শনিবার বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ। ম্যাচের আগে বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট মাঠ নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের মঞ্চে হাতে গিটার নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক বাঙালি। পরনে সাদা টিশার্ট, শিমারি জ্যাকেট, ডেনিম জিন্স। গিটার হাতে স্টেডিয়াম ভর্তি ক্রিকেট অনুরাগীদের সামনে অরিজিৎ সিংহ গাইলেন ‘জিতেগা জিতেগা ইন্ডিয়া জিতেগা।’
সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ‘রকি অওর রানি কি প্রেম কাহানি’ ছবির ‘তুম ক্যয়া মিলে’ এবং ‘জওয়ান’ ছবির ‘চল্লেয়া’ গান দু’টিও গাইলেন অরিজিৎ।
শনিবার বিশ্বকাপ উপলক্ষে ম্যাচের আগে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন অরিজিৎ। আমদাবাদে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের মঞ্চে গায়কের পারফর্ম্যান্স টেলিভিশনের পর্দায় দেখা না গেলেও সেই পারফরম্যান্সের টুকরো টুকরো মুহূর্ত ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমের পাতায়।
অরিজিৎ যে ভারতীয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলির ভক্ত, তারও প্রমাণ দিলেন তিনি। পারফর্ম্যান্স চলাকালীন মঞ্চ থেকেই চিৎকার করে অরিজিৎ বলে ওঠেন, ‘‘আই লভ ইউ, বিরাট।’’
পারফরম্যান্সের পর ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচও দেখেন অরিজিৎ। তাঁর সঙ্গে দর্শকাসনে উপস্থিত ছিলেন অরিজিতের স্ত্রী কোয়েল রায়। অরিজিৎ যে বিরাটের একনিষ্ঠ অনুরাগী সে চিত্র গ্যালারিতেও ধরা পড়ল।
ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন বিরাটের স্ত্রী তথা বলি অভিনেত্রী অনুষ্কা শর্মা। গ্যালারিতে অভিনেত্রীকে বসে থাকতে দেখে নিজের ফোনে অনুষ্কার ছবি তোলার অনুরোধ করেন অরিজিৎ। অনুষ্কা পোজ় দিয়ে অরিজিতের ফোনে ছবিও তোলালেন।
ম্যাচ চলাকালীন পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজ়ম আউট হতে হাতে ধরে থাকা ভারতের জার্সি হাওয়ায় ওড়াতে শুরু করেন অরিজিৎ।
২০০২ সালে ভারতের ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জয়ের সময় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যে ভাবে জার্সি খুলে হাওয়ায় উড়িয়েছিলেন, সেই ‘সিগনেচার’ পোজ়েই জার্সি ওড়ালেন অরিজিৎ।
বলিপাড়ার অন্দরমহল সূত্রে খবর, কোনও অনুষ্ঠানে পারফর্ম করতে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত পারিশ্রমিক নেন অরিজিৎ।
কানাঘুষো শোনা যায়, ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা সময় ধরে কোথাও পারফর্ম করতে দেড় কোটি টাকা পারিশ্রমিক নেন অরিজিৎ।
কোটি কোটি টাকা আয় করলেও যাপনের ক্ষেত্রে বিলাসিতার লেশমাত্র নেই অরিজিতের জীবনে। নামী ব্র্যান্ডের পোশাক পরতেও তেমন দেখা যায় না গায়ককে।
কর্মসূত্রে মুম্বইয়ে যেতে হয় বলে সেখানে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন অরিজিৎ। কিন্তু বছরের বেশির ভাগ সময় কাটান মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে।
কোনও বিলাসবহুল গাড়িতে নয়, জিয়াগঞ্জের অলিগলিতে সাইকেল চালিয়ে ঘুরে বেড়ান অরিজিৎ। মাঝেমধ্যে স্কুটিও চালান তিনি। পরনে অধিকাংশ সময় থাকে টিশার্ট, ট্র্যাক প্যান্ট এবং স্লিপার্স।
অরিজিৎ তাঁর পুত্রকে মুম্বইয়ের কোনও স্কুলে নয়, বরং জিয়াগঞ্জের একটি স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন।