২৪ বছরে পাঁচ হাজার গাড়ি চুরি। দেশের ‘সবচেয়ে বড়’ গাড়ি চোরকে সোমবার গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ।
অনিল চৌহান নামে ওই ব্যক্তি রীতিমতো দল তৈরি করে গাড়ি চুরি করতেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গাড়ি চুরি করে পাঠিয়ে দেওয়া হত নেপাল এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে।
অসম সরকারের ক্লাস-ওয়ান কন্ট্রাক্টর থেকে গাড়ি চোর— তেজপুরের বাসিন্দা অনিলের ‘উত্থান’ চোখে পড়ার মতো। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে পুরোদস্তুর যোগাযোগ রেখে চলতেন তিনি।
অবশ্য কন্ট্রাক্টর হিসাবে কাজ করার সময়ই তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনি লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। বাড়িতে ইডি তল্লাশি চালায়।
তল্লাশির পর তাঁর সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নিলাম করে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার পর থেকেই অনিল গাড়ি চুরি শুরু করেন।
অভিযোগ, গাড়ি চুরির পাশাপাশি বেআইনি অস্ত্রও বিক্রি করতেন ধৃত অনিল। দেশি পিস্তলের রমরমা কারবার চালাতেন তিনি।
এখানেই শেষ নয়। পুলিশ জানিয়েছে, গণ্ডারের শিং পাচার করা ছিল তাঁর আরও একটি ব্যবসা। অভিযোগ, দেশের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে তিনি এই পাচারের ব্যবসা চালাতেন।
মাথায় ১৮১টি মামলার বোঝা। নিজামউদ্দিন থানায় একটি মামলায় তার পাঁচ বছরের জেল হয়। তা সত্ত্বেও তাঁর গাড়ি চুরি বন্ধ হয়নি।
পুলিশের দাবি, ১৯৯৮ সাল থেকে গাড়ি চুরি করা শুরু করেন অনিল। চুরির জন্য নিজের একটি ছোট দল বানান তিনি। সেই দল দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে গাড়ি চুরি করে সীমান্ত দিয়ে নেপাল এবং জম্মু-কাশ্মীরে পাচার করে দিত।
তিন স্ত্রী এবং সাত সন্তানকে নিয়ে ৫২ বছরের অনিল বিলাসবহুল যাপন করতেন। দিল্লি, মুম্বই এবং উত্তর-পূর্বের রাজ্যে একাধিক বাড়ি রয়েছে তাঁর।
গ্রেফতারের সময় তাঁর কাছ থেকে একটি দেশি পিস্তল এবং দু’টি তাজা কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। এ ছাড়া একটি চোরাই মোটরবাইকও উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদের পর আরও বেআইনি অস্ত্রের হদিস মিলেছে। এর মধ্যে রয়েছে তিনটি দেশি পিস্তল এবং পাঁচটি তাজা কার্তুজ। একটি চুরি করা গাড়িও উদ্ধার হয়েছে।
পুলিশের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য দিল্লির খানপুর এলাকার বাসিন্দা অনিল এবং অটোরিকশা চালাতেন।
পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে একটি খুনেরও অভিযোগও রয়েছে। অভিযোগ, এক বার একটি ট্যাক্সি চুরির সময় এক ড্রাইভারকে খুন করেন অনিল।