চলতি বছরেই বলিউডের ‘বাদশা’ শাহরুখ খানের ‘পাঠান’ এবং ‘জওয়ান’ ছবি দু’টি বক্স অফিসে হাজার কোটির ক্লাবে নাম লিখিয়েছে। রণবীর কপূর এবং আলিয়া ভট্ট অভিনীত ‘ব্রহ্মাস্ত্র’-এর প্রথম পর্বও বক্স অফিসে মন্দ ব্যবসা করেনি। কিন্তু বক্স অফিসে সবকিছুই নাকি নকল নম্বরের খেলা! এমনটাই দাবি করেন ‘গদর’-এর পরিচালক অনিল শর্মা।
দু’দশক আগে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল ‘গদর’। অনিল শর্মার পরিচালনায় সানি দেওল এবং অমিশা পটেল অভিনীত ছবিটি সেই সময় বক্স অফিসে চুটিয়ে ব্যবসা করে। ২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘গদর’-এর সাফল্যের দু’দশক পরে চলতি বছরে এই ছবির দ্বিতীয় পর্ব প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। প্রথম পর্বের মতো এই ছবিতেও অভিনয় করেন সানি এবং অমিশা।
সানি তাঁর ‘ঢাই কিলো কা হাত’ দিয়ে বক্স অফিসে দাপিয়ে ব্যবসা করেন। ‘গদর ২’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে সানির দুর্দান্ত কামব্যাক প্রশংসাও পায়। বলিউডের ‘আসল ব্লকবাস্টার’ ছবি হিসাবে প্রচার শুরু করেন ‘গদর ২’-এর ছবিনির্মাতারা।
এমনকি ‘গদর ২’ ছবির প্রচারের সময় বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে ছবির তারকা থেকে শুরু করে ছবিনির্মাতারা উল্লেখ করেছেন যে ছবির বক্স অফিস থেকে আয়ের তথ্য একেবারে খাঁটি। বক্স অফিসে ছবিটি যা ব্যবসা করেছে সেটাই জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়েছে।
সম্প্রতি বলিপাড়ার প্রথম সারির ছবিনির্মাতা কর্ণ জোহরের রিয়্যালিটি শোয়ে অতিথি হিসাবে আসেন ধর্মেন্দ্রের দুই পুত্র সানি দেওল এবং ববি দেওল। বক্স অফিসের ‘খাঁটি ব্লকবাস্টার’ হিসাবে কেন ‘গদর ২’-এর প্রচার করা হয়েছে সে বিষয়ে সানিকে প্রশ্ন করেন কর্ণ।
কর্ণ প্রশ্ন করেন, ‘‘সানি, তোমার কি মনে হয় আমরা বক্স অফিসের নম্বর নিয়ে খেলা করি? যা ব্যবসা হয় তা সরাসরি দেখাই না? খাঁটি ব্লকবাস্টার কথাটির মানে কী?’’ কর্ণের প্রশ্ন শুনে হাসেন সানি।
সানি বলেন, ‘‘সারা পৃথিবীই এমন ভাবে কাজ করছে। সকলেই চান তাঁদের ছবি সফল হোক। আলাদা ভাবে কোনও ব্যক্তি নয়, সারা সমাজই এখন এ রকম। এই ধারণা বহন করেই সামনের দিকে সকলে এগিয়ে যাচ্ছেন। ধারণা নিয়েই পৃথিবী এগোচ্ছে। আবার ধারণাই ধীরে ধীরে বাস্তবে পরিণত হচ্ছে।’’
সানি আরও বলেন, ‘‘বলি ইন্ডাস্ট্রি স্বীকার করেছে যে ‘গদর ২’ খাঁটি ব্লকবাস্টার। কত মানুষ ভালবেসেছে ছবিটিকে। কত জায়গার ‘সিঙ্গল স্ক্রিন’-এ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। আর বক্স অফিসের নম্বরে কোনও ভুল নেই। সবই বাস্তব। অকারণে নম্বর বাড়িয়ে দেখানো হয়নি।’’
কর্ণের শোয়ে সানি বলেন, ‘‘দর্শক ‘গদর ২’ দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন। টিকিটের দামও সে অর্থে বৃদ্ধি করা হয়নি। তাই ‘গদর ২’ ছবিটি খাঁটি ব্লকবাস্টার।’’
যদিও পরিচালক অনিলের মন্তব্য অন্য রকম। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে অনিল জানিয়েছিলেন, ছবিনির্মাতারা নিজেরাই ছবির ব্যবসা বৃদ্ধি করার জন্য প্রচুর টিকিট কেটে ফেলেন।
অনিলের দাবি, বক্স অফিসে কোনও ছবি কত ব্যবসা করেছে সেই নম্বর নিয়েও খেলা করা হয়। বক্স অফিসে উপার্জনের ক্ষেত্রে নকল নম্বর দেখানো হয় বলে দাবি করেন অনিল।
অনিল বলেন, ‘‘যদি কোনও ছবি ব্যবসা করে, দর্শক দেখতে যান, তা হলে তো ‘হাউসফুল’ও থাকবে। স্বচক্ষে প্রমাণ পাওয়া যাবে। ‘গদর ২’ যেমন প্রচুর দর্শক দেখতে গিয়েছিলেন, প্রেক্ষাগৃহে ভিড়ও দেখা গিয়েছিল।’’
বলি ইন্ডাস্ট্রিতে কোনও ছবি হিট না হলে ছবিনির্মাতারা নানা রকম পন্থা অবলম্বন করতে থাকেন বলে দাবি করেন অনিল। পরিচালকের দাবি, দর্শকদের ঠকাতে এবং নিজেদের নামরক্ষা করতে বক্স অফিসের নকল নম্বর দেখান বহু ছবিনির্মাতা।
অনিল বলেন, ‘‘ছবিনির্মাতারা যখন নকল নম্বর দেখাতে শুরু করেন, তার প্রভাব পরবর্তী ছবির উপর পড়ে। কারণ তত পরিমাণ দর্শক তো ছবি দেখতেই আসেন না। সবই মিথ্যা। ছবিনির্মাতাদের এই আচরণ আখেরে ফিল্মজগতের ক্ষতি করছে।’’