নভেম্বর মাস পড়তে না পড়তেই বলিপাড়ায় শুরু হয়ে গিয়েছে দীপাবলি উদ্যাপন। রবিবার খ্যাতনামী পোশাকশিল্পী মণীশ মলহোত্রের বাড়িতে দীপাবলী উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। বড় পর্দার তাবড় তারকাদের উপস্থিতিতে জ্বলজ্বল করছিল পার্টি। সেই পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন বলি অভিনেত্রী ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনও। তবে তিনি ছিলেন একা। ঐশ্বর্যার পাশে দেখা যায়নি অভিষেক বা বচ্চন পরিবারের অন্য কাউকে।
২০০৭ সালে অমিতাভ বচ্চনের পুত্র অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন ঐশ্বর্যা। তার পর থেকে অভিনেত্রী হওয়ার পাশাপাশি বচ্চন পরিবারের পুত্রবধূ হিসাবেও পরিচিতি পান তিনি।
অভিষেকের সঙ্গে বিয়ের পর বলিপাড়ার এমন কোনও অনুষ্ঠান হয়নি যেখানে ঐশ্বর্যা একা উপস্থিত ছিলেন। সব সময় অভিষেকের সঙ্গে দেখা যেত তাঁকে। ছবিশিকারিদের কাছেও আলাদা ভাবে পোজ় দিতেন এই তারকাযুগল।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, তারকাখচিত কোনও অনুষ্ঠানে অভিষেক যেতে না পারলে ঐশ্বর্যাও নাকি সেখানে যেতেন না। কিন্তু বিগত কয়েক মাস ধরে একাধিক অনুষ্ঠানে একাই যাচ্ছেন ঐশ্বর্যা। এমনকি বচ্চন পরিবারের কোনও সদস্যকেও তাঁর সঙ্গে দেখা যাচ্ছে না।
রবিবার মণীশের বাড়ির পার্টিতে ক্রিমসন এবং গোলাপি রঙের কুর্তি-পালাজ়োয় দেখা গেল ঐশ্বর্যাকে। পার্টিতে একা যাওয়ার পর তাড়াতাড়ি সেখান থেকে বেরিয়েও যান তিনি।
মণীশের পার্টিতে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন তাঁর ননদের কন্যা নব্যা নভেলি নন্দাও। কিন্তু ঐশ্বর্যার সঙ্গে ক্যামেরায় ধরা দেননি তিনি।
চলতি বছরের অক্টোবর মাসে নামী ব্র্যান্ড দ্বারা আয়োজিত ফ্যাশন শো উপলক্ষে প্যারিস যান ঐশ্বর্যা। সেখানে ফ্যাশন সরণিতে হেঁটে সকলের মন জয় করেন অভিনেত্রী।
প্যারিসের ফ্যাশন শোয়ে দর্শকাসনে দেখা যায় জয়া বচ্চন এবং শ্বেতা নন্দাকেও। কিন্তু ঐশ্বর্যার শোয়ে ছিলেন না তাঁরা। দু’জনেই হাজির ছিলেন নব্যার শোয়ে।
ফ্যাশন সরণিতে প্রথম হাঁটলেন নব্যা। তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতেই জয়া এবং শ্বেতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। শোয়ের পর তিন জনকে প্যারিসের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়াতেও দেখা গিয়েছে।
জয়া, শ্বেতা এবং নব্যার ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও কোনও ছবিতেই ঐশ্বর্যাকে দেখা যায়নি। অথচ সেই সময় প্যারিসেই উপস্থিত ছিলেন বচ্চন পরিবারের পুত্রবধূ।
অন্য দিকে নব্যাকে শুভেচ্ছা জানাননি ঐশ্বর্যাও। অমিতাভের জন্মদিনে ছবি পোস্ট করার সময়ও প্রায় একই রকম ঘটনা লক্ষ করা গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে পারিবারিক ছবি থেকে বাদ পড়েছিলেন ঐশ্বর্যা।
শ্বশুরকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর সময় কন্যা আরাধ্যার সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করতে দেখা গিয়েছিল ঐশ্বর্যাকে।
১ নভেম্বর ৫০ বছরে পা দিলেন ঐশ্বর্যা। কিন্তু বচ্চন পরিবারের সদস্যেরা যেন অদ্ভুত ভাবে নীরব থাকলেন। ইনস্টাগ্রামের পাতায় ঐশ্বর্যার একটি সাদা-কালো ছবি পোস্ট করে অভিষেক শুধু লিখেছিলেন, ‘‘শুভ জন্মদিন।’’
জন্মদিন পালন করতে কন্যা আরাধ্যাকে নিয়ে এক অনুষ্ঠানে কেক কাটতে দেখা গিয়েছিল ঐশ্বর্যাকে। সেখানে অভিষেক ছিলেন না। ছিলেন না বচ্চন পরিবারের কোনও সদস্যও। ছিলেন শুধু অভিনেত্রীর মা বৃন্দা রাই।
বলিপাড়ায় মাঝেমধ্যেই কানাঘুষো শোনা যায়, শাশুড়ি জয়া এবং ননদ শ্বেতার সঙ্গে আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক ঐশ্বর্যার। তিক্ততার সেই ছাপ কি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কেও এসে পড়েছে?
ঐশ্বর্যার সঙ্গে যে মাঝেমধ্যেই তাঁর ঝগড়া লাগে, সে কথা স্বীকার করেছিলেন খোদ অভিষেক। বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর তখন অভিষেক-ঐশ্বর্যার সম্পর্কের বয়স তিন বছর। ২০১০ সালে দেওয়া এক পুরনো সাক্ষাৎকারে অভিষেক জানিয়েছিলেন যে ঐশ্বর্যার সঙ্গে তাঁর প্রায়ই ঝগড়া হয়। এবং সব সময় ক্ষমা চান অভিষেকই।
অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে মূলত বাদানুবাদ হয়, বড় কোনও অশান্তি নয়। তা ছাড়া আমরা রাগ করে ঘুমোতে যেতে পারি না। রাতে ঘুমোনোর আগে সব অশান্তি মিটিয়ে নিই।’’
তবে ঝগড়ার পর মিটমাট করার দায়িত্ব নাকি শুধুমাত্র অভিষেকের। ঐশ্বর্যা এগিয়ে আসেন না একেবারেই। অভিনেতার কথায়, ‘‘অশান্তি মেটানোর প্রথম পদক্ষেপ ছেলেদের করতে হয়। পুরুষ তাড়াতাড়ি তাঁদের ভুল মাথা পেতে নিলে আর কোনও অশান্তিই থাকবে না। হতেই পারে তুমি ঠিক, তবে সেটা মহিলাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’’
যদিও পুরোটাই মজার ছলে বলেছিলেন অভিষেক। ১৩ বছর আগে বলা সেই কথাগুলি কি সত্যি হয়ে গেল? অভিষেক-ঐশ্বর্যার সম্পর্কে কি সত্যি সত্যিই চিড় ধরল, সত্য জানেন কেবল তাঁরাই।