১০০ কোটি টাকার ক্লাবে যে ছবিগুলি রয়েছে, সেই তালিকায় ‘দঙ্গল’, ‘পিকে’, ‘সঞ্জু’র মতো বলিউডের বহু ছবি রয়েছে। ভারতের বক্স অফিসের পাশাপাশি বিশ্বদরবারেও সেই ছবিগুলি বহুল প্রশংসা পায়।
কিন্তু পাকিস্তানের কাহিনি অন্য রকম। ২০২২ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত একটি পাকিস্তানি ছবিও উপার্জনের দিক দিয়ে সে দেশের মুদ্রায় ১০০ কোটি টাকার গণ্ডি পেরোতে পারেনি। অন্য দিকে ভারতে ‘আরআরআর’, ‘বাহুবলি’র মতো বহু ছবি ১০০ কোটির গণ্ডি পেরোয়।
চলতি মাসেই এই অবস্থার পরিবর্তন হয়। ১০০ কোটি টাকার ক্লাবে প্রথম প্রবেশ করে পাকিস্তান, ‘দ্য লেজেন্ড অফ মৌলা জাঠ’ ছবির মাধ্যমে।
তা-ও আবার ছবি মুক্তি পাওয়ার দশ দিনের মাথায় এই সাফল্য। নেপথ্য কাহিনি কী? দেখে নেওয়া যাক এক নজরে।
চলতি বছরের ১৩ অক্টোবর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘দ্য লেজেন্ড অফ মৌলা জাঠ’।
এই ছবিটি ১৯৭৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মৌলা জাঠ’ নামের ক্লাসিক ঘরানার ছবির উপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছে।
‘দ্য লেজেন্ড অফ মৌলা জাঠ’ ছবির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন বিলাল লসহরি।
২০১৩ সালেই পরিচালক এই ছবি প্রসঙ্গে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেছিলেন।
চিত্রনাট্যের কাজ শেষ হওয়ার তিন বছর পর মুখ্য চরিত্র হিসাবে ফাওয়াদ খান এবং হামজা আলি আব্বাসি সই করেন।
এই ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় জনপ্রিয় পাকিস্তানি অভিনেত্রী মাহিরা খানকেও।
‘হমসফর’ ধারাবাহিকের পর ফাওয়াদ-মাহিরার জুটি বেশ জনপ্রিয় হয়। দর্শক মহল তাঁদের জুটি হিসাবে দেখার জন্য রীতিমতো মুখিয়ে থাকে।
এই ছবির মাধ্যমে দর্শকের সেই স্বাদও মিটেছে। ছবি মুক্তি পাওয়ার আট দিনের মধ্যেই ছবিটি ৮০ কোটি টাকা উপার্জন করে ফেলে।
মুক্তির দশ দিন পরেই এই ছবি ১০৯ কোটি টাকা উপার্জন করে।
কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন-সহ এই ছবি সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতেও মুক্তি পেয়েছে।
এত দিন পর্যন্ত পাকিস্তানের সবচেয়ে বেশি উপার্জন করা ছবির তালিকার শীর্ষে ছিল ‘জওয়ানি ফির নেহি আনি ২’। ২০১৮ সালে ছবিটি মুক্তি পায়।
বক্স অফিস থেকে এই ছবিটি পাকিস্তানি মুদ্রায় মাত্র ৭০ কোটি টাকা উপার্জন করেছিল।
১০০ কোটির ক্লাবে নাম লেখানোয় ছবির নির্মাতা-সহ অভিনেতারাও আপ্লুত। ছবির সঙ্গে যুক্ত প্রায় সকলেই এই উপলক্ষে বিশেষ পোস্টার নিজেদের সমাজমাধ্যমে ভাগ করেছেন।
ছবিতে কাজ করার উপলব্ধি কী রকম, তা নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে নিজের অভিজ্ঞতাও ভাগ করে নিয়েছেন ফাওয়াদ খান।
অভিনেতা জানান, ছবিটি পঞ্জাবি ভাষায় বানানোর ফলে শুরুর দিকে বেশ চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সকলে সাহায্য করেছিলেন বলে শুটিঙের সময় কোনও অসুবিধা হয়নি ফাওয়াদের।
এই চরিত্রে অভিনয় করার সময় কোনও মেক আপের দরকার হত না বলে জানিয়েছেন ফাওয়াদ। অধিকাংশ সময় ধুলো-কাদার মধ্যেই শুটিং করতে হত তাঁকে। তাই মেক আপের পিছনে বেশি সময় খরচ হত না বরং অন্য সমস্যায় পড়েছিলেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘জাঠের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য যে ধরনের শারীরিক গঠন থাকা প্রয়োজন, আমার তা ছিল না। জিমে গিয়ে অনেকটা সময় কাটাতে হত আমায়।’’
অভিনেতা আরও জানান, এত কঠিন পদ্ধতিতে শরীরচর্চা করার অভ্যাস ছিল না ফাওয়াদের। তাই শরীরের উপর চাপ পড়ায় হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল অভিনেতাকে।
ফাওয়াদ বলেন, ‘‘শরীরের ক্লান্তি এবং দুশ্চিন্তার কারণে আমার শরীর ভেঙ্গে পড়েছিল। হাসপাতালে চিকিৎসা হওয়ার পর সম্পূর্ণ সুস্থ হয়েছি।’’