প্যালেস্টাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এ বার ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনীর একটি ইউনিটকে ‘নিষিদ্ধ’ করল আমেরিকা।
ওয়াশিংটনের তরফে এই বিষয়ে সরকারি ভাবে কিছু জানানো না হলেও সে দেশের একটি নিউজ় ওয়েবসাইট ‘দি এক্সিঅস’-এর একটি প্রতিবেদনে তেমনটাই জানানো হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে উল্লিখিত খবরকে প্রায় মান্যতা দিয়েই দিয়েছেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও। তিনি আমেরিকার এই সিদ্ধান্তকে ‘অর্থহীন’ বলে দাবি করেছেন।
ইজ়রায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)-এর যে ইউনিটটিকে আমেরিকা নিষিদ্ধ করেছে, সেটির নাম ‘নেটজ়াহ ইয়েহুদা’।
আগেও একাধিক বার ইজ়রায়েলি সেনার এই ইউনিটের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। প্যালেস্টাইনি বংশোদ্ভূত আমেরিকার নাগরিক, ৭৮ বছর বয়সি ওমর আসাদকে হত্যা করারও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
এ বার অবশ্য আমেরিকার অভিযোগ, ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে নিরীহ প্যালেস্টাইনিদের উপর অত্যাচার চালিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে ইজ়রায়েলি সেনার ওই ইউনিট।
এর আগে গাজ়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে ইজ়রায়েলকে বেশ কয়েক বার সতর্ক করেছে বন্ধু রাষ্ট্র আমেরিকা। যুদ্ধে দীর্ণ ওই ভূখণ্ডে মানবিক সাহায্য পাঠানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।
কিন্তু ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনীর একাংশকে নিষিদ্ধ করে আমেরিকা নজিরবিহীন পদক্ষেপ করল বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে আমেরিকার যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার জাতীয় সুরক্ষা মন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি আশা করেন যে, দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট আমেরিকার কথায় চলবেন না।
নেতানিয়াহু বলেন, “যখন আমাদের সেনারা সন্ত্রাসবাদী দস্যুদের সঙ্গে লড়ছে, তখন আইডিএফের একটি ইউনিটের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করার ইঙ্গিত একটু অস্বাভাবিক এবং অর্থহীনই বটে।”
প্রসঙ্গত, বার বার বিতর্ক মাথাচাড়া দেওয়ায় ইজ়রায়েল অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক থেকে সেনার ওই ইউনিটটিকে সরিয়ে নেওয়া হয়। ইউনিটের সদস্যদের মোতায়েন করা হয় দেশের উত্তরাংশে। যদিও ইজ়রায়েল এমন কোনও ঘটনার কথা কখনওই প্রকাশ্যে স্বীকার করেনি।
ইরানের হামলার মোকাবিলায় অবশ্য আমেরিকাকে পাশে পেয়েছে ইজ়রায়েল। গত রবিবার ইরান ইজ়রায়েলে হামলা চালালে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল বন্ধু দেশ আমেরিকার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে।
কিছু দিন আগেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বন্ধুরাষ্ট্র ইজ়রায়েলকে ‘পরামর্শ’ দিয়েছিলেন যে, তারা যেন ইরানের উপর পাল্টা আক্রমণ চালানোর রাস্তায় না হাঁটে। তার পরেও অবশ্য নেতানিয়াহু বলেছিলেন, “আত্মরক্ষার জন্য আমাদের যা করা দরকার, আমরা তা-ই করব।”
সপ্তাহ ঘোরার আগেই অবশ্য জবাব দিয়েছে ইজ়রায়েল। শুক্রবার ভোরে তারা ইরানের ‘নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু’তে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
শুক্রবার ভোরে তারা ইরানের ‘নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু’তে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এত দিন ধরে ইজ়রায়েলকে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে সমর্থন জুগিয়ে এলেও কী কারণে আমেরিকা চরম পদক্ষেপের পথে হাঁটল, তা ভাবাচ্ছে ইজ়রায়েলকেও।