পৃথিবীর মানচিত্র থেকে ইরানকে মুছে ফেলার হুমকি দিলেন রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী তথা আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে পশ্চিম এশিয়ার এই দেশকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু কেন ইরানকে এমন ভাবে সতর্ক করলেন রিপাবলিকান নেতা?
রিপাবলিকানদের হয়ে আমেরিকার আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ছেন ট্রাম্প। দেশ জুড়ে একাধিক জায়গায় সভা করছেন তিনি। গত ১৩ জুলাই বেথেল পার্কের ফেয়ার গ্রাউন্ডের সভায় ট্রাম্পের উপর প্রাণঘাতী হামলা হয়।
অভিযুক্ত টমাস ক্রুকের ছোড়া গুলি ট্রাম্পের কান ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়। সেই ঘটনার পর থেকেই ট্রাম্পের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। প্রসঙ্গত, আমেরিকার সব রাজনীতিককে নিরাপত্তা দেয় ইউএস সিক্রেট সার্ভিস নামে গোয়েন্দা সংস্থা।
সে দিনের সভায় ট্রাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বেও ছিল তারা। তাই গুলিকাণ্ডের পর সিক্রেট সার্ভিসের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়েছিল।
এর পর ট্রাম্পকে বড় জনসভা বা কোনও রকম জনসমাগম থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয় ইউএস সিক্রেট সার্ভিস।
কেন এই উপদেশ দেওয়া হয় তা প্রথমে স্পষ্ট না হওয়ায় শোরগোল পড়ে যায় আমেরিকার রাজনৈতিক মহলে। অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন, আবারও কি ট্রাম্পের উপর হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে?
এর পরেই গত সপ্তাহে আমেরিকার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পায় যে, সিক্রেট সার্ভিস সম্প্রতি ট্রাম্পকে হত্যার জন্য ইরানের চক্রান্তের কথা জানতে পেরেছে।
সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘মানব সূত্রে’ সিক্রেট সার্ভিস বিষয়টি জানতে পেরেছে। তবে এর সঙ্গে কয়েক সপ্তাহ আগে ট্রাম্পের উপর গুলি চালানোর ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই বলেও জানানো হয়।
সূত্র মারফত খবর পেয়েই ট্রাম্পের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। এর পরই সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে ইরানকে হুমকি দেন ট্রাম্প।
একই সঙ্গে ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন। সেখানে আমেরিকায় কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইরানের ‘চক্রান্ত’ নিয়ে কথা বলতে শোনা গিয়েছে।
ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘যদি ওরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে হত্যা করে, যার সবসময় আশঙ্কা রয়েছে, তা হলে যেন আমেরিকা পৃথিবীর মানটিত্র থেকে ইরানকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। আর যদি তা না হয়, তা হলে আমেরিকার নেতারা কাপুরুষ হিসাবে বিবেচিত হবেন।’’
২০২০ সালে আমেরিকার ড্রোন হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনী রেভোলিউশনারি গার্ডের কমান্ডার কাসেম সোলেইমানির মৃত্যুর পর দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সোলেইমানির মৃত্যুর সময়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন ট্রাম্প।
তার পর থেকে গত কয়েক বছর ধরে আমেরিকার ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল তৎকালীন ট্রাম্প সরকারের নেতা এবং আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ইরান কোনও চক্রান্ত করছে কি না সে দিকে নজর রাখছে বলে খবর।
উল্লেখ্য, এই প্রথম নয়, এর আগেও ইরানকে ধ্বংস করার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ২০১৯ সালে ট্রাম্প মন্তব্য করেন, আমেরিকান স্বার্থে আঘাত করলে তিনি ইরানকে ধ্বংস করে দেবেন।
ট্রাম্প আরোপিত কিছু নিষেধাজ্ঞার কারণে ২০১৯ সালে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থায়ী ভাবে ছিন্ন করার ঘোষণা করেছিল ইরানের সরকার। তার পরেই ওই হুমকি দেন ট্রাম্প। উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকেও হুমকি দিয়েছিলেন। এর পর বৃহস্পতিবার আবার ইরানকে হমকি দিলেন রিপাবলিকান নেতা।