Anti Hijab protest

আবার কি বিকিনি পরে সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে পারবেন ইরানি নারী? হাতছানি দিচ্ছে স্বাধীনতা

হিজাব পরার পাশাপাশি জিন্স, মিনি স্কার্ট এবং শর্ট-হাতা টপ পরেও ইরানের রাস্তায় স্বচ্ছন্দে ঘুরে বেড়াতে পারতেন সেই দেশের মহিলারা। সমুদ্রসৈকতে বিকিনি পরেও ঘুরতে দেখা যেত তাঁদের।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:৪৪
Share:
০১ ২২

একটা সময় তাঁরা বিকিনি পরে সমুদ্র সৈকতে নির্দ্বিধায় ঘুরে বেড়াতেন। সেই ইরানেরই মহিলারা আন্দোলন করছিলেন শুধু মাথার বস্ত্রখণ্ড খুলে রাখার দাবিতে। হিজাব বিরোধী সেই আন্দোলন অবশেষে জয়ের মুখ দেখল। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ইরানের মহিলারা তাঁদের পুরনো স্বাধীনতা ফিরে পাবেন কি? এই জয় কি ইরানে নারী স্বাধীনতার নতুন যুগের সূচনা করবে?

ফাইল চিত্র।

০২ ২২

ইরানের নীতিপুলিশের চোখ রাঙানিতেই সে দেশের মহিলাদের অবাধ স্বাধীনতার গায়ে চেপেছিল ‘শালীনতা বোধের’ আবরণ। যে খোলা চুল কৃষ্ণ সাগরের সৈকতে নিশ্চিন্তে উড়ত তাতে বসেছিল হিজাবের নিষেধ। রবিবার অর্থাৎ ৪ ডিসেম্বর ইরান জানিয়েছে, সেই নীতিপুলিশের আর অস্তিত্ব নেই ইরানে।

ফাইল চিত্র।

Advertisement
০৩ ২২

ইরানের কেন্দ্রীয় সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ জাফর মন্তেজারি জানিয়েছেন, ইরান সরকার ওই নীতিপুলিশ বাহিনী ‘গস্ত-এ-এরশাদ’কে সম্পূর্ণ ভাবে প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

ফাইল চিত্র।

০৪ ২২

কেন নীতিপুলিশ প্রত্যাহার করা হয়েছে, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি জাফর। তবে তিনি না বললেও এ একরকম স্পষ্ট যে, ইরানে গত দেড় মাস ধরে চলা হিজাব বিরোধী আন্দোলনের চাপে পড়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জাফর নিজে যদিও বলেছেন, নীতিপুলিশ কোনওদিনই ইরানের বিচার ব্যবস্থার অঙ্গ ছিল না।

ফাইল চিত্র।

০৫ ২২

বস্তুত ইরানে নীতিপুলিশিই ছিল না। তার বাহিনী তো দূর অস্ত্‌। তখনও ইরানের মেয়েরা হিজাব পরতেন, তবে স্বেচ্ছায়। বাধ্যবাধকতা ছিল না কোনও।

ফাইল চিত্র।

০৬ ২২

হিজাব পরার পাশাপাশি জিন্স, মিনি স্কার্ট এবং শর্ট-হাতা টপ পরেও ইরানের রাস্তায় স্বচ্ছন্দে ঘুরে বেড়াতে পারতেন সেই দেশের মহিলারা। সমুদ্রসৈকতে বিকিনি পরেও ঘুরতে দেখা যেত সে দেশের মহিলাদের।

ফাইল চিত্র।

০৭ ২২

সেই সময়ের তোলা ছবি বলছে ইরানের বিভিন্ন শহরে হিজাব বা বোরখা ছাড়াই পথে নামতেন ইরানি মহিলারা। তাঁদের পরনে থাকতে আধুনিক পোশাক-আশাকও।

ফাইল চিত্র।

০৮ ২২

শৌখিন ছিলেন ইরানের মহিলারাও। বাহারি জুতো পরতেও দেখা যেত তাঁদের। চোখে থাকত হাল ফ্যাশনের রোদচশমা।

ফাইল চিত্র।

০৯ ২২

ওই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের ভর্তির সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। গ্রামে বসবাসকারী রক্ষণশীল পরিবারের মেয়েরা যাতে বাড়ি থেকে দূরে পড়াশোনা করার সুযোগ পান, তা নিয়েও উদ্যোগী হয়েছিল প্রশাসন।

ফাইল চিত্র।

১০ ২২

পিকনিক ছিল ইরানি সংস্কৃতির একটি জনপ্রিয়তম অঙ্গ। পরিবার এবং বন্ধুদের নিয়ে প্রতি শুক্রবার একত্রিত হওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছিল সেই সময়। সবাই মিলে এক হয়ে পিকনিকে যেত ইরানের বহু পরিবার। সেই সব জায়গায় খোলমেলা পোশাকেই দেখা যেত মহিলাদের।

ফাইল চিত্র।

১১ ২২

এখন স্যালঁ-পার্লারের চল স্বাভাবিক মনে হতে পারে। কিন্তু তিন দশক আগে ইরানে মহিলাদের স্যালঁ ছিল। চুলের ছাঁটে ফ্যাশন বা স্টাইলিংয়ের ধারাও ছিল। পুরনো ছবি বলছে, সে সময় হিজাব যেমন দেখা যেত, তেমনই রাস্তা ঘাটে দেখা যেত খোলা চুলের বাহারও।

ফাইল চিত্র।

১২ ২২

সে যুগে জন্মালে হয়তো ইরানের রাজধানী তেহরানের বাসিন্দা ওই তরুণী— মাহাশা আমিনীকেও বেঘোরে প্রাণ দিতে হত না। চুল খুলে রাস্তায় হাঁটার জন্য তুলে নিয়ে যেত না নীতিপুলিশের দল। লক আপে বন্দি হয়ে অত্যাচার সহ্য করতে হত না তাঁকে।

ফাইল চিত্র।

১৩ ২২

কিন্তু মাহাশা দুর্ভাগ্যবশত জন্ম থেকেই সেই যুগ দেখছিলেন, যখন গোটা পৃথিবী আধুনিক শিক্ষা থেকে রক্ষণশীলতাকে বিসর্জন দিলেও ইরান নারী স্বাধীনতায় ক্রমে রক্ষণশীলতাকেই প্রশ্রয় দিচ্ছিল।

ফাইল চিত্র।

১৪ ২২

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা রুহুল্লাহ খোমেইনি ক্ষমতায় আসার পরই নির্দেশ দেন, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে দেশের সব মহিলাকে হিজাব পরে থাকতে হবে।

ফাইল চিত্র।

১৫ ২২

সেটা ১৯৭৯ সাল। ওই ঘোষণার পরই নারী দিবসে এই নির্দেশের প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন ইরানের মহিলারা, পোস্টারে লেখা ছিল, ‘‘আপনারা কি জানেন, ইরানে এখন খোলা চুল হাওয়ায় ওড়ানোও অপরাধ’’।

ফাইল চিত্র।

১৬ ২২

তবে সেই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত কোনও দাগ কাটতে পারেনি। সরকারের মত বদলাতেও পারেনি। উল্টে দেশের সর্বোচ্চ নেতার থেকে আদেশে আসে, ইরানের মহিলারা বাড়ির ভিতরে যা খুশি পরতে পারেন, কিন্তু বাইরে বেরোলে তাঁদের ‘সংযত’ ভাবেই বেরোতে হবে। ফলে মহিলাদের সাঁতার পোশাক পরার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।

ফাইল চিত্র।

১৭ ২২

পোশাকবিধি বিরোধী আন্দোলন প্রশাসনের চোখ রাঙানিতে থিতিয়ে যায় এক সময়ে। ২০০৬ সালে মহিলারা পোশাকবিধি পালন করছেন কি না, তা দেখার জন্য তৈরি করা হয়েছিল নীতিপুলিশ বাহিনী গস্ত-এ-এরশাদ।

ফাইল চিত্র।

১৮ ২২

ইরানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এই নীতিপুলিশ বাহিনী। প্রকাশ্যেই জানানো হয়েছিল, এই বাহিনীর লক্ষ্য হবে ইরানে হিজাব সংস্কৃতি যথাযথ ভাবে মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করা। মেয়েদের ‘শালীনতা’র পাঠ দেওয়া।

ফাইল চিত্র।

১৯ ২২

আর এই গস্ত-এ-এরশাদেরই শিকার হন মাহাশা। ‘পোশাকবিধি’ না মানায় উচিত শিক্ষা দিতে লক আপে বন্দি করা হয়েছিল মাহাশাকে। হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর মৃত্যু হলে অভিযোগ ওঠে ইরানের নীতিপুলিশ বাহিনীর দিকেই। কারণ অন্য বন্দিরা জানিয়েছিলেন, হিজাব না পরার শাস্তি দিয়ে আমিনির উপর অত্যাচার করা হয়েছিল লক আপে।

ফাইল চিত্র।

২০ ২২

সেই গস্ত-এ-এরশাদ যার আক্ষরিক অর্থ ‘পথ প্রদর্শক বাহিনী’কে ইরানের গত দেড় মাসের হিজাব বিরোধী আন্দোলনের জেরে ইরান সরকার প্রত্যাহার করতে বাধ্য হল বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মানুষজন।

ফাইল চিত্র।

২১ ২২

পাশাপাশি, দিন কয়েক আগে, ইরানে হিজাব বিরোধী আন্দোলন চলাকালীনই ইরান সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল জাফরকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ইরানের মেয়েদের বাধ্যতামূলক ভাবে হিজাব পরার নিয়ম বদলানো যায় কি না, তা ভেবে দেখছে তারা।

ফাইল চিত্র।

২২ ২২

পর পর এই দু’টি ঘটনাকে ইরানের মহিলাদের আন্দোলনে বড় জয় হিসাবে দেখা হলেও তাঁদের পোশাকে তিন দশক আগের সেই স্বাধীনতা ফিরতে এখনও বিস্তর দেরি বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের একাংশ।

ফাইল চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement