স্বামী মেক্সিকোর কুখ্যাত ‘মাদক সম্রাট’। মাদকচক্রের পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও নাম জড়িয়েছে জোয়াকিন গুজ়ম্যানের। বর্তমানে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ভোগ করছেন জোয়াকিন। কিন্তু তাঁর স্ত্রী এমা কোরোনেল মাত্র তিন বছর কারাবাসের পর ছাড়া পেলেন আমেরিকার জেল থেকে।
১৯৫৭ সালের মেক্সিকোর সিনালোয়ায় জন্ম জোয়াকিনের। এল চ্যাপো নামেই বেশি পরিচিত তিনি। বাবার হাত ধরেই মাদক দুনিয়ায় পা রাখেনতিনি। তার পর ওতপ্রোত ভাবে অন্ধকার দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন এল চ্যাপো।
১৯৮৯ সালে সান ফ্রান্সিসকোর দুরাঙ্গো গ্রামে জন্ম এমার। ছোট থেকেই মডেলিংয়ের প্রতি ঝোঁক ছিল তাঁর।
২০০৭ সালে একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন এমা। সেখানেই এল চ্যাপোর সঙ্গে প্রথম আলাপ হয় তাঁর।
কানাঘুষো শোনা যায়, প্রথম দেখাতেই বিয়ের কথা সেরে ফেলেন এমা এবং চ্যাপো। বিয়ের চার বছর পর ২০১১ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার এক হাসপাতালে যমজ কন্যাসন্তানের জন্ম দেন এমা।
২০০১ সাল থেকে পলাতক এল চ্যাপোর সন্ধানে মোটা টাকা উপহার ঘোষণা করেছিল আমেরিকা। তাই এমার কন্যাদের জন্মের শংসাপত্র থেকে এল চ্যাপোর নাম সরিয়ে দেওয়া হয়।
১৯৯৩ সালে চ্যাপোকে প্রথম বার গ্রেফতার করা হয়। মাদক পাচার এবং খুনের অভিযোগে তাঁর ২০ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলে থাকার সময় ২০০১ সালে কারারক্ষীদের ঘুষ দিয়ে পালিয়ে যান তিনি।
২০১৪ সালে আবার গ্রেফতার করা হয় এল চ্যাপোকে। ২০১৫ সালে সাজা ঘোষণার আগে আবার জেল থেকে পালিয়ে যান তিনি।
২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে এল চ্যাপোকে আবার গ্রেফতার করার এক বছর পর আমেরিকায় প্রত্যার্পণ করা হয়। ২০১৯ সালে দোষী সাব্যস্ত হলে এল চ্যাপোকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়।
২০১৪ সালে এল চ্যাপো যখন বন্দি ছিলেন, সেই সময় দলের সঙ্গে তাঁর লোকজনের যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে কাজ করতেন এমা।
এমা নিজেও মাদক পাচার এবং বেআইনি পথে অর্থ পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০২১ সালে তাঁর তিন বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়।
আইনজীবীর দাবি, জেলের ছোট ঘরে থাকতে কষ্ট হত এমার। তাই দিনে ২২ ঘণ্টা শুধুমাত্র বই পড়ে সময় কাটাতেন এমা।
বুধবার ১৩ সেপ্টেম্বর ‘মাদক সম্রাট’-এর স্ত্রী এমা জেল থেকে ছাড়া পান। কানাঘুষো শোনা যায়, এমা ছাড়াও একাধিক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন এল চ্যাপো। চার বার বিয়ে করেছিলেন তিনি। এল চ্যাপোর কমপক্ষে ১১ জন সন্তান রয়েছে বলেও জানা যায়।