হলিউডের অভিনেতা জনি ডেপ এবং তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী, অভিনেত্রী অ্যাম্বার হার্ড— আদালতে প্রকাশ্যে আসতে থাকে একের পর এক পারস্পরিক অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ। এই দৃশ্য বড়পর্দার নয়। বরং, বাস্তবেই এ দৃশ্য ফুটে উঠেছিল আদালতে।
টানা ছ’সপ্তাহ ধরে ভার্জিনিয়ার আদালতে মানহানির মামলার শুনানি চলে। গার্হস্থ্য হিংসার শিকার ছিলেন অভিনেত্রী, এই অভিযোগ এনেছিলেন জনির বিরুদ্ধে। জনিও দমে যাওয়ার পাত্র নন। ৫০ লক্ষ আমেরিকান ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪০ কোটি টাকা) খরচ করে অ্যাম্বারের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা ঠুকেছিলেন তিনিও।
এই মামলা নিয়ে জলঘোলা হয় প্রচুর। আদালতেই অভিনেতার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছিলেন অ্যাম্বার। দীর্ঘ দিন শুনানি চলার পর অবশেষে জনি ডেপ এই মামলায় জয় পেয়েছেন।
সংবাদ সংস্থার খবর, নিজের জয় উদ্যাপন করতে বন্ধুদের সঙ্গে লন্ডনের এক ভারতীয় খাবারের রেস্তরাঁয় গিয়েছিলেন জনি। সেখানে নৈশভোজ করতে ৪৬ লক্ষ টাকা খরচ করেন অভিনেতা।
এই মামলাসূত্রে ইতিমধ্যেই আরও নতুন তথ্য প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। ক্ষতিপূরণ হিসাবে প্রায় ১১৬ কোটি টাকা দিতে হত অ্যাম্বারকে। কিন্তু অভিনেত্রীর ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, অ্যাম্বার তাঁর সব সম্পত্তি বিক্রি করে দিলেও এত টাকা দিতে পারবেন না।
ক্ষতিপূরণের টাকা দিতেই তিনি দেউলিয়া হয়ে যাবেন। এই টাকা জোগাড় করতে ক্যালিফোর্নিয়ার মরুভূমির মাঝে তাঁর যে বাড়িটি ছিল, তা-ও বিক্রি করতে হয়েছে অভিনেত্রীকে।
বিক্রির পরেও ৮.৩ মিলিয়ন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬৬ কোটি টাকা) পেয়েছেন অ্যাম্বার। শুনানি চলাকালীনই তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে এত টাকা নেই।
অভিনেত্রী আর কী ভাবে বাকি টাকা জোগাড় করবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হলিউডের পরিচালকরা নাকি অ্যাম্বারকে আর কাজ দিতে চাইছেন না। এই মামলায় তিনিই নাকি ‘খলনায়িকা’।
কোনও নতুন ছবিতে কাজ করার সুযোগ না পেলে আর্থিক অনটনেরও সম্মুখীন হতে পারেন অ্যাম্বার। অনেকের মতে, এই পরিস্থিতির জন্য নাকি অ্যাম্বারই দায়ী।
আদালতে মামলা ওঠার আগেই জনি নাকি তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তিনি অ্যাম্বারকে মোটা অঙ্কের টাকা দেবেন। তার বিনিময়ে অভিনেত্রী যেন তাঁর বিরুদ্ধে সব অভিযোগ ফিরিয়ে নেন।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ১৬ মিলিয়ন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১২৭ কোটি টাকা) দিতে চেয়েছিলেন জনি।
কিন্তু অভিনেত্রী তাঁর প্রস্তাবে রাজি হননি। কারও মতে, অভিনেত্রী যদি জনির প্রস্তাব মেনে নিতেন, তা হলে আজ প্রায় সাড়ে ১২৬ কোটি টাকার মালিক হতেন তিনি।
এখন ক্ষতিপূরণ দিতে গিয়েই ঘরবাড়ি পর্যন্ত বিক্রি করতে হচ্ছে তাঁকে। অনেকের প্রশ্ন, এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কি নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিলেন অ্যাম্বার?
তবে এই দুই হলি তারকাদের নিয়ে বিতর্ক চলছে অনবরত। জানা যায়, অ্যাম্বারের সঙ্গে সম্পর্ক মসৃণ থাকাকালীনই ইংল্যান্ডের রাজবধূ কেট মিডলটনের একটি নগ্ন ছবি কেনার জন্য ২৫ লক্ষ টাকা খরচ করেছিলেন ‘পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান’-এর নায়ক।
অন্য দিকে, অ্যাম্বারের নতুন কাজ না পাওয়ার প্রসঙ্গে হলিউড বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে সমস্যার সমাধান না হলেও অ্যাম্বার-জনি মামলার রেশ কাটতে সময় লাগবে। তার পরেই হয়তো অভিনেত্রীকে আবার বড়পর্দায় দেখা যেতে পারে।