ঙ্কর জায়গায় পরিণত হয়েছে। সন্ধ্যার পর সেই বাড়ির সামনে দিয়ে যেতেই ভয় পান স্থানীয়েরা।
ঊনবিংশ শতাব্দীতে উত্তরাখণ্ডে এই প্রাসাদোপম বাড়ি তৈরি করেছিলেন ফ্রেডেরিক ইয়ং। আয়ারল্যান্ডের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। কর্মসূত্রে উত্তরাখণ্ডে গিয়েছিলেন ফ্রেডেরিক।
ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য মাত্র ১৪ বছরে আয়ারল্যান্ড ছেড়ে ভারতে যান ফ্রেডেরিক। ১৮১৮ সালে দেহরাদূনে সিরমুর রেজিমেন্ট তৈরি করেন তিনি।
১৮২৫ সালে উত্তরাখণ্ডে মুসৌরির প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন ফ্রেডেরিক। সেখানে চা এবং আলুর চাষ শুরুর পরিকল্পনা ছিল তাঁরই।
মুসৌরির স্বনামধন্য ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ফ্রেডেরিক। উত্তরাখণ্ডে যাওয়ার পর মুল্লিঙ্গর ম্যানসন নামে মুসৌরিতে নিজের বাড়ি তৈরি করেছিলেন তিনি।
ঊনবিংশ শতাব্দী থেকেই মুল্লিঙ্গর ম্যানসন ছিল তাকলাগানো। বাড়ির বাইরের ফাঁকা জায়গায় ঘোড়াও চালাতেন ফ্রেডেরিক।
মুসৌরির নানা সমাজকল্যাণমূলক কাজের সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল ফ্রেডেরিকের। গোর্খা বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন বলে তাঁদের যুদ্ধ করার আদবকায়দাও শিখেছিলেন তিনি।
বছরের পর বছর মুসৌরিতে থাকার ফলে সেখানকার সংস্কৃতি আপন করে নেন ফ্রেডেরিক। তবে বর্তমানে উত্তরাখণ্ডের ‘ভূতুড়ে’ জায়গাগুলির মধ্যে নাম লিখিয়েছে মুল্লিঙ্গর ম্যানসন।
স্থানীয়দের দাবি, মুল্লিঙ্গর ম্যানসনের সামনে দিয়ে গেলে নাকি ঘোড়ার খুরের শব্দ শোনা যায়। শুনে মনে হয় কেউ যেন বাড়ির সামনে ঘোড়া চালাচ্ছেন।
আবার স্থানীয়দের অধিকাংশের দাবি, মুল্লিঙ্গর ম্যানসনের মধ্যে নাকি আজও ফ্রেডেরিকের ‘আত্মা’ ঘোরাফেরা করে। এমনকি বাড়ির সামনেও নাকি ঘোড়া চালাতে দেখা গিয়েছে তাঁর ‘আত্মা’কে।
লোকমুখে শোনা যায়, কর্মজীবনের শেষ পর্যায়ে আয়ারল্যান্ড ফিরে যান ফ্রেডেরিক। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। তবে এই কথা অস্বীকার করেন স্থানীয়দের একাংশ।
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, মুল্লিঙ্গর ম্যানসনের মায়া নাকি ত্যাগ করতে পারেননি ফ্রেডেরিক। তাই সেখানেই জীবনের শেষকালে ফিরে এসেছিলেন তিনি।
মুল্লিঙ্গর ম্যানসন প্রিয় হওয়ার কারণে মৃত্যুর পরে ফ্রেডেরিকের আত্মা ঘুরে বেড়ায় সেখানে। কানাঘুষো শোনা যায়, বাড়ির ভিতরেই শুধু নয়, বাগানেও নাকি তাঁর প্রিয় ঘোড়ায় চড়ে ঘোরাফেরা করেন তিনি। তবে এই ঘটনার সত্যতা কতটা, সে বিষয়ে এখনও কিছু স্পষ্ট জানা যায়নি।